জানুয়ারিতে এশিয়ার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সংকুচিত

জানুয়ারিতে এশিয়ার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সংকুচিত
বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ায় গত বছরের শেষদিকে চীনের কলকারখানাগুলোয় কর্মকাণ্ড শুরু হয়। এতে ধারণা করা হয়েছিল, দেশটিতে কর্মচাঞ্চল্য ফিরলে তার প্রভাব গোটা অঞ্চলেই পড়বে। কিন্তু দেখা গেছে, জানুয়ারিতে এশিয়ার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বরং সংকুচিত রয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত কাইশিন জরিপে দেশটির রফতানি গন্তব্য হিসেবে ইউরোপ ও আমেরিকায় চাহিদা কমার ব্যাপারে তুলে ধরা হয়। জোর দেয়া হয় এশীয় অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রতি। খবর রয়টার্স।

কভিড-১৯ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ায় ফলে চীনের কর্মকাণ্ডে কিছুটা গতি ফিরেছে। অন্যদিকে উৎপাদন সংকোচন তুলনামূলকভাবে মন্থর হয়েছে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায়। তার পরও এশিয়া শেষ পর্যন্ত বৈশ্বিক চাহিদা হ্রাস ও মূল্যস্ফীতির বাধা কাটিয়ে উঠতে পারবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকে যাচ্ছে। টোকিওতে অবস্থিত দাই-ইচি লাই রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান অর্থনীতিবিদ তোরু নিশিহামা বলেন, ‘‌সৃষ্ট এ পরিস্থিতির পেছনে রয়েছে এশিয়ার মন্দাবস্থা। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মতো প্রধান রফতানি গন্তব্য এখনো তেমন শক্তিশালী নয়। মহামারীর ধকল কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলমান। পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে হলে এশিয়ায় অর্থনীতির জন্য নতুন চালিকাশক্তি প্রয়োজন, যেটি এখনো অনুপস্থিত।

চীনের কাইশিন/এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল ম্যানুফ্যাকচারিং পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স (পিএমআই) জানুয়ারিতে ৪৯ থেকে ৪৯ দশমিক ২-তে উত্তীর্ণ হয়েছে। সামান্য বৃদ্ধি দেখালেও ফলাফল এখনো ৫০-এর নিচে। উল্লেখ্য, পিএমআই মান ৫০ পয়েন্টের নিচে সংকোচন ও উপরে প্রসারণকে নির্দেশ করে। তবে প্রকাশিত এ তথ্য চীনা সরকার কর্তৃক ঘোষিত তথ্যের বিপরীত। চীন সরকার প্রকাশিত পিএমআইতে কেবল বৃহৎ ও রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ব্যবসাগুলোকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। অন্যদিকে কাইশিন সমীক্ষায় উপকূলীয় অঞ্চলের রফতানিভিত্তিক ও ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোও অন্তর্ভুক্ত। ফলে সরকারি জরিপের ফলাফলের চেয়ে এটি আরো বিশ্বাসযোগ্য।

এদিকে জানুয়ারিতে জাপানের আউ জিবুন ব্যাংক পিএমআই সূচক ৪৮ দশমিক ৯-তে। অর্থাৎ গত মাসের তুলনায় এ মান অপরিবর্তিত। জাপানের পিএমআই সমীক্ষা থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পরের যেকোনো সময়ের তুলনায় সরবরাহজনিত বিলম্বের ঘটনা কমে এসেছে। কাঁচামাল ও কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের মূল্যস্ফীতিও ছিল তুলনামূলকভাবে মন্থর। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার কারখানা কর্মকাণ্ড জানুয়ারিতে টানা সপ্তম মাসের মতো সংকুচিত হয়েছে। সূচক ৪৮ দশমিক ২ থেকে বেড়ে ৪৮ দশমিক ৫-তে উত্তীর্ণ হলেও তা ৫০-এর নিচে। যদিও অবনমন অন্য মাসের তুলনায় ধীর ছিল। দক্ষিণ কোরিয়ার উৎপাদন খাতের জন্য সাম্প্রতিক আউটলুককে চ্যালেঞ্জিং হিসেবে মনে করেন এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল মার্কেট ইন্টেলিজেন্সের অর্থনীতিবিদ উসামা ভাট্টি। তিনি বলেন, ‘‌কারখানাগুলো এখনো আত্মবিশ্বাসী, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে এবং এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চাহিদা বাড়বে।’

পিএমআই জরিপ অনুযায়ী, জানুয়ারিতে শিল্প খাতের কর্মকাণ্ড বেড়েছে ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপিনে। কিন্তু মালয়েশিয়া ও তাইওয়ানে কমেছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল গত মঙ্গলবার ২০২৩ সালের জন্য প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কিছুটা বাড়িয়েছে। যদিও সংস্থাটি বলছে, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার এখনো খুবই ধীর। ২০২২ সালে যেখানে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, চলতি বছর এখন পর্যন্ত সেই হার ২ দশমিক ৯ শতাংশ। ফলে বিশ্ব যেকোনো সময় মন্দার কবলে পড়তে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে আইএমএফ।

অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া