মূল মার্কেটের চেয়ে লভ্যাংশে এগিয়ে এসএমই প্লাটফর্ম

মূল মার্কেটের চেয়ে লভ্যাংশে এগিয়ে এসএমই প্লাটফর্ম

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২১৫টি সমাপ্ত অর্থবছরের (৩০ জুন, ২০২২) জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ২০৪ কোম্পানির শেয়ার মূল মার্কেটে লেনদেন হয়। বাকি ১১ কোম্পানি এসএমই মার্কেটে (স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর প্লাটফর্ম) তালিকাভুক্ত। তবে বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার ক্ষেত্রে মূল মার্কেটের চেয়ে এসএমই মার্কেট এগিয়ে রয়েছে। কোম্পানিগুলোর তথ্য অনুযায়ী, মূল মার্কেটের ৫৬ শতাংশ কোম্পানি সমাপ্ত অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দেবে। অপরদিকে এসএমই মার্কেটের ৮১ শতাংশ কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিচ্ছে।


এসএমই মার্কেটে তালিকাভুক্ত ১১ কোম্পানি সমাপ্ত অর্থবছরের (৩০ জুন, ২০২২) জন্য প্রায় ৩০ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১০ শতাংশ বা তাঁর বেশি লভ্যাংশ দেবে ৯ কোম্পানি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ লভ্যাংশ দেবে কৃষিবিদ সীড। আর সবচেয়ে কম লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে নিয়ালকো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।


জানা গেছে, এসএমই মার্কেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা কৃষিবিদ সীড বিনিয়োগকারীদের নগদ ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে। টাকার অংকে এ লভ্যাংশের পরিমাণ সাড়ে চার কোটি টাকা।


এসএমই মার্কেটে নগদ লভ্যাংশ প্রদানে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে স্টার অ্যাডহেসিভ। কোম্পানিটি ২০২২ সালের জন্য বিনিয়োগকারীদের সাড়ে ১২ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে। টাকার অংকে এ লভ্যাংশের পরিমাণ আড়াই কোটি টাকা।


ওরিজা অ্যাগ্রো লিমিটেড সমাপ্ত অর্থবছরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা মোট ৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকার লভ্যাংশ পাবেন।


এছাড়াও ১০ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে এসএমই প্লাটফর্মের ৬ কোম্পানি। এর মধ্যে বিডি পেইন্টস ৪ কোটি ২৪ লাখ, আছিয়া সি ফুড ২ কোটি ৫৯ লাখ, মামুন অ্যাগ্রো ৩ কোটি ৫০ লাখ, মাষ্টার ফিড ৪ কোটি ১০ লাখ, হিমাদ্রি লিমিটেড ৮ লাখ এবং ইউসুফ ফ্লাওয়ার মিলস ৬ লাখ টাকা নগদ লভ্যাংশ দেবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।


লভ্যাংশ ঘোষণা করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৬ কোম্পানি শুধুমাত্র সাধারণ বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেওয়ার কথা জানিয়েছে। এসব কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা লভ্যাংশ পাবেন না। কোম্পানিগুলো হলো- বিডি পেইন্টস লিমিটেড, মামুন অ্যাগ্রো প্রোডাক্টস, মাস্টার ফিড অ্যাগ্রোটেক লিমিটেড, মোস্তফা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ, আছিয়া সি ফুড এবং ওরিজা অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ।


পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন মনে করেন, স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলো যদি মার্কেটে ভালো কিছু করতে চায় তবে তাদেরকে সুযোগ দেওয়া উচিৎ। অর্থসংবাদকে তিনি বলেন, মূল মার্কেটের তুলনায় এসএমই প্লাটফর্মের কোম্পানিগুলো ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে। যেসব স্বল্প মূলধনী কোম্পানি ভালো প্রফিট করছে, তাদেরকে সুযোগ দিলে বাজারের জন্য ভালো হবে। কারণ আমাদের মূল মার্কেটে অনেক কোম্পানি আছে যারা নামমাত্র লভ্যাংশ দিচ্ছে।


এসএমইতে বিনিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের নিজেদের বিষয়। এসএমইর কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর যদি মার্কেটের সাথে সামঞ্জস্য হয়, তবে দরবৃদ্ধি খারাপ কিছু না। আর যদি কারসাজি করে শেয়ারদর বাড়ানো হয়, তাহলে বিএসইসি ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।


প্রসঙ্গত, গত বছরের (২০২১) ১৬ সেপ্টেম্বর দুই স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই ও সিএসই) ওটিসি মার্কেট বাতিল করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। ওইদিন কমিশন সভায় ২৯ কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করে ৪১টি কোম্পানিকে এসএমই ও এটিবিতে (অলটারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড) স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের এসএমই প্লাটফর্মে লেনদেন শুরু হয়। সেদিন প্রথমিকভাবে ছয়টি কোম্পানি নিয়ে ডিএসইর এসএমই প্লাটফর্মে লেনদেন চালু করা হয়। বর্তমানে এসএমইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ১৫টি।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত