এসএমইতে দরপতন, পুঁজি হারানোর শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা

এসএমইতে দরপতন, পুঁজি হারানোর শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এসমএমই মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা পুঁজি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হতে বসেছে। ডিএসইর মূল বাজারে ফ্লোর প্রাইস ( সর্ব নিম্ন মুল্যসীমা) থাকায় বিনিয়োকারীদের মূলধন নিরাপদ থাকলেও আতঙ্কে আছে এসএমই প্ল্যাটফর্মের কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা। স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর বাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠাগুলোর বেশিরভাগেরই শেয়ারদর অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে।একই বাজারে দুই রকম নীতি হলেও বিএসইসির সমালোচনা করছেন বিনিয়োগকারীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।





এদিকে ইউসিবি স্টকের এক বিনিয়োগকারী অর্থসংবাদকে জানায়, বিনিয়োগের অর্ধেক পুঁজি হারিয়ে তিনি এখন দিশেহারা। যদি এই মুহুর্তে ডিএসইর মুল বাজারের মতো এসএমইতেও ফ্লোর প্রাইস না দেওয়া হয় তবে বাকি পুঁজিও হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন তিনি।





ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে এসএমই মার্কেটে ১৫টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে লেনদেন হয় ১৩ কোম্পানির শেয়ার। যেসব কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে, সেগুলোর অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর ৫০ শতাংশের বেশি কমেছে। বাকি কোম্পানিগুলোর শেয়ারদরও কমেছে।





সূত্র মতে, এসএমই মার্কেটের কোম্পানি ওয়ান্ডার টয়জের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। গত এক বছরের মধ্যে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ১১৫ টাকায়। আর সর্বশেষ এই শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৩ টাকা ৮০ পয়সায়। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারদর ৮১ টাকা ২০ পয়সা বা ৭০ দশমিক ৬০ শতাংশ কমেছে।





মাস্টার অ্যাগ্রোটেকের শেয়ার সর্বোচ্চ ৩৪ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছিল। সর্বশেষ এই শেয়ারের দর নেমে এসেছে ১৪ টাকা ২০ পয়সায়। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ৫৯ দশমিক ৩১ শতাংশ।





ওরিজা অ্যাগ্রোর শেয়ার এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৫ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়েছিল। আর বর্তমানে এই কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ১৫ টাকা ৪০ পয়সায়। এ হিসেবে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ২০ টাকা বা ৫৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ।





মোস্তফা মেটালের শেয়ার সর্বোচ্চ ৩৮ টাকা ৯০ পয়সা দরে লেনদেন হয়েছিল। সর্বশেষ এই শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭ টাকায়। অর্থাৎ এই কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে ২১ টাকা ৯০ পয়সা বা ৫৬ দশমিক ২৯ শতাংশ।





চলতি বছর শেয়ারবাজারে আসা আছিয়া সি ফুডের লেনদেন শুরু হয় ১৮ জুলাই। কোম্পানিটির শেয়ার সর্বোচ্চ ৫৪ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। সর্বশেষ এ শেয়ার লেনদেন হয় ২৬ টাকা ২০ পয়সায়। এ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে ৫১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।





গত এক বছরের মধ্যে বেঙ্গল বিস্কুটের শেয়ারদর সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা ৯০ পয়সা পর্যন্ত ছিল। বর্তমানে এ শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ১০৫ টাকা ৪০ পয়সায়। ফলে এ কোম্পানিটির শেয়ারদর ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা বা ৫০ দশমিক ৯৫ শতাংশ কমেছে।





এপেক্স ওয়েভিংয়ের শেয়ার সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ৫৩ টাকা ৪০ পয়সায়। সর্বশেষ এ শেয়ার লেনদেন হয় ২৬ টাকা ৭০ পয়সায়। এ হিসেবে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ৫০ শতাংশ।





এসএমই মার্কেটের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ও শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ড. মিজানুর রহমান বলেন, এসএমই মার্কেটের বেশকিছু শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়েছে। আমাদের বিনিয়োগকারীরা হয়তো এ বিষয়টি খেয়াল করেননি। বাজারে একটা শেয়ার অতিমূল্যায়িত হলেও কোম্পানির পারফরম্যান্স কিন্তু রাতারাতি অতিমূল্যায়িত হয় না।





এসএমই মার্কেটে ফ্লোর প্রাইস আরোপ কতটা যৌক্তিক হবে তা জানতে চাইলে ড. মিজানুর রহমান বলেন, এই মুহুর্তে এসএমই মার্কেটে ফ্লোর প্রাইস দেওয়া কতটা যৌক্তিক তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় বিএসইসি স্টেকহোল্ডার ও বিশ্লেষকদের মতামতের ভিত্তিতে একটি সমন্বিত সিদ্ধান্তে আসতে পারে।


আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত