অর্থনীতি
ফ্রিল্যান্সিংয়ের অর্থ বিদেশে খরচের সুবিধা দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ফ্রিল্যান্সারদের রপ্তানিকারকের রিটেনশন কোটা (ইআরকিউ) হিসাবের সুবিধা দিতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে এ হিসাবের মাধ্যমে বিদেশ থেকে অর্জিত অর্থ বিদেশে খরচ করতে পারবেন ফ্রিল্যান্সাররা।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ। বিদেশ থেকে অর্জিত অর্থ বিদেশে খরচ করার জন্য ইআরকিউ হিসাব হলো স্বীকৃত বৈধ পদ্ধতি।
সার্কুলার অনুযায়ী, অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকগুলোকে রপ্তানিকারকের রিটেনশন কোটা হিসাব সংক্রান্ত সেবা দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেবা খাতের আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে আইসিটিখাতসহ অন্যান্য সেবা রপ্তানিকারকদেরকে প্রয়োজনীয় ইআরকিই হিসাব খোলা, আন্তর্জাতিক ডেবিট, ক্রেডিট, প্রিপেইড কার্ড ইস্যু ও তা দিয়ে অনলাইন পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় ব্যয় করতে পারবেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইসিটি খাতে নানারকম ব্যয় বিদেশে পাঠাতে হয়। কিন্তু ফ্রিল্যান্সারদের নামে ইআরকিউ হিসাব না থাকায় কার্ড সুবিধার আওতায় সহজ উপায়ে বৈদেশিক লেনদেন তাদের পক্ষে করা সম্ভব হয় না। এছাড়া দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কর্মরত ফ্রিল্যান্সারদের এডি ব্যাংক শাখা নয় এমন ব্যাংক শাখা ইআরকিউ হিসাবসহ কার্ড সেবা প্রদান করতে পারে না।
এমন বিবেচনায় এডি শাখা নয় এমন ব্যাংকের মাধ্যমে আয় প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে নিকটবর্তী এডি শাখা ও সেন্ট্রাল ট্রেড প্রোসেসিং সেন্টার কিংবা প্রধান কার্যালয়ের সহায়তায় ইআরকিউ হিসাব খোলা ও কার্ড সার্ভিস সুবিধা দিতে সার্কুলারে বলা হয়েছে।
মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে আয় প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে সেটেলমেন্ট ব্যাংককে ইআইকিই হিসাব খোলাসহ আন্তর্জাতিক কার্ড ইস্যুর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
আইসিটি খাতসহ সেবা খাতের রপ্তানিকারকদের ইআরকিউ হিসাব খোলার সুবিধাসহ আন্তর্জাতিক কার্ড প্রদানের ব্যবস্থা করার ফলে এ খাতে আয় বাড়বে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
২৫০ টাকার নিচে ব্রয়লার মুরগি, কাল-পরশু আরও কমবে

দুইদিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ৩০-৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। রাজধানী ঢাকার বাজারে এখন আড়াইশো টাকার কমে ব্রয়লার মুরগি কিনতে পারছেন ক্রেতারা। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) পোলট্রি খাতের শীর্ষস্থানীয় চার প্রতিষ্ঠান খামারপর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৯০-১৯৫ টাকা কেজি নির্ধারণ করে। এরপর বাজারে মুরগির দামে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
শনিবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৫০ টাকা দরে, যা শুক্রবার (২৪ মার্চ) ছিল ২৫০-২৬০ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে মুরগির দাম আরও কমবে। খামারে মুরগি ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলে, তা খুচরা বাজারে ২৩০ টাকার নিচে বিক্রি হওয়ার কথা।
মুরগি বিক্রেতারা বলেন, ‘সরকার খামার পর্যায়ে মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পর বাজারেও মুরগির দাম কমেছে। আগামীকাল হয়তো আরও কমবে। এটা ২০০-২২০ টাকা কেজির মধ্যে এলে ঠিক আছে। আজ সকালে কাপ্তানবাজার থেকে ব্রয়লার মুরগি এনেছি। এটা ২৩০ টাকা দরেও বিক্রি করতে পারছি। আগামীকাল হয়তো দামটা আরও কমবে।’
এদিকে, ব্রয়লার মুরগির নিম্নমুখী দামের কারণে সোনালি মুরগির দামও কিছুটা কমেছে। বাজারে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩৫০-৩৬০ টাকা দরে, যা দুদিন আগেও বিক্রি হচ্ছিল প্রায় ৪০০ টাকা দরে।
বাজারে দরদাম করে নিলে বিক্রেতার চাওয়া দামের চেয়ে আরও ৫-১০ টাকা কমে কেনা যাচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। তবে পাড়া-মহল্লার কিছু দোকানে এখনো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, রমজানে অধিকাংশ রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকে। এজন্য মুরগির চাহিদা কিছুটা কমে গেছে। রোজা যত শেষের দিকে যাবে, চাহিদা বাড়বে।
খামার থেকে ১৯০-১৯৫ টাকা কেজি দরে মুরগি বিক্রি হলে খুচরায় ২৩০-২৪০ টাকা কেজি দরে কিনতে পারবেন ভোক্তারা। পরিবহন, ঘাটতি অন্যান্য খরচ মিলিয়ে বাজারে দামের পার্থক্য হবে ৩০-৪০ টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৭ মাসে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি কমেছে ৩ হাজার ৬৯ কোটি টাকা

