অর্থনীতি
২০ প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা

দেশের শীর্ষ ২০ ঋণ খেলাপির কাছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৬ হাজার ৫৮৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আর মোট ঋণের পরিমাণ ১৯ হাজার ২৮৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের এক প্রশ্নের জবাবে ঋণ খেলাপির তালিকা উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী জানান, দেশে মোট ঋণ খেলাপির সংখ্যা ৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬৫ জন।
ঋণ খেলাপির শীর্ষে থাকা ২০টি কোম্পানি হলো- সিএলসি পাওয়ার কোম্পানি, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, রিমেক্স ফুটওয়্যার, রাইজিং স্টিল কোম্পানি, মোহাম্মদ ইলিয়াস ব্রাদার্স, রূপালী কম্পোজিট লেদার ওয়্যার, ক্রিসেন্ট লেদারস প্রডাক্ট, কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেমস, সাদ মুসা ফেব্রিক্স, বি আর স্পিনিং মিলস, এস.এ অয়েল রিফাইনারি, মাইশা প্রপার্টি ডেভলাপমেন্ট, রেডিয়াম কম্পোজিট টেক্সটাইল, সামান্নাজ সুপার অয়েল, মানহা প্রিকাস্ট টেকনোলজি, আশিয়ান এডুকেশন, এস.এম স্টিল রি-রোলিং মিলস, এ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স, এহসান স্টিল রি-রোলিং এবং সিদ্দিকী ট্রেডার্স।
এর মধ্যে সিএলসি পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ঋণের স্থিতি ১ হাজার ৭৩২ কোটি ৯২ লাখ টাকা। তাদের খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৬৪০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লি.-এর ঋণের স্থিতি ১ হাজার ৮৫৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। তাদের খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৫২৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। রিমেক্স ফুটওয়্যার লি.-এর ঋণের স্থিতি ১ হাজার ৭৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এদের পুরোটাই খেলাপি ঋণ। রাইজিং স্টিল কোম্পানি লি.-এর ঋণের স্থিতি ১ হাজার ১৪২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। তাদের খেলাপি ঋণ ৯৯০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। মোহাম্মদ ইলিয়াস ব্রাদার্স (প্রা.) লি.-এর ঋণের স্থিতি ৯৬৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। তাদের পুরোটাই খেলাপি ঋণ। রূপালী কম্পোজিট লেদার ওয়্যার লি.-এর স্থিতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ একই। তাদের খেলাপি ঋণ ৮৭৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
ক্রিসেন্ট লেদারস প্রডাক্ট লি.-এর স্থিতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮৫৫ কোটি ২২ লাখ টাকা। কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেমস লি.-এর স্থিতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮১১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। সাদ মুসা ফেব্রিক্স লি.-এর ঋণের স্থিতি ১ হাজার ১৩১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭৭৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। বি আর স্পিনিং মিলস লি.-এর স্থিতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭২১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এস.এ অয়েল রিফাইনারি লি.-এর ঋণের স্থিতি ১ হাজার ১৭২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭০৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। মাইশা প্রপার্টি ডেভলাপমেন্ট লি.-এর ঋণের স্থিতি ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৬৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা। রেডিয়াম কম্পোজিট টেক্সটাইল লি.-এর ঋণের স্থিতি ৭৭০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৬০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। সামান্নাজ সুপার অয়েল লি.-এর ঋণের স্থিতি ১ হাজার ১৩০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৫১ কোটি ৭ লাখ টাকা।
মানহা প্রিকাস্ট টেকনোলজি লি.-এর ঋণের স্থিতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৪৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আশিয়ান এডুকেশন লি.-এর ঋণের স্থিতি ৬৫৩ কোটি টাকা। তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৩৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এস.এম স্টিল রি-রোলিং মিলস লি.-এর ঋণের স্থিতি ৮৮৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৩০ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স লি.-এর ঋণের স্থিতি ৮৭২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬২৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এহসান স্টিল রি-রোলিং লি.-এর ঋণের স্থিতি ৬২৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা, তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫৯০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। সিদ্দিকী ট্রেডার্স-এর ঋণের স্থিতি ৬৭০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫৪১ কোটি ২০ লাখ টাকা।
বিজনেস নিউজ পোর্টাল অর্থসংবাদে প্রকাশিত ও প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
প্রথম আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান সম্মেলন শুরু ২৮ জানুয়ারি

দেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার (২৮ জানুয়ারি)। রাজধানীর বনানীর হোটেল শেরাটনে দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বাংলাদেশ একাউন্টিং এসোসিয়েশন (বিএএ) ও ইন্ডিয়ান একাউন্টিং এসোসিয়েশন রিসার্চ ফাউন্ডেশন (আইএএআরএফ) যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ একাউন্টিং এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. হারুনুর রশিদ। একাউন্টিং এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. সাইয়েদুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ হায়দার আহমেদ খান এফসিএ, নির্বাহী সদস্য মো. মনিরুজ্জামান, ঢাকা রিজিওনের সভাপতি অধ্যাপক মাসুম রাব্বানী খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় একাউন্টিং অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম হাওলাদার এবং ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সরকারের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী। প্রথম দিন বিশেষ অতিথি থাকবেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন। ২৯ জানুয়ারি সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, হিসাববিজ্ঞান সম্পর্কিত পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের নিয়ে হিসাববিজ্ঞান সেবা উন্নতকরনের মধ্য দিয়ে দেশের শাসনব্যবস্থা উন্নত করা, পেশাভিক্তিক এবং সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করা ও দেশ-বিদেশে প্রতিনিধিত্ব করাই অ্যাকাউন্টিং এসোসিয়েশনের মূল লক্ষ্য। এর প্রেক্ষিতে ‘হিসাববিজ্ঞান ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার নবতর ইস্যুসমূহে শিক্ষাবিদ ও পেশাজীবিদের ভূমিকা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে।
এবারের সম্মেলনে উদীয়মান অর্থনীতিতে হিসাববিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা, সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা, সরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য জগতের পরিপার্শ্বিক ব্যবস্থাপনা, প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণে ব্যবস্থাপনার ভূমিকা এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় ৫০টি গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হবে।
দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে আমেরিকান অ্যাকউন্টিং এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি প্রফেসর ড. শ্যাম সুন্দর এবং আইএএআরএফ সভাপতি প্রফেসর ড. ভবতোষ ব্যানার্জিসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিরাও অংশ নেবেন।
বিজনেস নিউজ পোর্টাল অর্থসংবাদে প্রকাশিত ও প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বেপজায় ৬ মিলিয়ন ডলারে নির্মাণ হচ্ছে পোশাক কারখানা

বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৬.০৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগে একটি তৈরি পোশাক কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশি কোম্পানি ভাইয়া অ্যাপারেলস লিমিটেড।
বুধবার বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এবং ভাইয়া অ্যাপারেলস লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) আলী রেজা মজিদ এবং ভাইয়া অ্যাপারেলস লিমিটেড এর চেয়ারম্যান মোঃ শাখাওয়াত হোসেন মামুন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন।
দেশীয় এ প্রতিষ্ঠানটি বার্ষিক ৬ মিলিয়ন পিস বিভিন্ন ধরনের জ্যাকেট, ভেস্ট, কাভারঅল, প্যান্ট, শার্ট, সুইমিং ট্রাংক, টি-শার্ট, বক্সার, ট্যাংক টপ প্রভৃতি উৎপাদন করবে। কারখানাটিতে ২২০৬ জন বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে বেপজার সর্ববৃহৎ প্রকল্প বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপিত হচ্ছে। একসময়ের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে থাকা অনাবাদী এই এলাকা একটি প্রাণচঞ্চল শিল্প এলাকায় পরিণত হতে চলেছে। বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প স্থাপনের লক্ষ্যে ভাইয়া অ্যাপারেলস লিমিটেডসহ ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিল বেপজা। প্রতিষ্ঠানসমূহের মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ৩৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বেপজার নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন) মোঃ জাকির হোসেন চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) নাজমা বিন্তে আলমগীর, নির্বাহী পরিচালক (এন্টারপ্রাইজ সার্ভিসেস) মোঃ খুরশীদ আলম, নির্বাহী পরিচালক নাহিদ মুন্সী, বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক মোঃ এনামুল হক এবং অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মোঃ ফজলুল হক মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
বিজনেস নিউজ পোর্টাল অর্থসংবাদে প্রকাশিত ও প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রিজার্ভ থেকে ৮৫০ কোটি ডলার বিক্রি

ডলারের তীব্র সংকট দীর্ঘদিন ধরেই। সংকট কাটাতে উচ্চাভিলাসী পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় বাংক। তবে সংকট যে সহসা কাটছে না, এ এখন অনেকটাই স্পষ্ট। এ অবস্থায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলত, জরুরি আমদানির দায় মেটাতেই এ ডলার সহায়তা।
এরপরও আটকে আছে কোটি কোটি টাকার পণ্য। ডলার সংকটে আমদানিকারকদের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাংকগুলো। এসব সমস্যার সমাধান দিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারির ২৩ তারিখ পর্যন্ত) ৮৫০ কোটি বা ৮ দশমিক ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের ইতিহাসে এর আগে কোনো এক পুরো অর্থবছরেও রিজার্ভ থেকে এতো পরিমাণ ডলার বিক্রি হয়নি।
সবশেষ গত ২০২১-২২ অর্থবছরের পুরো সময়ে রিজার্ভ থেকে ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার সহায়তা দেওয়ার কারণে রপ্তানি আয় ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বাড়ার পরও রিজার্ভ কমছে। সবশেষ গত সোমবার (২৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কাছে পাঁচ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। ফলে দিনশেষে রিজার্ভের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রিতে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৭৬২ কোটি বা ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে ডলারের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় বাজার থেকে উল্টো প্রায় ৮০০ কোটি বা ৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
চলতি অর্থবছরের সাত মাস না পেরোতেই ৮৫০ কোটি বা ৮ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, রেমিটেন্স ব্যাংকিং চ্যানেলে আরও বাড়াতে হবে। পাশাপাশি রপ্তানি বাড়াতে পারলে অভ্যন্তরীণ ডলার সংকট অনেকাংশে কমে আসবে। চলতি মাস জানুয়ারির প্রথম ২০ দিনে দেশে এক হাজার ৩১৫ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে।
বিজনেস নিউজ পোর্টাল অর্থসংবাদে প্রকাশিত ও প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জানুয়ারির ২০ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪ হাজার কোটি টাকা

