খেলাধুলা
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে শ্রীলঙ্কা

বিশ্বকাপের মূল পর্বের দ্বিতীয় দিনে আজ প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে গ্রুপ পর্ব থেকে উঠে আসা দুই দল। সুপার টুয়েলভের তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি হচ্ছে আয়ারল্যান্ডের।
বেলেরিভ ওভালে এই ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবির্নি।
গ্রুপ পর্বে দুটি দলই একটি করে ম্যাচে হেরেছে। শ্রীলঙ্কা বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপ জয় করে এশিয়ার শ্রেষ্ঠ দল হিসেবে আসলেও প্রথম ম্যাচে নামিবিয়ার মুখোমুখি রীতিমত অসহায় হয়ে পরে। সেই ম্যাচে বড় ব্যবধানে হেরে সুপার টুয়েলভে উঠার স্বপ্নে কিছুটা শঙ্কা দেখা দিয়েছিলো।
তবে পরবর্তী দুটো ম্যাচে নেদারল্যান্ডস এবং আরব আমিরাতকে হারিয়ে মূলপর্ব নিশ্চিত করে দাসুন শানাকার দল। অন্যদিকে দুইবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে মূলপর্বে উঠে আসে আয়ারল্যান্ড দল।
আয়ারল্যান্ড একাদশ
পল স্টার্লিং, অ্যান্ড্রু ব্যালবার্নি (অধিনায়ক), মার্ক অ্যাডায়ার, কার্টিস ক্যাম্ফার, গ্যারেথ ডেলানি, জর্জ ডকরেল, জশ লিটল, ব্যারি ম্যাকার্থি, সিমি সিং, হ্যারি টেক্টর, লোরকান টাকার।

শ্রীলঙ্কা একাদশ
কুশল মেন্ডিস (উইকেটরক্ষক), ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, বান্দারা, ভানুকা রাজাপাকসে, চারিথ আশালঙ্কা, দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা, চামিকা করুনারত্নে, বিনুরা ফার্নান্দো, মহেস থিকসানা এবং লাহিরু কুমারা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

খেলাধুলা
ঘরের মাঠে আর্জেন্টিনার কাছে ব্রাজিলের হার

ঘরের মাঠেও দুর্দশা আর কাটানো হলো না ব্রাজিলের। টানা দুই হারের ক্ষত নিয়ে মারাকানায় পা রেখেছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। কিন্তু ঘরের মাঠের ব্যাপক সমর্থনেও বদলালো না ব্রাজিলের গল্পটা। আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীত চলাকালে দুয়ো দিয়ে চাপ বাড়ানোর চেষ্টাও করেছিলেন সেলেসাও সমর্থকরা। তাতে ম্যাচ আধঘণ্টা পরে শুরু হলেও ম্যাচের ভাগ্য বদলায়নি। উল্টো লালকার্ডের সূত্র ধরে ব্রাজিলের উপরেই বেড়েছে চাপ। শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে হারটাই সঙ্গী ব্রাজিলের।
পুরো ম্যাচে গোল হয়েছে একটিই। ৬৩ মিনিটে জিওভানি লো সেলসোর কর্নার থেকে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণী গোল করেন নিকোলাস ওতামেন্ডি। তাতেই নির্ধারিত হয় ব্রাজিলের টানা তৃতীয় হার। আর খেলা গড়ানোর আগে দুই পক্ষের মারামারি, এক লালকার্ড ব্রাজিলের ক্ষতটাই কেবল বাড়িয়েছে।
মারাকানায় ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনার ম্যাচ শুরু হওয়ার সব আনুষ্ঠানিকতা শেষেই শুরু হয় প্রথম ঝামেলা। ব্রাজিলের মারাকানায় উপস্থিত আর্জেন্টিনার সমর্থকদের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে ব্রাজিলের সমর্থকরা। দ্রুতই সেখানে ছুটে যান স্থানীয় পুলিশের সদস্যরা। ঘটনার জের ধরে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি পুরো দল নিয়ে চলে যান ড্রেসিংরুমে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান ম্যাচের লাইভ বিবরণীতে জানায়, ‘আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীত চলাকালে ব্রাজিলের সমর্থকেরা দুয়ো দিতে শুরু করলে ঝামেলার শুরু হয়। আর্জেন্টিনা দলের সদস্যরা এবং ব্রাজিলের অধিনায়ক মার্কিনিওস দর্শকদের শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। এরপর মেসির সঙ্গে আর্জেন্টিনার বাকি খেলোয়াড়রা মাঠ ছেড়ে চলে যান।
ম্যাচের সময়েও ছিল এই উত্তেজনার রেশ। শুরুর ১৫ মিনিট যেন শারীরিক ভাষা প্রয়োগেই ব্যস্ত ছিলেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। এরমাঝে ব্রাজিলের খেলোয়াড়রাই অবশ্য চড়াও হয়েছেন বেশি। ম্যাচের ১৫ মিনিট না গড়াতেই কড়া ট্যাকল করে কার্ড দেখেন ব্রাজিলের গ্যাব্রিয়েল জেসুস এবং রাফিনহা। ৩৪ মিনিটে আবার কার্ড দেখেন ব্রাজিলের কার্লোস অগাস্টো।