ভিন্ন কড়াকড়ি আরোপের কারণে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমছেই। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাতমাসে (জুলাই-জানুয়ারি) সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি কমছে তিন হাজার ৬৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এসময়ে সঞ্চয়পত্র বিক্রি দিয়ে গ্রাহকের আগে বিনিয়োগ করা সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধ করাও সম্ভব হয়নি। উল্টো সরকারি কোষাগার বা ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়ে ঘাটতি পূরণ করা হয়েছে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ১৭৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ওই সময়ে সুদ-আসল পরিশোধের পরও সরকারের কোষাগারে ১২ হাজার ১৭৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা জমা ছিল। সেসময়ে ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।
চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৩৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের জানুয়ারিতে বিক্রির পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। তথ্য বলছে, গত বছরেরর তুলনায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি ব্যাপক কমেছে।
চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। এ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রথম ছয়মাসে এ খাত থেকে কোনো ঋণ পায়নি সরকার। উল্টো সরকার পরিশোধ করেছে।
চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। মূলত সঞ্চয়পত্র বিক্রির ওপর চাপ কমাতে ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে মুনাফার ওপর উৎসে কর ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। একই সঙ্গে এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন সনদপত্র বাধ্যতামূলক, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি না করার শর্তসহ আরও কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এরপরও বিক্রি বাড়তে থাকে।
সর্বশেষ ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ২ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই বিক্রি কমতে থাকে।
অন্যদিকে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ না পাওয়ায় ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি পূরণে এক লাখ ছয় হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। আগের অর্থবছরে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ছিল ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এবার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বেশি ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।
সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমা নিয়ে কথা হয় আসলাম নামে এক গ্রাহকের সঙ্গে। তিনি বলেন, একটা সময় সঞ্চয়পত্র মানুষের আস্থার জায়গা ছিল। সবাই এখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। সুদহার কমিয়ে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। শেয়ারবাজারের পরিবর্তে এখানে রেখেছিলাম, সেটাও আর হচ্ছে না। সব টাকা উঠিয়ে নিতে হচ্ছে।
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আহমেদ জানান, সাধারণ মানুষের নিরাপদ বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে সঞ্চয়পত্র বিবেচিত হতো। এখন সরকার কর্তৃক সুদহার কমানোসহ নানা কড়াকড়ির কারণে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে আগ্রহ কমছে মানুষের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, সুদহার কমানোসহ নানান কড়াকড়ির আরোপ করার পর থেকেই সঞ্চয়পত্র বিক্রি তলানিতে নেমেছে। বিক্রির চেয়ে সুদ-আসল পরিশোধেই সরকারের বেশি টাকা খরচ হচ্ছে। সুদহার কমায় অবসরের অর্থ কিংবা পরিবারের বাড়তি টাকা থাকলেও সেগুলো সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে আসছেন না। এতে বিক্রি কমে যাচ্ছে। এসব কারণে সরকারের ব্যাংক ঋণের পরিমাণও বাড়ছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রোজার প্রথম দিনই কমলো ব্রয়লার মুরগির দাম

পবিত্র রমজান মাস শুরু হলেও দ্রব্যমূল্য নিয়ে অস্বস্তি কাটছে না। ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে নাভিশ্বাস উঠেছে সীমিত আয়ের মানুষের। তবে রমজানের প্রথম দিনই কিছুটা স্বস্তি মিলেছে ব্রয়লার মুরগির বাজারে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে ব্রয়লারের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত।
