আন্তর্জাতিক
এবার রুশ জ্বালানি নিষিদ্ধ করল ইইউ

রাশিয়ার ডিজেল জ্বালানি এবং অন্যান্য পরিশোধিত তেল পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সেইসঙ্গে জ্বালানির বিষয়ে রুশ নির্ভরতা হ্রাস এবং জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে মস্কোর আয় কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছে ইউরোপ। ইউক্রেনে আগ্রাসনের জবাবে মস্কোর বিরুদ্ধে সর্বশেষ এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিল ২৭ দেশের সংস্থাটি।
বার্তা সংস্থা এপি বলছে, এই নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য হলো রাশিয়ান ডিজেল যেন চীন ও ভারতের মতো দেশ (যেসব দেশ পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করছে) ছাড়া অন্য দেশে যেতে না পারে। আর সেটা সম্ভব হলে রাশিয়ার অর্থনীতি সংকুচিত হবে এবং যুদ্ধের ব্যয়ভার বহন করতে হিমশিম খাবে মস্কো। এ ছাড়া হঠাৎ করে যাতে মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্বব্যাপী ভোক্তরা ক্ষতির সম্মুখীন না হয়।
নতুন এই নিষেধাজ্ঞা জ্বালানি পণ্যের দাম নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ রাশিয়ার পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য এবং ভারত থেকে জ্বালানি আমদানির চেষ্টা করছে। অথচ তা ইউরোপের মোট চাহিদার মাত্র ১০ শতাংশ পূরণ করবে। তাছাড়া রাশিয়ার বন্দরের তুলনায় এসব দেশ থেকে জ্বালানি আমদানি করতে দীর্ঘ যাত্রায় ব্যয়ও বেড়ে যাবে।
এর আগে রাশিয়ার তেলের উপর প্রাইস ক্যাপ (মূল্য বেঁধে দেওয়া) আরোপ করে জি-৭ ভুক্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান ও কানাডা। যেখানে রুশ ডিজেল, জেট ফুয়েল ও পেট্রোলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। অপরদিকে অপরিশোধিত রুশ তেলের প্রতি ব্যারেলের দাম নির্ধারণ করা হয় ৬০ ডলার। এর অতিরিক্ত দামে কোনো দেশ বা কোম্পানি রুশ প্রোডাক্ট কিনলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে মার্কিন মিত্ররা। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে প্রাইস ক্যাপ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর আঘাতে নিহত অন্তত ২৩

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে টর্নেডোর ভয়াবহ আঘাতে কমপক্ষে ২৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। টর্নেডোয় বিধ্বস্ত অনেক ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও অনেকে আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে এ তাণ্ডব চালিয়েছে টর্নেডো।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, কয়েকটি গ্রামীণ শহরে ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি করেছে ওই টর্নেডো। এসব এলাকায় অনেক গাছ ও বিদ্যুতের লাইন ভেঙে পড়েছে। যে কারণে হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের মুখোমুখি হয়েছেন।
এদিকে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের আরও কয়েকটি রাজ্যে শক্তিশালী ঝড় আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। মিসিসিপির কয়েকটি এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে।
পশ্চিম মিসিসিপির ছোট শহর রোলিং ফর্কের বাসিন্দারা বলেছেন, টর্নেডোর আঘাতে তাদের বাড়ির পেছনের জানালা উড়ে গেছে। ওই এলাকায় বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা ব্র্যান্ডি শোয়াহ সিএনএনকে বলেছেন, আমি কখনো এমন টর্নেডো দেখিনি… এটা খুব ছোট শহর এবং শহরটি প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে।
কর্নেল নাইট নামে অপর এক বাসিন্দা মার্কিন বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, স্ত্রী এবং তিন বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে রোলিং ফর্কের এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন তিনি। টর্নেডো আঘাত হানার ঠিক আগেও শহরটি বেশ শান্ত ছিল। টর্নেডো আঘাত হানার মুহূর্তের পরিস্থিতি বর্ণনায় তিনি বলেন, আকাশ একেবারে অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল। ওই সময় প্রতিটি ট্রান্সফরমারে বিস্ফোরণ ঘটে।
তিনি বলেন, টর্নেডো তার এক স্বজনের বাড়িতে আঘাত হেনেছে। এতে ওই বাড়ির দেয়াল ধসে ভেতরে বেশ কয়েকজন আটকা পড়েছেন।
মিসিসিপির গভর্নর টেট রিভস টুইটারে বলেছেন, অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
অর্থের অভাবে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন অনিশ্চিত

