ব্যাংকের পরিচালকেরা নিজেদের মালিক ভাবছেন: গভর্নর

ব্যাংকের পরিচালকেরা নিজেদের মালিক ভাবছেন: গভর্নর
নৈতিকতা ও সুশাসন ব্যাংকিংয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেছেন, 'নৈতিকতা ও সুশাসন ব্যাংকিংয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ব্যাংক খাতে এর কিছু ব্যত্যয় হচ্ছে। আমরা দেখেছি, কিছু ব্যাংকের পরিচালক নিজেদের ব্যাংকের মালিক মনে করছেন। আবার কিছু ব্যাংকার তাতে সহায়তাও করছেন। ব্যাংক পরিচালনায় পরিচালক ও ব্যবস্থাপকের ভূমিকা কী হবে, তা নির্দিষ্ট করা আছে।'

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটরিয়ামে শনিবার আয়োজিত ২১তম নুরুল মতিন স্মারক বক্তৃতা 'এথিকস ইন ব্যাংকিং' অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এসব কথা বলেন।

সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতের তহবিলের (সিএসআর) অপব্যবহার হচ্ছে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, একটি ব্যাংক তাদের কর্মীদের বার্ষিক বনভোজনে সিএসআর তহবিলের অর্থ খরচ করেছে। আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সিএসআর তহবিল আছে। ব্যাংক ব্যবসা করে, তার সিএসআর তহবিল থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংক তো কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নয়। তাই গভর্নর বলেন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, তথ্য প্রকাশ ও নৈতিকতা বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে।

এবারের ২১তম আয়োজনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) সাবেক পরিচালক এ কে এম সাইফুল মজিদ।

মূল প্রবন্ধে এ কে এম সাইফুল মজিদ বলেন, অস্বাস্থ্যকর করপোরেট সংস্কৃতির কারণে গত চার দশকে আর্থিক খাতের পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে নৈতিকতার চর্চা থাকলে ব্যাংকের অংশীজনদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে। বিশেষ করে গ্রাহকদের স্বার্থ সুরক্ষিত হয়। এমনকি ব্যাংকের মালিকদেরও স্বার্থ রক্ষা পাবে। ব্যাংক খাতের নৈতিকতা চর্চার কিছু সহজাত শক্তি ও সুবিধা রয়েছে। ব্যাংকিং খাতের খারাপ ব্যবস্থাপনা এ খাতে অনৈতিকতার চর্চা বাড়িয়ে দিয়েছে। গত তিন দশকে ব্যাংকিং খাতের ব্যর্থতার অন্যতম একটি কারণ অনৈতিকতার চর্চা। এ কারণে ব্যাংক খাতের ব্যর্থতার অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে।

ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক বলেন, লোভী ব্যাংকার, সুশাসন ও জবাবদিহির অভাব, ইচ্ছাকৃত খেলাপির কারণে ব্যাংক খাতে ঋণখেলাপি বেড়েছে।

এ অবস্থায় এ কে এম সাইফুল মজিদের পরামর্শ, শেয়ারধারীদের চেয়ে ব্যাংকে আমানতকারীদের বেশি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। অর্থনীতি, সমাজ ও পরিবেশ উন্নয়নে ব্যাংককে ভূমিকা রাখতে হবে। ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতে হবে নীতি ও আইনকে। প্রতারণামূলক কার্যক্রম থেকে ব্যাংকারদের দূরে থাকতে হবে। স্বল্পমেয়াদি ব্যবসায়িক লক্ষ্য নির্ধারণ করা যাবে না।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন এবং পরামর্শ) আশরাফ আল মামুন।

অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

বিদেশি ডেবিট কার্ডে অর্থ তোলা বন্ধ করল ইবিএল
এসবিএসি ব্যাংকের নতুন এএমডি নূরুল আজীম
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
বিকাশের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা মাহফুজ মারা গেছেন
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পর্ষদের ৩ কমিটি গঠন
ব্যাংকে চাকরির আবেদনের বয়সসীমা শিথিল
মাসিক সঞ্চয় হিসাব খোলা যাচ্ছে বিকাশ অ্যাপে
ফের এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন
অফিসার পদে ৭৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে সরকারি ৫ ব্যাংক
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পরিচালক হলেন যারা