খেলাধুলা
স্বাগতিকদের পাহাড়সম টার্গেট ছুড়ে দিলো কিউইরা

প্রথম ম্যাচেই ব্যাট হাতে জ্বলক দেখালেন নিউজিল্যান্ড ব্যাটাররা। শুরু থেকে শেষ, পুরো ম্যাচ জুড়েই মারমুখি ছিলেন কিউইরা। অস্ট্রেলিয়ার বোলিংকে দুমড়ে মুচড়ে ৩ উইকেটে ২০০ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়লো কিউইরা। অর্থাৎ সুপার টুয়েলভপর্বের প্রথম ম্যাচে জিততে হলে অস্ট্রেলিয়াকে করতে হবে ২০১ রান।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। ব্যাটিংয়ে নেমে বিধ্বংসী চেহারায় হাজির হন ফিন অ্যালেন। একের পর এক বল সীমানাছাড়া করতে থাকেন। ছিল ফিফটির সুযোগও।
কিন্তু পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই জশ হ্যাজেলউডকে তেড়েফুড়ে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান ফিন। ১৬ বলে তার ৪২ রানের ক্যামিও ইনিংসে ছিল ৫টি চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কার মার। ডেভন কনওয়ের সঙ্গে ফিনের উদ্বোধনী জুটিটি ছিল ২৫ বলে ৫৬ রানের।
ফিন ফেরার পর অবশ্য রানের গতি কিছুটা কমে যায় কিউইদের। তারপরও পাওয়ার প্লেতে সবমিলিয়ে বেশ ভালো অবস্থানে ছিল নিউজিল্যান্ড। ৬ ওভারে ১ উইকেটে তোলে ৬৫ রান।
এরপর আরেকটি বড় জুটি গড়েন ডেভন কনওয়ে আর কেন উইলিয়ামসন। ছক্কা মেরে ৩৬ বলে ফিফটি পূরণ করেন কনওয়ে। উইকেটের জন্য হাহাকার ক্রমেই বাড়ছিল অস্ট্রেলিয়ার।

অবশেষে ১৩তম ওভারের শেষ বলে জুটিটি ভাঙেন অ্যাডাম জাম্পা। অসি লেগস্পিনারকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বল মিস করেন উইলিয়ামসন। আম্পায়ার আউট দিলে রিভিউ নিয়েছিলেন কিউই অধিনায়ক। তবে কাজ হয়নি। ২৩ বলে ২৩ রান করে ফেরেন উইলিয়ামসন। ভাঙে ৫৩ বলে ৬৯ রানের জুটি।
সুবিধা করতে পারেননি গ্লেন ফিলিপস। জশ হ্যাজেলউডকে খেলতে গিয়ে সোজা আকাশে বল তুলে দেন তিনি (১০ বলে ১২)। তবে ডেভন কনওয়ে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন।
তার আক্ষেপ থাকতে পারে একটাই, সেঞ্চুরিটা পেলেন না। ৫৮ বলে ৭ চার আর ২ ছক্কায় ৯২ রানে অপরাজিত থাকেন কনওয়ে। শেষ বলে ছক্কা মেরে দলের ২০০ পূরণ করে দেওয়া জিমি নিশাম ১৩ বলে করেন হার না মানা ২৬।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

খেলাধুলা
ছয় বছরের জন্য নিষিদ্ধ ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার

দুর্নীতিবিরোধী চারটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগে আগেই দোষী প্রমাণিত হয়েছেন মারলন স্যামুয়েলস। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষে সাবেক এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ গঠন করেছিল আইসিসি।
এবার সেই অপরাধের শাস্তির মাত্রাও জানা গেল। সব ধরনের ক্রিকেট থেকে তাকে ছয় বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। এতে স্যামুয়েলসের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতিই ঘটল বলা চলে।
২০১৯ সালে আবুধাবি টি-টোয়েন্টি লিগে আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী নিয়মভঙ্গ করার অভিযোগ আনা হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২০১২ ও ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানো অন্যতম এই নায়কের বিরুদ্ধে। স্যামুয়েলসের বিরুদ্ধে যে চারটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছিল, ট্রাইব্যুনালে শুনানির পর তার সব গুলোই প্রমাণিত হয়েছে। ফলে দ্বিতীয়বারের মতো দুর্নীতির দায়ে শাস্তি পেয়েছেন স্যামুয়েলস।
আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী কোডের ২.৪.২, ২.৪.৩, ২.৪.৬ ও ২.৪.৭ নম্বর ধারা ভঙ্গ করেছেন স্যামুয়েলস। ২০১৯ সালে আবুধাবি টি-টেন লিগে কর্ণাটক টাস্কার্সে ছিলেন স্যামুয়েলস। যদিও কোনো ম্যাচ খেলেননি তিনি।
দুর্নীতির দায়ে শাস্তি পাওয়া স্যামুয়েলসের জন্য অবশ্য নতুন কিছু নয়। ২০০৮ সালে একই অপরাধের দায়ে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের ওয়ানডে ম্যাচের তথ্য বাইরে পাচার করতে গিয়ে ভারতীয় পুলিশের কাছে ধরা পড়েন তিনি।

