সূত্র জানায়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত শতাধিক কোম্পানি গতকাল (সোমবার) দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে এসব কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য জানানো হয়। তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ২৮ পয়সা লোকসান দিয়েছে এমন তথ্য দেওয়া হয় ডিএসইর ওয়েবসাইটে। অথচ দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২১ পয়সা। অর্থাৎ আয়কে লোকসান হিসেবে দেখানো হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে। যদিও প্রায় দুই ঘণ্টা পর তথ্য সংশোধন করে নেয় প্রধান শেয়ারবাজার কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইস্টার্ন ক্যাবলস থেকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মার্কেট অপারেশন ডিপার্টমেন্টে সঠিক তথ্য দেওয়া হয়েছে। তবে মার্কেট অপারেশন ডিপার্টমেন্ট থেকে ইচ্ছাকৃতভাবেই ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। মার্কেট অপারেশন বিভাগের প্রধান রনি ইসলাম কারসাজির চক্রের ইন্ধনেই এ ভুল তথ্য প্রকাশ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও এসিআই লিমিটেডের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে। ওই সময় মার্কেট অপারেশন বিভাগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ডিএসই তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। এমনকি মার্কেট অপারেশন বিভাগের তৎকালীন প্রধানকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে পুণরায় ভুল তথ্য দেওয়া হলেও ডিএসইর বর্তমান মার্কেট অপারেশন বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ডিএসইর মার্কেট অপারেশন বিভাগ এর আগেও বিভিন্ন সময় দায়িত্বে অবহেলা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি কনফিডেন্স সিমেন্ট নিয়ম লঙ্ঘন করে বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি ডিএসই। জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করলে কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হয়। অথচ কনফিডেন্স সিমেন্ট নিয়ম লঙ্ঘন করে বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়নি ডিএসইর মার্কেট অপারেশন বিভাগ।
সূত্র মতে, সর্বশেষ হিসাববছরের জন্য (৩০ জুন, ২০২২) কনফিডেন্স সিমেন্ট ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে। গত ৬ নভেম্বর কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। অথচ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরে কনফিডেন্স সিমেন্টের উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে কোম্পানিটির ২৬ দশমিক ৩১ শতাংশ শেয়ার ছিল। তবে ডিএসইর মার্কেট অপারেশন বিভাগের অবহেলায় ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয় কনফিডেন্স সিমেন্ট।
এসব বিষয়ে জানতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মার্কেট অপারেশন ডিভিশনের প্রধান রনি ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম সাইফুর রহমান মজুমদার অর্থসংবাদকে বলেন, ভুল হলে সংশোধন করে দেওয়া হয়। এটাই স্বাভাবিক। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, আগের কোন ঘটনায় তদন্ত হয়েছে কি না সেটি এখন বলতে পারছি না।