নতুন রেকর্ডের পথে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ

নতুন রেকর্ডের পথে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ
বিশ্বব্যাপী করোনায় স্থবির অর্থনীতি। আর এ মহামারীর মধ্যেই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরেকটি মাইলফলক অতিক্রম করতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৭ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার, যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে প্রায় সাড়ে নয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন (তিন হাজার ৮০০ কোটি) ডলার ছাড়াবে বলে প্রত্যাশা করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, করোনা মহামারীতে রেমিট্যান্স প্রবাহে কোন ব্যাঘাত ঘটেনি, বরং আরও বেড়েছে। জুলাইয়ে ২৬০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনও এক মাসে এত বেশি রেমিটেন্স দেশে আসেনি। চলতি আগস্টের ছয় দিনে (১ থেকে ৬ আগস্ট) ২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগে এক মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছিল জুনে ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। করোনা মহামারীতে মার্চ থেকে বৈশ্বিক পরিস্থিতি ওলটপালট হয়ে যাওয়ায় রেমিটেন্সও কমে গিয়েছিল। কিন্তু এপ্রিল থেকে রেমিট্যান্সে ঊর্ধ্বগতির ধারা চলছে। এর গতি ধরে রাখতে গত অর্থবছরে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল সরকার। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরেও এ ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা অব্যাহত রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা গেছে, বিদায়ী অর্থবছরে (২০১৯-২০) মোট এক হাজার ৮২০ কোটি ৩০ লাখ (১৮.২০ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা। ওই অংক ছিল আগের অর্থবছরের (২০১৮-১৯) চেয়ে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরে (২০১৮-১৯) মোট ১৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন রেমিট্যান্স এসেছিল।

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পাশাপাশি বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি ও এআইআইবির মতো দাতা সংস্থার ঋণ এবং অন্যান্য অনুদান সহায়তাও রিজার্ভ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। চার মাসে (এপ্রিল-জুলাই) দাতা সংস্থাগুলোর সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ-সহায়তা যোগ হয়েছে রিজার্ভে। গত বছরের ৮ আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২৪ জুনে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২ জুলাই সেই রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। এরপর ৭ জুলাই এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মে-জুন মাসের ৭২ কোটি ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে প্রবাসীরা বেশি রেমিট্যান্স পাঠানোয় সেই রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। আকুর জুলাই-আগস্ট মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। এর আগ পর্যন্ত রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলারের উপরেই অবস্থান করবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ- এই নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
বিদেশি ডেবিট কার্ডে অর্থ তোলা বন্ধ করল ইবিএল
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প