ডলার সংকটের মধ্যেই সুবাতাস বইছে প্রবাসী আয়ে। চলতি জানুয়ারি মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত ১৩১ কোটি ৫২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা হিসাবে) এর পরিমাণ ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে আসছে ৬ কোটি ৫৭ লাখ ডলারের বেশি। রেমিট্যান্সের এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে দুই বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
এর আগের মাস ডিসেম্বরে এসেছিল ১৬৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা জানান, বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। রেমিট্যান্সে প্রণোদনাও বাড়ানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা উদ্যোগও কাজে আসছে। এখন রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে শুরু করেছে। আমাদের সামনে দুটি ঈদ আছে। ঈদ কেন্দ্র করে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়বে।
এর আগে চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। এর পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা পাঁচ মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের আশপাশে আটকে থাকে রেমিট্যান্স।
জুলাই মাসে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ অর্থবছরের শুরুর দুই মাস দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছিল।
এর পরই কমতে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ। সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার, অক্টোবরে এসেছিল ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার আর আর সদ্য বিদায়ী ডিসেম্বরে প্রায় ১৭০ কোটি ডলার বা ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিরা।
বিজনেস নিউজ পোর্টাল অর্থসংবাদে প্রকাশিত ও প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পেনশন পাবেন সব নাগরিক, সংসদে বিল পাস

দেশের সব নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনতে সংসদে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ পাস হয়েছে। এর ফলে ৬০ বছর পর আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন নাগরিকরা। এই সুবিধা পেতে ১৮ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী নাগরিকদের নির্ধারিত হারে চাঁদা দিতে হবে।
এছাড়া বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্বরাও এই আইনের আওতায় নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা পরিশোধ করে পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ থেকে নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হবেন, সে বয়স হতে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হবেন। আজীবন বলতে পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত বিবেচনা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদে বিলটি স্থিরকৃত আকারে পাস হয়।
এটি পাসের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর আগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। তবে কতিপয় সংশোধনী গৃহীত হয়।
পেনশন আইনে বলা হয়েছে, চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিলে মাসিক পেনশন পাবেন। চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন দেওয়া হবে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন।
আইনে আরও বলা আছে, নিম্ন আয়ের নাগরিকদের অথবা অসচ্ছল চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসেবে দিতে পারবে।
বিলে বলা হয়েছে, একজন পেনশনার আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন। তবে পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে তার নমিনি অবশিষ্ট সময়ের জন্য (৭৫ বছর পর্যন্ত) মাসিক পেনশন পাবেন। চাঁদাদাতা ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে মারা গেলে জমা করা অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।
এছাড়া পেনশনের জন্য জমা দেওয়া অর্থ, কোনো পর্যায়ে এককালীন তোলার প্রয়োজন হলে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে তুলতে পারবেন, যা ফিসহ পরিশোধ করতে হবে। পেনশন থেকে পাওয়া অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে। পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে।
সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি অথবা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারবে। এক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ নির্ধারণ করবে কর্তৃপক্ষ। তবে সরকারি সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত সরকারি ও আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা পেনশন ব্যবস্থার আওতাবহির্ভূত থাকবেন।
এই আইন কার্যকর হওয়ার পর সরকার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পাঁচ সদস্যের একটি জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠন করবে। যার প্রধান হবেন নির্বাহী চেয়ারম্যান। আর বাকি চারজন সদস্য হিসেবে থাকবেন। এদের নিয়োগ করবে সরকার। তাদের চাকরির মেয়াদ শর্তবিধি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ব্যয় নির্বাহ করবে সরকার। সরকারের অনুমোদন নিয়ে এ কর্তৃপক্ষ ঋণ নিতে পারবে।
এছাড়া পেনশন ব্যবস্থাপনার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৬ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে বিলে। এর চেয়ারম্যান হবেন অর্থমন্ত্রী। এতে সদস্য হবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, এপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি এবং উইমেন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি। আর পর্ষদের সদস্য সচিব হবেন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদের দফা (ঘ)-এর বিধান অনুযায়ী, সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার ও অন্যান্য অভাবগ্রস্থার ক্ষেত্রে নাগরিকদের সরকারি সাহায্য লাভের অধিকারের বিধান অন্তর্ভুক্ত করে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন আবশ্যক। উন্নয়নের অগ্রযাত্রার সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা ও দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় আনার বিষয়টি নিশ্চিতে সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন বিল প্রণয়ন করা সমীচীন।