জাতীয়
বিদেশে টাকা পাচার বন্ধ করতে হবে: কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বিদেশে টাকা পাচার বন্ধ করতে হবে। বহু টাকা এ দেশ থেকে কানাডার বেগমপাড়া, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে চলে যাচ্ছে। আন্ডার ভয়েস, ওভার ভয়েসসহ নানাভাবে যে কেউ চাইলেই খুব সহজেই বিদেশে টাকা পাঠাতে পারে। এটিকে কঠোরভাবে দমন করতে হবে। এক্ষেত্রে রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদেরকে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে।
সোমবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কাস্টমস বিষয়ক সেমিনারে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রাজস্ব সম্মেলন ২০২৩ উপলক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ‘বাংলাদেশ কাস্টমস: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের সারথি’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে।
রাজস্ব আরও বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগের তুলনায় রাজস্ব অনেক বেড়েছে, কিন্তু রাজস্ব- জিডিপি অনুপাতে আমরা এখনও অনেক পিছিয়ে আছি। এটিকে আরও বাড়ানো উচিত। বিশেষ করে আয়করে আমরা এখনও সফল হতে পারি নি। সেজন্য, রাজস্ব বিভাগের সক্ষমতা ও দক্ষতা আরও বাড়াতে হবে।
ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৪ বছরে অর্থনীতি, কৃষি, যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সকল ক্ষেত্রে দেশের যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, সারা বিশ্ব তার স্বীকৃতি দিচ্ছে, প্রশংসা করছে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের প্রশংসা করছে। সেখানে দেশের ভেতরে কেউ কেউ এ নিয়ে প্রশ্ন তোলে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। জাতি হিসেবে আমাদের আত্মসম্মানবোধ থাকা উচিত।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।
পৃথক দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম কাস্টমস ও বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার মাহবুবুর রহমান ও চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার ফাইজুর রহমান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে: রাষ্ট্রপতি

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকাসহ সারাদেশে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করে। বাঙালির মুক্তি আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে কাপুরুষের দল সেদিন নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত বাঙালির ওপর নির্বিচারে হামলা চালায়। এ গণহত্যায় শহীদ হন ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, বিভিন্ন বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশ ও তৎকালীন ইপিআর সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অগণিত মানুষ।
এ দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে ত্রিশ লাখ বাঙালির আত্মত্যাগের মহান স্বীকৃতির পাশাপাশি তৎকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম গণহত্যার বিরুদ্ধে চরম প্রতিবাদের প্রতীক।
রাষ্ট্রপতি এ দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, তার নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা। তিনি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন ২৫ মার্চ কালরাতের নৃশংস হত্যাকাণ্ডসহ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মম গণহত্যার শিকার সব শহীদকে এবং জাতীয় চার নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থকসহ দেশের জনগণকে, যাদের অসামান্য অবদান ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জন হয়েছে স্বাধীনতা।
তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর তৎকালীন অবিভক্ত পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সে নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। বঙ্গবন্ধুকে সরকার গঠনে আহ্বান জানানোর পরিবর্তে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের ১ মার্চ জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী সেই নির্বাচনে বিজয়ী শেখ মুজিবের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে। এর প্রতিবাদে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়। ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনায় বসলেও বাঙালি জাতিকে চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে পর্দার অন্তরালে গণহত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে, যা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় বেলুচিস্তানের কসাই খ্যাত জেনারেল টিক্কা খানকে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তৎকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে অভিযানটি পরিচালনার মাধ্যমে তারা স্বাধীনতাকামী ছাত্রজনতার প্রতিরোধকে স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল। এর ব্যাপ্তি ছিল ঢাকাসহ সারাদেশ। হায়েনার দল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, পিলখানাসহ (বর্তমানে বিজিবি সদর দপ্তর) যশোর, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সৈয়দপুর, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রামে একযোগে গণহত্যা চালায়। বিশ্বের সব গণমাধ্যমেই গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পায় এ গণহত্যার খবর। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার আগেই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান, যার পথ ধরে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন নয় মাসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ত্রিশ লাখ মানুষ। হত্যা-নিপীড়নের ভয়াবহতায় এক কোটি বাঙালি আশ্রয় নিয়েছিল প্রতিবেশী দেশ ভারতে। একাত্তরের বীভৎস গণহত্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বমানবতার ইতিহাসেও একটি কালো অধ্যায়। এমন গণহত্যা আর কোথাও যাতে না ঘটে, গণহত্যা দিবস পালনের মাধ্যমে সে দাবিই বিশ্বব্যাপী প্রতিফলিত হবে।
সব বাধা পেরিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে চলেছে উন্নতি আর সমৃদ্ধির পথে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশকে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প ২০৪১’ ঘোষণা করেছেন। এ লক্ষ্য অর্জনে রাষ্ট্রপতি দলমত নির্বিশেষে সবাকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কার্যকর অবদান রাখার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করার মধ্য দিয়েই আমরা একাত্তরের গণহত্যায় জীবনদানকারী প্রতিটি প্রাণের প্রতি জানাতে পারি আমাদের চিরন্তন শ্রদ্ধাঞ্জলি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৭ মাসে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি কমেছে ৩ হাজার ৬৯ কোটি টাকা

ভিন্ন কড়াকড়ি আরোপের কারণে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমছেই। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাতমাসে (জুলাই-জানুয়ারি) সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি কমছে তিন হাজার ৬৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এসময়ে সঞ্চয়পত্র বিক্রি দিয়ে গ্রাহকের আগে বিনিয়োগ করা সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধ করাও সম্ভব হয়নি। উল্টো সরকারি কোষাগার বা ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়ে ঘাটতি পূরণ করা হয়েছে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ১৭৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ওই সময়ে সুদ-আসল পরিশোধের পরও সরকারের কোষাগারে ১২ হাজার ১৭৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা জমা ছিল। সেসময়ে ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।
চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৩৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের জানুয়ারিতে বিক্রির পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। তথ্য বলছে, গত বছরেরর তুলনায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি ব্যাপক কমেছে।
চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। এ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রথম ছয়মাসে এ খাত থেকে কোনো ঋণ পায়নি সরকার। উল্টো সরকার পরিশোধ করেছে।
চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। মূলত সঞ্চয়পত্র বিক্রির ওপর চাপ কমাতে ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে মুনাফার ওপর উৎসে কর ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। একই সঙ্গে এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন সনদপত্র বাধ্যতামূলক, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি না করার শর্তসহ আরও কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এরপরও বিক্রি বাড়তে থাকে।
সর্বশেষ ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ২ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই বিক্রি কমতে থাকে।
অন্যদিকে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ না পাওয়ায় ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি পূরণে এক লাখ ছয় হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। আগের অর্থবছরে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ছিল ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এবার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বেশি ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।
সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমা নিয়ে কথা হয় আসলাম নামে এক গ্রাহকের সঙ্গে। তিনি বলেন, একটা সময় সঞ্চয়পত্র মানুষের আস্থার জায়গা ছিল। সবাই এখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। সুদহার কমিয়ে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। শেয়ারবাজারের পরিবর্তে এখানে রেখেছিলাম, সেটাও আর হচ্ছে না। সব টাকা উঠিয়ে নিতে হচ্ছে।