ম্যাচের সেরা সুযোগ এসেছে একেবারে শেষের আগে। ব্রাজিলের গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি এদিন শুরু থেকেই ছিলেন দুর্দান্ত। ৪৪তম মিনিটে তিনিই এগিয়ে দিতে পারতেন দলকে। দারুণ এক হাফভলিতে বল জালেই জড়াতে পারতেন। তবে গোললাইন থেকে তা ক্লিয়ার করে দলকে বিপদমুক্ত রাখেন আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার কুটি রোমেরো।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটা দুর্দান্ত ছিল ব্রাজিলেরই। এমারসন রয়্যালের ক্রস আর্জেন্টিনার রক্ষণে কাঁপন ধরিয়েছিল বটে। তবে গ্যাব্রিয়েল জেসুস ছিলেন অনেকটা দূরে। বিপদটাও তাই আর বাড়েনি। যদিও খানিক পরেই আবার ফিরে আসে ব্রাজিল। এবার হুমকির নাম গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি। গ্যাব্রিয়েল জেসুস একাই গিয়েছিলেন বক্সে। জটলার মাঝ থেকে বল পেয়ে যান মার্টিনেলি। তবে দুর্বল শটে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমি মার্টিনেজকে পরাস্ত করা হয়নি তার।
বরং খেলার ধারার বিপরীতে ৬৩ মিনিটে প্রথম গোল পায় আর্জেন্টিনা। নাহুয়েল মলিনার ক্রস ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার রয়্যালের পায়ে লেগে চলে যায় গোললাইনের বাইরে। এরপরই কর্নার থেকে লিড নেয় সফরকারী দলটি।
জিওভানি লো সেলসোর কর্নার থেকে লাফিয়ে হেড করেন নিকোলাস ওতামেন্ডি। বল ঠেকাতে ব্যর্থ অ্যালিসন। মারাকানার মাঠে তখন পুরোপুরি নিঃস্তব্ধতা। গোল খেয়ে আর বসে থাকেনি ব্রাজিল। আক্রমণের ধার আরও বাড়ানোর তাগিদ ছিল কোচ দিনিজের। মরিয়া হয়েই ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েলকে তুলে নামানো হয়েছিল জোয়েলিংটনকে। কিন্তু তাতে লাভের লাভ হয়নি কিছুই।
বরং ম্যাচের ৮১তম মিনিটে রদ্রিগো ডি পলকে মুখে আঘাত করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন ব্রাজিলের এই ফরোয়ার্ড। শেষের সময়টা ব্রাজিলকে খেলতে হয়েছে ১০ জনের দল নিয়ে। শেষের এমন দৃশ্যে আরও খানিক অপমানও যুক্ত হয়েছে ব্রাজিলের জন্য। মাঠে হতশ্রী পারফর্ম্যান্সে ক্ষুব্ধ হয়ে ম্যাচ শেষের আগেই মাঠ ছেড়ে চলে যান ব্রাজিলের সমর্থকরা। মারাকানার মাঠে তাই ব্রাজিলের শেষটা হলো আরও বেশি তিক্ত।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
ফের জাতীয় দলের ম্যানেজার হলেন নাফিস ইকবাল