যদিও তদন্ত চলাকালে স্যামুয়েলস বিশ্বকাপ খেলেছিলেন। পরবর্তীতে তার অপরাধ প্রমাণিত হয়। এবার আরও বড় শাস্তি পেলেন সাবেক এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান তারকা ক্রিকেটার।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
ঘরের মাঠে আর্জেন্টিনার কাছে ব্রাজিলের হার

ঘরের মাঠেও দুর্দশা আর কাটানো হলো না ব্রাজিলের। টানা দুই হারের ক্ষত নিয়ে মারাকানায় পা রেখেছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। কিন্তু ঘরের মাঠের ব্যাপক সমর্থনেও বদলালো না ব্রাজিলের গল্পটা। আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীত চলাকালে দুয়ো দিয়ে চাপ বাড়ানোর চেষ্টাও করেছিলেন সেলেসাও সমর্থকরা। তাতে ম্যাচ আধঘণ্টা পরে শুরু হলেও ম্যাচের ভাগ্য বদলায়নি। উল্টো লালকার্ডের সূত্র ধরে ব্রাজিলের উপরেই বেড়েছে চাপ। শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে হারটাই সঙ্গী ব্রাজিলের।
পুরো ম্যাচে গোল হয়েছে একটিই। ৬৩ মিনিটে জিওভানি লো সেলসোর কর্নার থেকে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণী গোল করেন নিকোলাস ওতামেন্ডি। তাতেই নির্ধারিত হয় ব্রাজিলের টানা তৃতীয় হার। আর খেলা গড়ানোর আগে দুই পক্ষের মারামারি, এক লালকার্ড ব্রাজিলের ক্ষতটাই কেবল বাড়িয়েছে।
মারাকানায় ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনার ম্যাচ শুরু হওয়ার সব আনুষ্ঠানিকতা শেষেই শুরু হয় প্রথম ঝামেলা। ব্রাজিলের মারাকানায় উপস্থিত আর্জেন্টিনার সমর্থকদের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে ব্রাজিলের সমর্থকরা। দ্রুতই সেখানে ছুটে যান স্থানীয় পুলিশের সদস্যরা। ঘটনার জের ধরে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি পুরো দল নিয়ে চলে যান ড্রেসিংরুমে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান ম্যাচের লাইভ বিবরণীতে জানায়, ‘আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীত চলাকালে ব্রাজিলের সমর্থকেরা দুয়ো দিতে শুরু করলে ঝামেলার শুরু হয়। আর্জেন্টিনা দলের সদস্যরা এবং ব্রাজিলের অধিনায়ক মার্কিনিওস দর্শকদের শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। এরপর মেসির সঙ্গে আর্জেন্টিনার বাকি খেলোয়াড়রা মাঠ ছেড়ে চলে যান।
ম্যাচের সময়েও ছিল এই উত্তেজনার রেশ। শুরুর ১৫ মিনিট যেন শারীরিক ভাষা প্রয়োগেই ব্যস্ত ছিলেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। এরমাঝে ব্রাজিলের খেলোয়াড়রাই অবশ্য চড়াও হয়েছেন বেশি। ম্যাচের ১৫ মিনিট না গড়াতেই কড়া ট্যাকল করে কার্ড দেখেন ব্রাজিলের গ্যাব্রিয়েল জেসুস এবং রাফিনহা। ৩৪ মিনিটে আবার কার্ড দেখেন ব্রাজিলের কার্লোস অগাস্টো।