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আহমেদ জানান, সাধারণ মানুষের নিরাপদ বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে সঞ্চয়পত্র বিবেচিত হতো। এখন সরকার কর্তৃক সুদহার কমানোসহ নানা কড়াকড়ির কারণে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে আগ্রহ কমছে মানুষের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, সুদহার কমানোসহ নানান কড়াকড়ির আরোপ করার পর থেকেই সঞ্চয়পত্র বিক্রি তলানিতে নেমেছে। বিক্রির চেয়ে সুদ-আসল পরিশোধেই সরকারের বেশি টাকা খরচ হচ্ছে। সুদহার কমায় অবসরের অর্থ কিংবা পরিবারের বাড়তি টাকা থাকলেও সেগুলো সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে আসছেন না। এতে বিক্রি কমে যাচ্ছে। এসব কারণে সরকারের ব্যাংক ঋণের পরিমাণও বাড়ছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রোজার প্রথম দিনই কমলো ব্রয়লার মুরগির দাম

পবিত্র রমজান মাস শুরু হলেও দ্রব্যমূল্য নিয়ে অস্বস্তি কাটছে না। ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে নাভিশ্বাস উঠেছে সীমিত আয়ের মানুষের। তবে রমজানের প্রথম দিনই কিছুটা স্বস্তি মিলেছে ব্রয়লার মুরগির বাজারে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে ব্রয়লারের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত।
পোলট্রি খাতের শীর্ষস্থানীয় চার প্রতিষ্ঠান খামার পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৯০-১৯৫ টাকা কেজি নির্ধারণের পরেই বাজারে এমন নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেল।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৬০ টাকা দরে। যা গতকাল বৃহস্পতিবারও ছিল ২৭০-২৮০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগামী দু-একদিনের মধ্যে দাম আরও কমবে। খামারে মুরগি ১৯০ টাকা বিক্রি হলে সেটা খুচরা বাজারে ২৩০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। তবে সেজন্য দু-একদিন সময় লাগবে।
রাজধানীর আগারগাঁও তালতলা বাজারের ব্রয়লার ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা যে মাল বিক্রি করছি সেটা আগের দামে কেনা। তারপরও পাইকারি বাজার কিছুটা কমায় কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমিয়ে বিক্রি করছি। যারা আজ (শুক্রবার) সকালে কাপ্তান বাজার থেকে মাল এনেছেন, তারা কেজিতে ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি করতে পারছেন।
এদিন খিলগাঁও রেলগেটে ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি সোনালি মুরগির দামও কিছুটা কমে বিক্রি হতে দেখা গেছে। সোনালি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৬০ টাকা। যা দুদিন আগেও ছিল ৪০০ টাকা ছুঁই ছুঁই।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানে অধিকাংশ রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকে বলে মুরগির চাহিদা কমে গেছে। সকাল থেকে বাজারে ক্রেতাও খুব কম। অনেক দোকান সকাল থেকে জুমার নামাজ পর্যন্ত বন্ধ ছিল। চাহিদা কমায় দামও কিছুটা কমেছে।
ব্রয়লার মুরগি বিক্রেতা সালাম জানান, ফার্ম থেকে ১৯০-১৯৫ টাকায় মুরগি বিক্রি হলে খুচরায় ২৩০-২৪০ টাকায় কিনতে হবে ভোক্তাদের। পরিবহন, ঘাটতিসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে বাজারে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত দামের পার্থক্য থাকে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজানের প্রথম দিন সকালে মুরগির দোকানে ভিড় ছিল তুলনামূলক কম। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আজ তারা পাইকারি বাজার থেকে ব্রয়লার ২৩৫ টাকা আর সোনালি মুরগি কিনেছেন ৩৪০ টাকা দরে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
রমজানের প্রথম জুমায় মুসল্লিদের ঢল

পবিত্র রমজান মাসের জুমার নামাজের গুরুত্ব মুসল্লিদের কাছে অপরিসীম। তাই রমজানের জুমার জামাতে অন্য সময়ের চেয়ে বেশি মুসল্লি অংশ নেন। প্রখর রোদ উপেক্ষা করেই রাজধানী অন্যতম বড় জুমা জামাতটি অনুষ্ঠিত হয় বায়তুল মোকাররম মসজিদে। নামাজ শেষে মোনাজাতে মুসল্লিরা নিজের এবং দেশের মানুষের কল্যাণ কামনা করেন।
শুধু বায়তুল মোকাররম নয়, রমজানের প্রথম জুমায় রাজধানীর মসজিদে-মসজিদে ঢল নেমেছিল মুসল্লিদের। কোথাও-কোথাও মসজিদের ভেতরে মুসল্লিদের নামাজের জায়গার সংকুলান না হওয়ায় বাইরে নামাজ পড়তে দেখা গেছে।
বায়তুল মোকাররমে দেখা গেছে, বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা বয়সী মানুষ মসজিদে আসা শুরু করেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকেই ভরে উঠে মসজিদের মূল ভবন। ফলে মসজিদের ভেতরে জায়গা না হওয়ায় কয়েক শতাধিক মুসল্লি বাইরে নামাজ আদায় করেন।
নামাজের শুরুতে জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি রুহুল আমীন খুতবায় রমজানের আমলের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি নামাজের পাশাপাশি যাকাত আদায়ের গুরুত্ব ও কারা যাকাতের প্রথম হকদার তা তুলে ধরেন।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করলে কঠোর ব্যবস্থা

মানসম্মত পণ্যের পরিবর্তে ভেজাল ও অতিরিক্ত দাম নেওয়া হলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। রমজানের প্রথম দিন থেকে আগামী ২৮ রমজান পর্যন্ত সুলভমূল্যে এসব পণ্য ভ্রাম্যমাণভাবে বিক্রি করা হবে।
শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, আমাদের কিছু অতি মুনাফালোভী ব্যক্তিরা রমজানে মানুষকে কষ্ট দেয় ও ভেজাল দিতে চায়। এদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। যেখানে অন্যায় হবে, যেখানে খারাপ খাবার সরবরাহ করা হবে, মানসম্মত পণ্যের পরিবর্তে ভেজাল দেওয়া হবে, যেখানে অতিরিক্ত দাম নেওয়া হবে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, মানুষ যেন তার সাধ্যের মধ্যে দুধ, ডিম ও মাংস কিনতে পারেন সেজন্য সরকার ভ্রাম্যমাণভাবে এগুলোর বিক্রি কার্যক্রম চালু করেছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় করোনায় সর্বপ্রথম ভ্রাম্যমাণভাবে বিক্রি ব্যবস্থা চালু করে খামারি ও ভোক্তাদের উপকার করেছে, অর্থনীতি সচল রেখেছে, যারা বিপণের সঙ্গে বিভিন্নভাবে যুক্ত তাদের সহায়তা করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় রমজানে ভ্রাম্যমাণভাবে পণ্য বিক্রির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বিপণন কার্যক্রমের মন্ত্রণালয় নয়। এই মন্ত্রণালয় উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সহায়তাকারী। দাপ্তরিক ম্যান্ডেট না হলেও আমরা মানুষের উপকারের জন্য এ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ঢাকার ২০টি স্থানে ভ্রাম্যমাণভাবে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রমজানে সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম পর্যায়ক্রমে কমে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বছর প্রাথমিকভাবে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯৪০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ৩৪০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও প্রতিটি ডিম ১০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হবে। তবে আমরা যে দাম ধার্য করেছি এটা নির্ধারিত নয়। প্রাথমিকভাবে উৎপাদকদের সঙ্গে বসে ডিমের দাম নির্ধারণে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, রমজানে পর্যায়ক্রমে তা আরও কমে আসবে বলে আশা করছি। একইভাবে মাংস ও অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম আরও কমে আসবে বলে আশা করছি। প্রতিদিনের অবস্থান অনুযায়ী এটি পরিবর্তিত হবে। তবে কোনোভাবেই প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত মূল্যের ওপরে উঠবে না। আমরা চেষ্টা করব এ মূল্যের নিচে রেখে কীভাবে মানুষকে সাহায্য করা যায়।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে এবার দুধের আধা লিটারের ছোট প্যাকেট, অল্প পরিমাণ ডিম এবং আধা কেজির মাংসের প্যাকেট বিক্রি করা হবে। যাতে একেবারে নিম্নআয়ের মানুষও সাধ্যের মধ্যে এসব পণ্য কিনতে পারেন। এর মাধ্যমে তুলনামূলকভাবে স্বল্প আয়ের মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চায় শেখ হাসিনা সরকার।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, উৎপাদক ও বিপণনকারীদের মাঝখানে একটি মধ্যস্বত্বভোগী মহল কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রশাসন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে। উৎপাদনের সঙ্গে যুক্তিসঙ্গত লাভের বাইরে যারা অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছে, অতিরিক্ত মুনাফার জন্য মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট ও ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষসহ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। আশা করি মানুষের সহনশীল মূল্যে এসব পণ্য বিপণনে আমরা সহযোগিতা করতে পারব।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে রেজাউল করিম বলেন, যারা অতিরিক্ত লাভ করতে চায়, তারা অতিরিক্ত মূল্য নেয়। দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিপণনে সরকার কোনো লাভ করছে না, কোনো ভর্তুকি দিচ্ছে না। কোনো ভর্তুকি না দিয়ে রমজানে যে দামে সরকার বিক্রি করতে পারছে, সে দামে বিক্রি করার মতো ব্যবসায়ীদেরও যৌক্তিক অবস্থা রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য প্রদান করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন ও ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স-বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হাসান। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুর রহিম।
উল্লেখ্য, দুধ, ডিম ও মাংসের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে রমজান মাসে জনসাধারণ যেন প্রাণিজ আমিষ ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারে সে লক্ষ্যে ব্যবসায়ী, উৎপাদনকারী ও সাপ্লাই চেইন সংশ্লিষ্ট সকলকে সাথে নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
অর্থসংবাদ/এসএম