পুনরায় জাতীয় দলের ম্যানেজার পদে ফিরছেন নাফিস ইকবাল। বিশ্বকাপ শুরুর আগমুহূর্তে বাংলাদেশ দলের টিম ম্যানেজারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল জাতীয় দলের সাবেক এই ক্রিকেটারকে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে আবারও তাকে দেখা যাবে বরাবরের মতো টাইগারদের টিম ম্যানেজার হিসেবে।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন নাফিস নিজেই। জানিয়েছেন, আপাতত ঘরের মাঠে এই সিরিজের জন্যই তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সদ্য সমাপ্ত ওয়ানডে বিশ্বকাপের স্কোয়াড ঘোষণা নিয়ে বরাবরের মতোই নানা নাটক ছিল বিসিবিতে। সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালকে ছাড়াই দল ঘোষণা করা হয়। একই দিনে অব্যাহতি দেওয়া হয় টিম ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা সাবেক ক্রিকেটার নাফিস ইকবালকে। তামিম ইকবালের বড় ভাই এবং বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের অন্যতম নায়ক নাফিস ইকবাল।
নাফিস ইকবালের জায়গায় ভারত বিশ্বকাপে রাবিদ ইমাম বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মিডিয়া ম্যানেজারের দায়িত্বে পালন করে। বিশ্বকাপে মিডিয়া ম্যানেজারের পাশাপাশি টিম ম্যানেজারের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
শিরোপা জিতে কত টাকা পেল অস্ট্রেলিয়া?

ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ফাইনাল দিয়ে দেড় মাসের ক্রিকেটযজ্ঞ শেষে গতকাল ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের পর্দা নেমেছে। ২৪১ রানের টার্গেট তাড়ায় ৪২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের দাপুটে জয়ে বিশ্বকাপের ষষ্ঠ শিরোপা নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া।
এবারের আসরে চ্যাম্পিয়ন দল অস্ট্রেলিয়ার হাতে উঠেছে ১১ কেজি ওজনের সোনালি বিশ্বকাপ ট্রফির সঙ্গে বিশাল আর্থিক পুরস্কার। বিশ্বকাপজয়ী দলকে এবার আইসিসি আর্থিক পুরস্কার হিসাবে দিয়েছে ৪০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
এ ছাড়া ৬০ সেন্টিমিটার উচ্চতার যে ট্রফিটি দেওয়া হবে চ্যাম্পিয়ন দলকে, তার ওজন ১১ কেজি। ট্রফিতে একটি গ্লোব রয়েছে, যা ক্রিকেট বলের প্রতিনিধিত্ব করে। এ ছাড়া ট্রফিতে তিনটি করে ৯টি কলাম রয়েছে। এই কলামগুলো ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের প্রতিনিধিত্ব করে। ট্রফিটির ডিজাইন করেন ব্রিটিশ পল মার্সডেন। আর রানার্সআপ দল পেয়েছে ২০ লাখ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: ভারতকে কাঁদিয়ে ষষ্ঠবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া
এ ছাড়া সেমিফাইনালে হারা দুই দল দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ড পাচ্ছে ৮ লাখ ডলার করে। প্রথম রাউন্ডে আটকে যাওয়া ছয় দল পেয়েছে ১ লাখ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি)। তারা হলো— পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও নেদারল্যান্ডস। এ ছাড়া প্রথম পর্বে জেতা প্রতিটি ম্যাচের জন্য দলগুলোর পকেটে ঢুকেছে ৪০ হাজার ডলার করে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৪ লাখ টাকার বেশি)।

উল্লেখ্য, শিরোপার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার ধারেকাছেও নেই কেউ। অজি বাহিনীর যেখানে ট্রফি ৬টি, আর কোনো দলের নেই তিনটি শিরোপাও। টানা দুই হারে বিশ্বকাপ শুরু করা অস্ট্রেলিয়া দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে টানা নবম জয়ে ২০১৫ সালের পর সোনালী শিরোপা ফের পুনরুদ্ধার করল।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
ভারতকে কাঁদিয়ে ষষ্ঠবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

এই ভারত অজেয়, টানা দশ ম্যাচ জিতে ফাইনালে। ভারতের সামনে দাঁড়াতেই পারছে না কোনো দল। খেলাও আবার ঘরের মাঠে। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ১ লাখ ৩২ হাজার দর্শকের সামনে ভারতই ফেবারিট, ম্যাচ শুরুর আগে ছিল এই আলোচনা।
তবে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বলেছিলেন, ফুল প্যাকড স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে দিতে চান তারা। সেটা শুধু কথায় না, করে দেখালেন কামিন্সরা। অস্ট্রেলিয়া যখন বিজয়-উল্লাস করছে, পুরো স্টেডিয়ামে তখন পিনপতন নীরবতা।
প্রায় অজেয় হয়ে উঠা ভারত ফাইনালে এসেই প্রথম হার দেখলো, সেটাই হলো শেষ। বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের কাঁদিয়ে ওয়ানডেতে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলো অস্ট্রেলিয়া।
আহমেদাবাদে আজ (রোববার) বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতকে উড়িয়ে দিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্যাট কামিন্সের অস্ট্রেলিয়া। একতরফা খেলে তারা ম্যাচটি জিতেছে ৬ উইকেট আর ৪২ বল হাতে রেখে।
বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য খুব বড় ছিল না, ২৪১ রানের। তবে ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়েছিল কামিন্সের দল। মোহাম্মদ শামি-জাসপ্রিত বুমরাহদের বোলিং তোপে ৪৭ রান তুলতেই তারা হারিয়ে বসে ৩ উইকেট।