ম্যাচের সেরা সুযোগ এসেছে একেবারে শেষের আগে। ব্রাজিলের গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি এদিন শুরু থেকেই ছিলেন দুর্দান্ত। ৪৪তম মিনিটে তিনিই এগিয়ে দিতে পারতেন দলকে। দারুণ এক হাফভলিতে বল জালেই জড়াতে পারতেন। তবে গোললাইন থেকে তা ক্লিয়ার করে দলকে বিপদমুক্ত রাখেন আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার কুটি রোমেরো।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটা দুর্দান্ত ছিল ব্রাজিলেরই। এমারসন রয়্যালের ক্রস আর্জেন্টিনার রক্ষণে কাঁপন ধরিয়েছিল বটে। তবে গ্যাব্রিয়েল জেসুস ছিলেন অনেকটা দূরে। বিপদটাও তাই আর বাড়েনি। যদিও খানিক পরেই আবার ফিরে আসে ব্রাজিল। এবার হুমকির নাম গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি। গ্যাব্রিয়েল জেসুস একাই গিয়েছিলেন বক্সে। জটলার মাঝ থেকে বল পেয়ে যান মার্টিনেলি। তবে দুর্বল শটে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমি মার্টিনেজকে পরাস্ত করা হয়নি তার।
বরং খেলার ধারার বিপরীতে ৬৩ মিনিটে প্রথম গোল পায় আর্জেন্টিনা। নাহুয়েল মলিনার ক্রস ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার রয়্যালের পায়ে লেগে চলে যায় গোললাইনের বাইরে। এরপরই কর্নার থেকে লিড নেয় সফরকারী দলটি।
জিওভানি লো সেলসোর কর্নার থেকে লাফিয়ে হেড করেন নিকোলাস ওতামেন্ডি। বল ঠেকাতে ব্যর্থ অ্যালিসন। মারাকানার মাঠে তখন পুরোপুরি নিঃস্তব্ধতা। গোল খেয়ে আর বসে থাকেনি ব্রাজিল। আক্রমণের ধার আরও বাড়ানোর তাগিদ ছিল কোচ দিনিজের। মরিয়া হয়েই ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েলকে তুলে নামানো হয়েছিল জোয়েলিংটনকে। কিন্তু তাতে লাভের লাভ হয়নি কিছুই।
বরং ম্যাচের ৮১তম মিনিটে রদ্রিগো ডি পলকে মুখে আঘাত করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন ব্রাজিলের এই ফরোয়ার্ড। শেষের সময়টা ব্রাজিলকে খেলতে হয়েছে ১০ জনের দল নিয়ে। শেষের এমন দৃশ্যে আরও খানিক অপমানও যুক্ত হয়েছে ব্রাজিলের জন্য। মাঠে হতশ্রী পারফর্ম্যান্সে ক্ষুব্ধ হয়ে ম্যাচ শেষের আগেই মাঠ ছেড়ে চলে যান ব্রাজিলের সমর্থকরা। মারাকানার মাঠে তাই ব্রাজিলের শেষটা হলো আরও বেশি তিক্ত।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
ফের জাতীয় দলের ম্যানেজার হলেন নাফিস ইকবাল

পুনরায় জাতীয় দলের ম্যানেজার পদে ফিরছেন নাফিস ইকবাল। বিশ্বকাপ শুরুর আগমুহূর্তে বাংলাদেশ দলের টিম ম্যানেজারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল জাতীয় দলের সাবেক এই ক্রিকেটারকে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে আবারও তাকে দেখা যাবে বরাবরের মতো টাইগারদের টিম ম্যানেজার হিসেবে।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন নাফিস নিজেই। জানিয়েছেন, আপাতত ঘরের মাঠে এই সিরিজের জন্যই তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সদ্য সমাপ্ত ওয়ানডে বিশ্বকাপের স্কোয়াড ঘোষণা নিয়ে বরাবরের মতোই নানা নাটক ছিল বিসিবিতে। সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালকে ছাড়াই দল ঘোষণা করা হয়। একই দিনে অব্যাহতি দেওয়া হয় টিম ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা সাবেক ক্রিকেটার নাফিস ইকবালকে। তামিম ইকবালের বড় ভাই এবং বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের অন্যতম নায়ক নাফিস ইকবাল।
নাফিস ইকবালের জায়গায় ভারত বিশ্বকাপে রাবিদ ইমাম বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মিডিয়া ম্যানেজারের দায়িত্বে পালন করে। বিশ্বকাপে মিডিয়া ম্যানেজারের পাশাপাশি টিম ম্যানেজারের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
শিরোপা জিতে কত টাকা পেল অস্ট্রেলিয়া?

ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ফাইনাল দিয়ে দেড় মাসের ক্রিকেটযজ্ঞ শেষে গতকাল ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের পর্দা নেমেছে। ২৪১ রানের টার্গেট তাড়ায় ৪২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের দাপুটে জয়ে বিশ্বকাপের ষষ্ঠ শিরোপা নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া।
এবারের আসরে চ্যাম্পিয়ন দল অস্ট্রেলিয়ার হাতে উঠেছে ১১ কেজি ওজনের সোনালি বিশ্বকাপ ট্রফির সঙ্গে বিশাল আর্থিক পুরস্কার। বিশ্বকাপজয়ী দলকে এবার আইসিসি আর্থিক পুরস্কার হিসাবে দিয়েছে ৪০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
এ ছাড়া ৬০ সেন্টিমিটার উচ্চতার যে ট্রফিটি দেওয়া হবে চ্যাম্পিয়ন দলকে, তার ওজন ১১ কেজি। ট্রফিতে একটি গ্লোব রয়েছে, যা ক্রিকেট বলের প্রতিনিধিত্ব করে। এ ছাড়া ট্রফিতে তিনটি করে ৯টি কলাম রয়েছে। এই কলামগুলো ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের প্রতিনিধিত্ব করে। ট্রফিটির ডিজাইন করেন ব্রিটিশ পল মার্সডেন। আর রানার্সআপ দল পেয়েছে ২০ লাখ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: ভারতকে কাঁদিয়ে ষষ্ঠবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া
এ ছাড়া সেমিফাইনালে হারা দুই দল দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ড পাচ্ছে ৮ লাখ ডলার করে। প্রথম রাউন্ডে আটকে যাওয়া ছয় দল পেয়েছে ১ লাখ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি)। তারা হলো— পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও নেদারল্যান্ডস। এ ছাড়া প্রথম পর্বে জেতা প্রতিটি ম্যাচের জন্য দলগুলোর পকেটে ঢুকেছে ৪০ হাজার ডলার করে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৪ লাখ টাকার বেশি)।

উল্লেখ্য, শিরোপার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার ধারেকাছেও নেই কেউ। অজি বাহিনীর যেখানে ট্রফি ৬টি, আর কোনো দলের নেই তিনটি শিরোপাও। টানা দুই হারে বিশ্বকাপ শুরু করা অস্ট্রেলিয়া দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে টানা নবম জয়ে ২০১৫ সালের পর সোনালী শিরোপা ফের পুনরুদ্ধার করল।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
খেলাধুলা
ভারতকে কাঁদিয়ে ষষ্ঠবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

এই ভারত অজেয়, টানা দশ ম্যাচ জিতে ফাইনালে। ভারতের সামনে দাঁড়াতেই পারছে না কোনো দল। খেলাও আবার ঘরের মাঠে। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ১ লাখ ৩২ হাজার দর্শকের সামনে ভারতই ফেবারিট, ম্যাচ শুরুর আগে ছিল এই আলোচনা।
তবে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বলেছিলেন, ফুল প্যাকড স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে দিতে চান তারা। সেটা শুধু কথায় না, করে দেখালেন কামিন্সরা। অস্ট্রেলিয়া যখন বিজয়-উল্লাস করছে, পুরো স্টেডিয়ামে তখন পিনপতন নীরবতা।
প্রায় অজেয় হয়ে উঠা ভারত ফাইনালে এসেই প্রথম হার দেখলো, সেটাই হলো শেষ। বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের কাঁদিয়ে ওয়ানডেতে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলো অস্ট্রেলিয়া।
আহমেদাবাদে আজ (রোববার) বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতকে উড়িয়ে দিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্যাট কামিন্সের অস্ট্রেলিয়া। একতরফা খেলে তারা ম্যাচটি জিতেছে ৬ উইকেট আর ৪২ বল হাতে রেখে।
বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য খুব বড় ছিল না, ২৪১ রানের। তবে ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়েছিল কামিন্সের দল। মোহাম্মদ শামি-জাসপ্রিত বুমরাহদের বোলিং তোপে ৪৭ রান তুলতেই তারা হারিয়ে বসে ৩ উইকেট।