পোলট্রি খাতের শীর্ষস্থানীয় চার প্রতিষ্ঠান খামার পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৯০-১৯৫ টাকা কেজি নির্ধারণের পরেই বাজারে এমন নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেল।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৬০ টাকা দরে। যা গতকাল বৃহস্পতিবারও ছিল ২৭০-২৮০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগামী দু-একদিনের মধ্যে দাম আরও কমবে। খামারে মুরগি ১৯০ টাকা বিক্রি হলে সেটা খুচরা বাজারে ২৩০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। তবে সেজন্য দু-একদিন সময় লাগবে।
রাজধানীর আগারগাঁও তালতলা বাজারের ব্রয়লার ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা যে মাল বিক্রি করছি সেটা আগের দামে কেনা। তারপরও পাইকারি বাজার কিছুটা কমায় কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমিয়ে বিক্রি করছি। যারা আজ (শুক্রবার) সকালে কাপ্তান বাজার থেকে মাল এনেছেন, তারা কেজিতে ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি করতে পারছেন।
এদিন খিলগাঁও রেলগেটে ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি সোনালি মুরগির দামও কিছুটা কমে বিক্রি হতে দেখা গেছে। সোনালি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৬০ টাকা। যা দুদিন আগেও ছিল ৪০০ টাকা ছুঁই ছুঁই।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানে অধিকাংশ রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকে বলে মুরগির চাহিদা কমে গেছে। সকাল থেকে বাজারে ক্রেতাও খুব কম। অনেক দোকান সকাল থেকে জুমার নামাজ পর্যন্ত বন্ধ ছিল। চাহিদা কমায় দামও কিছুটা কমেছে।
ব্রয়লার মুরগি বিক্রেতা সালাম জানান, ফার্ম থেকে ১৯০-১৯৫ টাকায় মুরগি বিক্রি হলে খুচরায় ২৩০-২৪০ টাকায় কিনতে হবে ভোক্তাদের। পরিবহন, ঘাটতিসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে বাজারে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত দামের পার্থক্য থাকে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজানের প্রথম দিন সকালে মুরগির দোকানে ভিড় ছিল তুলনামূলক কম। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আজ তারা পাইকারি বাজার থেকে ব্রয়লার ২৩৫ টাকা আর সোনালি মুরগি কিনেছেন ৩৪০ টাকা দরে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আট মাসে ২১ হাজার কোটি টাকার কৃষি ঋণ

চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ব্যাংকগুলো ২১ হাজার ৬৬ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ৬৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ব্যাংক খাতে ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ১২টি ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণের যে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে তার শতভাগ অর্জন করেছে। তবে পিছিয়ে পড়েছে ১৪ ব্যাংক। ৮ মাস পার হলেও এসব ব্যাংক লক্ষ্যের ৫০ শতাংশ ঋণও বিতরণ করতে পারেনি।
নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার শতভাগের বেশি ঋণ বিতরণ করেছে এ ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে- ব্যাংক আল-ফালাহ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, হাবিব ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, সিটিব্যাংক এনএ, এইচএসবিসি এবং উরি ব্যাংক।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময়ে রাষ্ট্রমালিকানার ব্যাংকগুলো ৮ হাজার ৬২৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা বা লক্ষ্যমাত্রার ৭৩ দশমিক ৪২ শতাংশ বিতরণ করেছে। আর বিদেশি ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো ১২ হাজার ৪৩৪ কোটি বা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৬৪ দশমিক ৯২ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। দেশে প্রতিবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি কৃষিঋণ বিতরণ করে কিছু ব্যাংক। আবার কিছু ব্যাংক আছে, যারা প্রতিবছরই ব্যর্থ হয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে।
তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কৃষি ঋণ বিতরণের স্থিতি ৫১ হাজার ২৩৬ কোটি। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ২০ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ কৃষি ঋণ আদায়ের হার প্রায় ৪১ শতাংশ। অন্যদিকে মোট বিতরণ করা ঋণের মধ্যে খেলাপি হয়েছে মাত্র তিন হাজার ৯৩২ কোটি। অর্থাৎ ৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ ব্যাংকও সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। ব্যাংকগুলোকে কৃষিঋণ বিতরণ বাড়াতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং তা প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা আছে, সেসব অঞ্চলে কৃষিঋণ বিতরণ বাড়াতে প্রচার চালানো হয়েছে।