সেখান থেকে ট্রাভিস হেড আর মার্নাস লাবুশেন ২১৫ বলে ১৯২ রানের জুটিতে ম্যাচ বের করে নিয়ে আসেন। জয় থেকে মাত্র ২ রান দূরে থাকতে মোহাম্মদ সিরাজের বলে আউট হন হেড। ১২০ বলে ১৩৭ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংসে ১৫টি চার আর ৪টি ছক্কা হাঁকান বাঁহাতি এই ব্যাটার।
রান তাড়ায় দলীয় ১৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ৩ বলে ৭ করে মোহাম্মদ শামির বলে খোঁচা দিতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ হন ডেভিড ওয়ার্নার। ১৫ বলে ১৫ করে মিচেল মার্শ হন জাসপ্রিত বুমরাহর শিকার। উইকেটরক্ষক নেন ক্যাচ।
এরপর মাত্র ৪ রান করে স্টিভেন স্মিথও বুমরাহর বলে এলবিডব্লিউ হলে চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। যদিও স্মিথ আউট ছিলেন না। বল বাইরে পিচ করেছিল। কিন্তু আম্পায়ার আউট দিলে আর রিভিউ নেননি স্মিথ।
এর আগে বিরাট কোহলি আর লোকেশ রাহুলের লড়াকু ফিফটির পরও পুরো ৫০ ওভার খেললেও ২৪০ রানে গুটিয়ে গেছে ভারতের ইনিংস।
এবারের বিশ্বকাপে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা মানেই ভারতের ঝোড়ো সূচনা। ব্যত্যয় ঘটেনি ফাইনালেও। শুরুতে ওপেনার শুভমান গিলের (৭ বলে ৪) উইকেট হারিয়ে ফেললেও ঝোড়ো গতিতে রান তুলেছে ভারত।
রোহিত মারকুটে ভঙ্গিমায় এগিয়ে যাচ্ছিলেন। ছিলেন হাফসেঞ্চুরির দোরগোড়ায়। তবে ৩১ বলে ৪৭ করার পর গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে ট্রাভিস হেডের দুর্দান্ত এক ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় ভারতীয় অধিনায়ককে। এরপরই ভারতকে চেপে ধরে অস্ট্রেলিয়া।
১০ ওভারে ২ উইকেটে ৮০ রান ছিল। এরপর টানা ১৬ ওভার কোনো বাউন্ডারি পায়নি ভারত। অবশেষে ২৭তম ওভারে এসে সেই বাউন্ডারিখরা কাটান লোকেশ রাহুল।
এর আগে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে টস জিতে বোলিং বেছে নেন অসি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। দলীয় ৩০ রানের মাথায় মিচেল স্টার্ক ফেরান শুভমান গিলকে (৭ বলে ৪)। এরপর কামিন্স দ্রুতই বোলিংয়ে নিয়ে আসেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে। তিনি এসেই সাফল্য উপহার দেন অস্ট্রেলিয়াকে। নিজের দ্বিতীয় এবং দলের ১০ম ওভারেই দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন ম্যাক্সওয়েল। সাজঘরে ফেরান রোহিত শর্মাকে।
ওভারের চতুর্থ বলে ম্যাক্সওয়েলকে ভালোভাবে খেলতে পারেননি রোহিত। শট খেলতে গেলেন তিনি। কিন্তু বল ব্যাটের কানায় লেগে উঠে যায় অফসাইডে। ট্রাভিস হেড কভার অঞ্চল থেকে পেছনে গিয়ে অসাধারণ একটি ক্যাচ ধরলেন। আউট হয়ে গেলেন রোহিত শর্মা। ৩১ বলে ৪৭ রান করলেন তিনি। দলীয় ৭৬ রানের মাথায় পড়লো দ্বিতীয় উইকেট।
এরপর ব্যাট করতে নামেন শ্রেয়াস আয়ার। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। কিন্তু একটি বাউন্ডারি মেরে তিনিও ফিরে গেলেন। প্যাট কামিন্সের বলে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন আয়ার। ৮১ রানের মাথায় পড়ে তৃতীয় উইকেট।
৮১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর বিরাট কোহলি আর লোকেশ রাহুল খোলসে ঢুকে পড়েন। দলকে এগিয়ে নিতে দাঁতে দাঁত চেপে ক্রিজে পড়ে থাকার চেষ্টা করেন তারা। চতুর্থ উইকেটে ১০৯ বল খেলে তারা ধীরগতিতে যোগ করেন ৬৭ রান।
অবশেষে এই জুটিটি ভেঙে দেন প্যাট কামিন্স। ভারতীয় দলের ব্যাটিং ভরসা বিরাট কোহলি তার দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ইনসাইডেজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন। ৬৩ বলে ৪ বাউন্ডারিতে কোহলির দায়িত্বশীল ইনিংসটি ছিল ৫৪ রানের।
রবীন্দ্র জাদেজা সুবিধা করতে পারেননি। ২২ বলে ৯ রান করে হ্যাজেলউডের বলে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন তিনি। ১৭৮ রানে ৫ উইকেট হারায় ভারত।
সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছেন লোকেশ রাহুল। বেশ ধীরগতিতে ব্যাটিং করেছেন তিনি। অবশেষে ধীরগতির রাহুলকে সাজঘরের পথ দেখান মিচেল স্টার্ক।
৬৬ রান করে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রাহুল। ১০৭ বলের ইনিংসে মাত্র একটি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। এরপর মোহাম্মদ শামিকেও (৬) সাজঘরে ফেরান স্টার্ক। ২১১ রানে ৭ উইকেট হারায় ভারত।
এরপর আর বেশিদূর এগোতে পারেনি ভারত। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার সূর্যকুমারের ওপর ভরসা ছিল। তিনিও ২৮ বলে ১৮ রান করে সাজঘরে ফিরে যান।
ইনিংসের শেষ বলে মোহাম্মদ সিরাজ দুই নিতে গেলে রানআউটের কবলে পড়েন কুলদ্বীপ যাদব। তাতেই ২৪০ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত।
অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক ৩টি, প্যাট কামিন্স আর জস হ্যাজেলউড নেন ২টি করে উইকেট।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
বিশ্বকাপের শেষ হাসির অপেক্ষায় ভারত-অস্ট্রেলিয়া