নির্বাচন কমিশনের সূচি অনুযায়ী পাকিস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না- তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। চলতি বছর ৮ অক্টোবর পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা দেশটিতে। বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতা ইমরান খান প্রায় প্রতিদিনই নির্বাচনের দিন এগিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছেন; কিন্তু তার সেই দাবিতে কার্যত পানি ঢেলে দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশটির রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের চেয়ারম্যান ইমরান খানের ব্যাপক সমালোচনাও করেছেন তিনি।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) রাজধানী ইসলামাবাদে কেন্দ্রীয় তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেবের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে খাজা আসিফ বলেন, ‘চলতি বছর নির্বাচন হবে কিনা— তা পুরোপুরি অনিশ্চিত, কারণ নির্বাচনের আয়োজন করার মতো তহবিল এই মুহূর্তে সরকারের হাতে নেই। তহবিল হাতে না আসা পর্যন্ত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা সম্ভব হবে না।’
ইমরান খানের সমালোচনা করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এই মুহূর্তে পাকিস্তানের একটি বড় সমস্যার নাম ইমরান খান। তাকে গুপ্তহত্যার চেষ্টা চলছে বলে যে অভিযোগ তিনি করেছিলেন— তা ছিল মিথ্যা। ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি সাবেক সেনাপ্রধান কামার আহমেদ বাজওয়ার মেয়াদ বাড়িয়েছিলেন, (ক্ষমতা হারানোর পর) এখন তাকেই দোষারোপ করছেন। এমনকি তিনি এ ও বলেছেন— তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল।’
সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হয়েছিল, কিন্তু পাঞ্জাব, সিন্ধ প্রদেশের প্রাদেশিক সরকার বিলোপের ক্ষেত্রে তিনি অগণতান্ত্রিক পন্থা অবলম্বন করেছিলেন। এছাড়া ক্ষমতায় থাকাকালে বিরোধীদলীয় রাজনীতিকদের ব্যাপক দমনপীড়নও করেছেন তিনি।
‘পিটিআই সরকারের তিন বছরের শাসনামলের গোটা সময় আমাকে জেলে কাটাতে হয়েছে। আমাদের নেতৃত্বকেও (নওয়াজ শরিফ-শেহবাজ শরিফ) মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন তিনি।’
এদিকে, খাজা আসিফের এই বক্তাব্যের কিছুক্ষণের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওবার্তা পোস্ট করেন ইমরান খান। সেখানে সরকারের নির্বাচন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতকে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ইমরান খান বলেন, নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি সংবিধানবিরোধী এবং পাকিস্তানে বর্তমানে প্রতারকদের শাসন চলছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে পতন

যুক্তরাষ্ট্রে দুই ব্যাংক বন্ধ এবং সুইজারল্যান্ডের একটি ব্যাংক বিক্রি হয়ে যাওয়ায় দেশে দেশে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা যেন আস্থা হারিয়ে ফেলছেন। ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার বড় বড় শেয়ারবাজারগুলোয় বিনিয়োগকারীরা এখন প্রবল স্নায়ুচাপে ভুগছেন। আতঙ্কের কারণে অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে বিশেষ করে ব্যাংকের শেয়ার দরে ব্যাপক হারে পতন ঘটছে।
সপ্তাহের শেষ লেনদেন দিবস শুক্রবার ইউরোপে যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্স, এশিয়ায় জাপান, হংকং, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের শেয়ারবাজারের মূল্যসূচক কমেছে।
এদিন সবচেয়ে বেশি পতন দেখেছে জার্মানির শেয়ারবাজার। সেখানে দয়েশে ব্যাংকের শেয়ারের দর একপর্যায়ে তো ১৪ শতাংশ কমে যায়। ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ব্যাংকের শেয়ারের দামে বড় লোকসানের প্রবণতা দেখা গেছে। ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে জার্মানির কমার্জব্যাংক, ফ্রান্সের সোসাইট জেনারেলের শেয়ার দর ৬ শতাংশ করে পড়েছে। যুক্তরাজ্যে বার্কলেস ব্যাংকের শেয়ার দরে পতন ঘটেছে প্রায় ৫ শতাংশ।
দিনের লেনদেনের শুরুতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারেও নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। সেখানে মর্গ্যান স্ট্যানলি, জেপি মরগান চেজ, গোল্ডম্যান স্যাকচ, ওয়েলস ফার্গো, ব্যাংক অব আমেরিকাসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম ১ থেকে ২ শতাংশ কমেছে। তবে দেশটির আঞ্চলিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক, প্যাকওয়েস্ট ব্যাংক করপোরেশন, ওয়েস্টার্ন অ্যালায়েন্স ব্যাংক করপোরেশন, ট্রুইস্ট ফিন্যান্সিয়াল করপোরশন প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর ১ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।
ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে শুক্রবার যুক্তরাজ্যে এফটিএসই ১০০ সূচক ১ দশমিক ৫৫ ও এফটিএসই সূচক ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ কমেছে। ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ, জার্মানির ড্যাক্স ২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, স্পেনের আইবিইএক্স ৩৫ সূচক ২ দশমিক ২৫ শতাংশ ও নেদারল্যান্ডসের এইএক্স ১ দশমিক ৭১ শতাংশ পড়েছে। প্যান ইউরোপিয়ান সূচক ইউরোস্টকস ৫০ কমেছে ২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের ডাউজোন্স সূচক শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ, ন্যাসডাক সূচক শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ ও এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক দশমিক ৫৬ শতাংশ পড়েছে।
এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোর মধ্যে জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক দশমিক ১৩ শতাংশ, হংকংয়ের হেংসেং সূচক দশমিক ৬৭ শতাংশ, ভারতের বিএসই সেনসেক্স সূচক দশমিক ৬৯ শতাংশ কমেছে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে ২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের সময় এবং এরপর ২০২০ সালে কোভিড–১৯ মহামারি আঘাত হানার সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার কমিয়েছিল। কিন্তু গত বছর বা তারও কিছু আগে থেকে ব্যাংকগুলো ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য দ্রুতগতিতেই নীতি–নির্ধারণী সুদের হার বাড়িয়েছে। এভাবে সুদের হার বাড়ানোর কারণে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করে। এতে বিনিয়োগকারীদের স্নায়ুর চাপ বৃদ্ধি পায়। তাঁরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বদৌলতে শেয়ারের দাম কমে যায়।
এ ছাড়া নীতিনির্ধারণী সুদের হার বাড়ানোর ফলে তা মন্দার আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এ জে বেল নামক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ পরিচালক রাস মোল্ড।
এদিকে জার্মানির বুন্দেস ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জোয়াকিম নাগেল বলেন, এখনো ব্যাপক মূল্যস্ফীতির অর্থ হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে নীতি সুদের হার আরও বাড়াতে হবে। তবে তিনি ডয়চে ব্যাংক সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ডের ব্যাংক খাত নিয়ে মন্তব্য করেন। বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংকের ব্যর্থতা এবং সুইজারল্যান্ডে ইউবিএস ব্যাংক তার দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রেডিট সুইস কিনে নেওয়ার পর শেয়ারবাজারে অস্থিরতা প্রত্যাশিতই ছিল বলা যায়। এ ধরনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটার পর সাধারণত পথ এলোমেলো হয়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের পতনের ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা হারানোর প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। এই অবস্থায় ইউরোপ, আমেরিকার সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো এখন বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ কমানোর চেষ্টা করছে।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন গত মঙ্গলবার এক বক্তৃতায় বলেছেন, পরিস্থিতি স্থিতিশীল হচ্ছে এবং মার্কিন ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভালো আছে।
শুক্রবার ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের (ব্রিটিশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক) গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি বলেন, যুক্তরাজ্যের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ‘নিরাপদ ও ভালো আছে’।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি) ও সিগনেচার ব্যাংক বন্ধ হয়ে যায়। সেই জের কাটতে না কাটতেই গত সপ্তাহে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ব্যাংক ক্রেডিট সুইসের বিপদে পড়ার খবর প্রকাশ পায়। ব্যাংকটি তারল্য বাড়াতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ঋণ নেয়। এরপরই জানা যায়, ক্রেডিট সুইসকে ইউবিএস এজির সঙ্গে একীভূত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে ক্রেডিট সুইসের শেয়ার দরে ব্যাপক পতন ঘটে। এরপর দেশটির আরেক বৃহৎ ব্যাংক ইউবিএস ৩২৩ কোটি ডলারে ১৬৭ বছরের পুরোনো ব্যাংক ক্রেডিট সুইসকে কিনে নেয়। সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
