এলসি ছাড়াই ২ হাজারের বেশি গাড়ি আমদানি

এলসি ছাড়াই ২ হাজারের বেশি গাড়ি আমদানি
ঋণপত্র বা এলসি ছাড়াই ২ হাজারেরও বেশি গাড়ি আমদানি হয়েছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে এসব গাড়ি খালাস করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, ব্যাংকগুলো আশ্বাস দিয়েও এলসি না খোলায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও পরে এলসি সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি তাদের।

এদিকে, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এলসি ছাড়া গাড়ি ছাড় করার সুযোগ নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার গাড়ি আমদানির যে ঘটনা ঘটেছে তা নজিরবিহীন। এ ধরনের অনিয়ম ঠেকাতে জরিমানার পাশাপাশি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।

প্রসঙ্গত, ঋণপত্র খোলা হয়নি এমন দুই হাজারেরও বেশি আমদানি করা গাড়ি সম্প্রতি চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে পৌঁছায়। আর তা নিয়ে দুই সমুদ্র বন্দরে তোলপাড় তৈরি হয়।

আমদানি নীতি অনুযায়ী যেকোনো পণ্য বিদেশ থেকে জাহাজীকরণের আগেই ঋণপত্র খুলতে হবে। কিন্তু ঋণপত্র ছাড়াই গাড়ির এতোবড় চালান কীভাবে দেশে আসলো সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকলস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি হাবিবউল্লাহ ডন বলেন, শিপিংয়ের সময় যখন হয়ে গেছে, তখন উনারা গাড়ি তুলে দিয়েছে। আর আমাদের আমদানিকারকরা বলেছেন, ব্যাংক আশস্ত করেছে, এলসি ছেড়ে দেবে। এদিকে, এলসি যেতে যেতে গাড়িগুলো নেমে গেছে।

নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিদেশ থেকে আনা এসব গাড়ি বন্দর থেকে খালাসও করা হচ্ছে। ঋণপত্র ছাড়া আমদানি করা গাড়ি ছাড়ের ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেয়ার বিধান থাকলেও তা মানা হয়নি। তবে অনিয়মের বিষয়টি মানতে নারাজ ব্যবসায়ীরা। বলছেন, দেরিতে হলেও সব গাড়ির এলসি করা হয়েছে।

হাবিবউল্লাহ ডন বলেন, শিপিং ডেটের সাথে এলসির ডেটের মিল না পেলে জরিমানা করে তারপর ওই পণ্যটা ছাড়া দেয়। আমাদের গাড়ির ব্যাপারেও তাই হচ্ছে, ৪ থেকে ৬ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করেছে। আর সেটাই ছাড় দিচ্ছে।

ঋণপত্রবিহীন গাড়ি খালাসের ক্ষেত্রে বন্দর কর্তৃপক্ষের কিছু করার নেই। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলছেন, কাস্টমস ক্লিয়ান্সেসহ যাবতীয় তথ্য যাচাই করেই গাড়ি ছাড়া হচ্ছে। ৩০ দিনের মধ্যে বন্দরে থাকা গাড়ি খালাস না হলে নিলাম হয়ে যাবে।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষের দাবি, এলসিবিহীন গাড়ি ছাড় করার কোনো সুযোগ নেই। জাহাজীকরণের পরে যেসব গাড়ির এলসি হয়েছে, সেখানে জরিমানা করা হচ্ছে।

মোংলা কাস্টমসের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান বলেন, এলসি ছাড়া কোনো অ্যাসেসমেন্টই হচ্ছে না। এলসি করেতেছে, এটি অনলাইনে সাবমিট হচ্ছে, পরে এটি হার্ডকপি নিয়ে আসতেছে। ব্যাংক সার্টিফাইড করে দুইটি ক্রসচেক করে এলসি থাকা সাপেক্ষে এগুলো অ্যাসেসমেন্ট হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে যখন ডলার সংকট, তখন এ ধরনের বিলাস পণ্যে আমদানির যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন আছে। ঋণপত্র ছাড়া এতো বেশি গাড়ি আগে কখনও আসেনি।

কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাটের কমিশনার আব্দুল কাফি বলেন, তিন ধরনের নিয়ম ভাঙা হচ্ছে। একটি হচ্ছে এলসি ছাড়াই জাহাজীকরণ, আরেকটি হচ্ছে জাহাজ ছাড়ার পর এলসি হলো, বাকিটা হলো পণ্য পৌঁছার পর এলসি করা হলো। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের একটি বার্তা দেয়া উচিত ছিল, এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে।

গাড়ি খালাসের আগে হয়তো ঋণপত্র খোলা হবে। তবে সংকটের এই সময়ে ডলারের ওপর নতুন চাপ বাড়বে বলেও মনে করেন কাস্টমসের সাবেক এই কমিশনার।

অর্থসংবাদ/কেএ

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