১০ দল থেকে এখন বাকি দুই দল। আজ আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পর্দা নামছে প্রায় দেড় মাসব্যাপী চলা ৪৮ ম্যাচের বিশ্বকাপের। এবার একটি দল হাসবে শেষ হাসি। কোন সে দল-ভারত নাকি অস্ট্রেলিয়া?
ঘরের মাঠে খেলা। ভারত এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে একমাত্র অপরাজিত দল। তাই ভারতকেই ফাইনালে ফেবারিট মানছেন সবাই। কিন্তু টানা ৭ ম্যাচ জিতে ফাইনালে আসা অস্ট্রেলিয়াই কি ছেড়ে কথা বলবে? ওয়ানডে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটি যে বড় টুর্নামেন্টে সবসময়ই ভয়ংকর!
পরিসংখ্যানে ফাইনালে এগিয়ে কোন দল
ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডেতে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে ১৫০ বার। এর মধ্যে জয়ের হিসাবে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। তারা জিতেছে ৮৩টি ম্যাচ, ৫৭ ম্যাচে জয় ভারতের। ১০টি ম্যাচে কোনো ফল হয়নি।
সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় কিছুটা এগিয়ে ভারত। সবশেষ পাঁচ ম্যাচে মুখোমুখিতে ভারত জিতেছে ৩টিতে, অস্ট্রেলিয়ার জয় দুবার।
সবশেষ পাঁচ ম্যাচে দুই দলের মধ্যে সবচেয়ে বড় স্কোর ভারতের (৩৯৯) আর সর্বনিম্ন স্কোর অস্ট্রেলিয়ার (১৯৯)।

এবারের বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বড় জয় পেয়েছিল ভারত। চেন্নাইয়ে অসিদের ১৯৯ রানে গুটিয়ে দিয়ে ভারত জিতেছিল ৬ উইকেট আর ৫২ বল হাতে রেখে।
তবে বিশ্বকাপের আগে ভারতের মাঠে ঠিক আগের ম্যাচেই জয় পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। রাজকোটে ৩৫২ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে ভারতকে ২৮৬ রানে গুটিয়ে দেয় অসিরা, জয় পায় ৬৬ রানে।
অর্থসংবাদ/এমআই