এবার সুদহার বাড়াচ্ছে ইউরোপ ও উপসাগরীয় অঞ্চল

ব্যাংক খাতে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে, এমন আশঙ্কার মাঝেই আবারো সুদহার বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশে ধরে রাখতে ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদহার বাড়ানোর ঘোষণা দেয় ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)। এ নিয়ে টানা নয়বার সুদহার বাড়িয়েছে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিটি। খবর দ্য ন্যাশনাল।
ফেডের দেখানো পথ অনুসরণ করে সুদহার বৃদ্ধির দিকে এগোচ্ছে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) ও উপসাগরীয় অঞ্চলের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। ইইউর বাইরে অন্য দেশগুলোও সুদহার বৃদ্ধির পথে এগোচ্ছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ১০ দশমিক ৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতির পর ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদহার বৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিওই। একই পথের অনুসারী নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ডলারের বিনিময় মূল্য হ্রাসে উপসাগরীয় দেশগুলোও সুদহার বাড়াচ্ছে। রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে সৌদি আরবের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সামা। একই হারে বাড়িয়ে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ সুদহার ইউএইর। বাহরাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে সুদহার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। সমহারে সুদহার বাড়িয়েছে অন্য উপসাগরীয় মিত্র কাতার। দেশটির সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
রাহুল গান্ধীর সংসদ সদস্য পদ বাতিল

‘মোদি’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে দু’বছরের কারাদণ্ড পাওয়া রাহুল গান্ধীর সংসদ সদস্য পদ বাতিল করলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) লোকসভা সচিবালয়ের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়। খবর এনডিটিভির।
মোদী পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) গুজরাটে সুরাট জেলা আদালত রাহুলকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়। তারই ভিত্তিতে ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ ও জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করা হলো।
এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার নরেন্দ্র মোদী সরকারে বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপপ্রয়োগের অভিযোগ তুলে অন্য বিরোধী দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলনের পথে নেমেছে কংগ্রেস। এদিন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ১২টি বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাম, জেডি(ইউ), ডিএমকের পাশাপাশি বৈঠকে ছিল অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ)-ও। এর পরে সংসদ ভবন থেকে মিছিল করে রাষ্ট্রপতি ভবনে যান তারা।
আইন অনুযায়ী, সংসদ সদস্য পদ বাতিল হওয়ায় রাহুল অন্তত আগামী ৬ বছর কোনো নির্বাচনে লড়তে পারবেন না।
সুরাট জেলা আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা রাহুলকে ১০ হাজার টাকার জামিনে মুক্তি দিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে উচ্চতর আদালতে আপিল করার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দোষী সাব্যস্ত করার ওপর কোনো স্থগিতাদেশ দেননি তিনি।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, সব চোরদের পদবি ‘মোদী’ হয় কেন? আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ললিত মোদী, ব্যাংক-ঋণ মামলায় ‘পলাতক’ নীরব মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তুলনা টেনেছিলেন তিনি। ওই ঘটনায় রাহুলের বিরুদ্ধে ‘পদবি অবমাননার’ অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৯ এবং ৫০০ ধারায় গুজরাটে মানহানির মামলা করেছিলেন বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদী। সেই মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত হন রাহুল গান্ধী।
অর্থসংবাদ/এসএম