সম্প্রতি কৃষিখাতে ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলে তা অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণের জন্য এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট কমন ফান্ড (বিবিএডিসিএফ) গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই নীতিমালা অনুযায়ী, কৃষি ও পল্লি ঋণ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিতরণ করতে না পারলে অবশিষ্ট অর্থ এই ফান্ডে জমা রাখতে হবে। কৃষিখাতে অধিক ঋণ দিতে সক্ষম ব্যাংকগুলোকে এই তহবিল থেকে অর্থ দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, আট মাসে শস্যখাতে বিতরণ হয়েছে ১০ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। সেচ সরঞ্জাম কিনতে দেওয়া হয়েছে ১৭৯ কোটি, কৃষি সরঞ্জাম কিনতে ১৪৯ কোটি, গবাদিপশু এবং হাঁস-মুরগির খামারে ৪ হাজার ৪৩৯ কোটি, মৎস্য খাতে ২ হাজার ৫৭৭ কোটি, শস্য গুদামজাত এবং বিপণনে ১০৪ কোটি, দারিদ্র্য দূরীকরণ খাতে ১ হাজার ২৪৭ কোটি এবং অন্যান্য খাতে ২ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
২০২১-২০২২ অর্থবছরে কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। সে সময়ে ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি, ১০২ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছিল। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয় ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। এর মধ্যে অর্থবছরের প্রথম আট মাসে লক্ষ্যমাত্রার ৬৮ দশমিক ১৫ শতাংশ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
বিতরণ করা এসব ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত আট ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ১১ হাজার ৭৫৮ কেটি টাকা। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ১৮ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা এবং বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭৭১ কোটি টাকা।
এছাড়াও, গত ২১ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর জারি করা ‘দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষিখাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন ও পরিচালনার নীতিমালা’ শীর্ষক সার্কুলারে ‘গরু মোটাতাজাকরণ’ খাত অন্তর্ভুক্ত করে নতুন সার্কুলার জারি করা হয়। আগের সার্কুলারে বলা হয়েছিল, ধান চাষ, মাছ চাষ, শাক-সবজি, ফল ও ফুল চাষ, প্রাণিসম্পদ খাতের আওতায় পোলট্রি ও দুগ্ধ উৎপাদন খাতে এই তহবিল থেকে ঋণ বিতরণ করা যাবে। মঙ্গলবার জারি করা নতুন সার্কুলারে ‘গরু মোটাতাজাকরণ’ খাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
১৭ নভেম্বর জারি করা সার্কুলারে এই তহবিলের নীতিমালায় বলা হয়েছিল, দেশের খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন কৃষক।
তহবিলটির নাম ‘খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি খাতের জন্য পুনঃ অর্থায়ন স্কিম’। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে গঠিত ৫ হাজার কোটি টাকার এই তহবিলের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। প্রয়োজনে তহবিলের অর্থের পরিমাণ ও মেয়াদ বাড়ানো হবে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
হজ ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে শনিবার খোলা থাকবে ব্যাংক

হজ ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে আগামী শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন।
এতে বলা হয়েছে, ‘হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন সীমিতসংখ্যক লোকবলের মাধ্যমে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পূর্ণ দিবস (সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত) ব্যাংক খোলা রাখতে হবে।’
একইসঙ্গে আগামী ২৭ মার্চ (সোমবার) প্রয়োজনে অফিস সময়ের পরেও প্রস্তুত করা ভাউচারের অর্থ নেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জনস্বার্থে এ নির্দেশ জারি করা হলো।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সবশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, হজের খরচ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমানো হয়েছে। তাছাড়া নতুন করে নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়েছে ২৭ মার্চ পর্যন্ত।