বাংলাদেশ চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে দেশের ১৬৮টি বাগান থেকে ৭ কোটি ৭৭ লাখ ৮০ হাজার কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্য ছিল। তবে লক্ষ্যের চেয়েও ১ কোটি ৮৭ লাখ ২৬ হাজার কেজি বেশি উৎপাদন হয়েছিল। ২০২০ সালেও দেশে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ কোটি ৪ লাখ ৫৪ হাজার কেজি বেশি উৎপাদন হয়। উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯৪ হাজার কেজি চা।
ডিসেম্বর পর্যন্ত চা বোর্ডের সর্বশেষ উৎপাদন প্রতিবেদন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে দেশে বাড়ছে চায়ের উৎপাদন। প্রতি বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি চা উৎপাদন হওয়ায় ২০২২ সালে চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা এক লাফে বাড়িয়ে ২ কোটি ২২ লাখ ২০ হাজার কেজি নির্ধারণ করা হয়। এর আগে প্রতি বছর দুই-আড়াই শতাংশ হারে চা উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করত চা বোর্ড। কয়েক বছর ধরে উৎপাদন প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যাওয়ায় বার্ষিক ১০ কোটি কেজি চা উৎপাদনের ল্যান্ডমার্ক লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু মৌসুমে অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত, ভরা মৌসুমে কয়েক সপ্তাহের শ্রমিক ধর্মঘট চা উৎপাদনের রেকর্ড লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হতে দেয়নি বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে চা উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে দাবি করে খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে চা উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা চলতি মৌসুমে ব্যাহত হয়েছে মূলত চা শ্রমিকদের মজুরি ইস্যুতে ধর্মঘটের কারণে। বছরের মাঝামাঝিতে টানা ২০ দিনের ধর্মঘটের কারণে দেশের চা উৎপাদন কমে যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় জুলাই ও আগস্টের উৎপাদন। জুলাইয়ে ১ কোটি ১২ লাখ ৬৭ হাজার কেজি এবং আগস্টে ১ কোটি ৭ লাখ ৬২ হাজার কেজিতে নেমে যায় উৎপাদন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক কম। যদিও সেপ্টেম্বরে রেকর্ড ১ কোটি ৪৭ লাখ ৪০ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়। তবে অক্টোবরে ধর্মঘটের কারণে ফের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে বাগানগুলো। ওই মাসে ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় ৩২ লাখ ১ হাজার কেজি কম উৎপাদন হয়।
খাতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে চায়ের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয় জুন থেকে অক্টোবরে। ব্যবহার বাড়তে শুরু করে অক্টোবর থেকে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশে চায়ের ব্যবহার সাড়ে নয় কোটি কেজি ছাড়িয়েছে। এবার দেশীয় ব্যবহারের চেয়ে উৎপাদন কম হওয়ায় মূল্যবৃদ্ধি ও আমদানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
অর্থসংবাদ/এসএম