সেখান থেকে ট্রাভিস হেড আর মার্নাস লাবুশেন ২১৫ বলে ১৯২ রানের জুটিতে ম্যাচ বের করে নিয়ে আসেন। জয় থেকে মাত্র ২ রান দূরে থাকতে মোহাম্মদ সিরাজের বলে আউট হন হেড। ১২০ বলে ১৩৭ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংসে ১৫টি চার আর ৪টি ছক্কা হাঁকান বাঁহাতি এই ব্যাটার।
রান তাড়ায় দলীয় ১৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ৩ বলে ৭ করে মোহাম্মদ শামির বলে খোঁচা দিতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ হন ডেভিড ওয়ার্নার। ১৫ বলে ১৫ করে মিচেল মার্শ হন জাসপ্রিত বুমরাহর শিকার। উইকেটরক্ষক নেন ক্যাচ।
এরপর মাত্র ৪ রান করে স্টিভেন স্মিথও বুমরাহর বলে এলবিডব্লিউ হলে চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। যদিও স্মিথ আউট ছিলেন না। বল বাইরে পিচ করেছিল। কিন্তু আম্পায়ার আউট দিলে আর রিভিউ নেননি স্মিথ।
এর আগে বিরাট কোহলি আর লোকেশ রাহুলের লড়াকু ফিফটির পরও পুরো ৫০ ওভার খেললেও ২৪০ রানে গুটিয়ে গেছে ভারতের ইনিংস।
এবারের বিশ্বকাপে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা মানেই ভারতের ঝোড়ো সূচনা। ব্যত্যয় ঘটেনি ফাইনালেও। শুরুতে ওপেনার শুভমান গিলের (৭ বলে ৪) উইকেট হারিয়ে ফেললেও ঝোড়ো গতিতে রান তুলেছে ভারত।
রোহিত মারকুটে ভঙ্গিমায় এগিয়ে যাচ্ছিলেন। ছিলেন হাফসেঞ্চুরির দোরগোড়ায়। তবে ৩১ বলে ৪৭ করার পর গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে ট্রাভিস হেডের দুর্দান্ত এক ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় ভারতীয় অধিনায়ককে। এরপরই ভারতকে চেপে ধরে অস্ট্রেলিয়া।
১০ ওভারে ২ উইকেটে ৮০ রান ছিল। এরপর টানা ১৬ ওভার কোনো বাউন্ডারি পায়নি ভারত। অবশেষে ২৭তম ওভারে এসে সেই বাউন্ডারিখরা কাটান লোকেশ রাহুল।
এর আগে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে টস জিতে বোলিং বেছে নেন অসি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। দলীয় ৩০ রানের মাথায় মিচেল স্টার্ক ফেরান শুভমান গিলকে (৭ বলে ৪)। এরপর কামিন্স দ্রুতই বোলিংয়ে নিয়ে আসেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে। তিনি এসেই সাফল্য উপহার দেন অস্ট্রেলিয়াকে। নিজের দ্বিতীয় এবং দলের ১০ম ওভারেই দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন ম্যাক্সওয়েল। সাজঘরে ফেরান রোহিত শর্মাকে।
ওভারের চতুর্থ বলে ম্যাক্সওয়েলকে ভালোভাবে খেলতে পারেননি রোহিত। শট খেলতে গেলেন তিনি। কিন্তু বল ব্যাটের কানায় লেগে উঠে যায় অফসাইডে। ট্রাভিস হেড কভার অঞ্চল থেকে পেছনে গিয়ে অসাধারণ একটি ক্যাচ ধরলেন। আউট হয়ে গেলেন রোহিত শর্মা। ৩১ বলে ৪৭ রান করলেন তিনি। দলীয় ৭৬ রানের মাথায় পড়লো দ্বিতীয় উইকেট।
এরপর ব্যাট করতে নামেন শ্রেয়াস আয়ার। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। কিন্তু একটি বাউন্ডারি মেরে তিনিও ফিরে গেলেন। প্যাট কামিন্সের বলে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন আয়ার। ৮১ রানের মাথায় পড়ে তৃতীয় উইকেট।
৮১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর বিরাট কোহলি আর লোকেশ রাহুল খোলসে ঢুকে পড়েন। দলকে এগিয়ে নিতে দাঁতে দাঁত চেপে ক্রিজে পড়ে থাকার চেষ্টা করেন তারা। চতুর্থ উইকেটে ১০৯ বল খেলে তারা ধীরগতিতে যোগ করেন ৬৭ রান।
অবশেষে এই জুটিটি ভেঙে দেন প্যাট কামিন্স। ভারতীয় দলের ব্যাটিং ভরসা বিরাট কোহলি তার দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ইনসাইডেজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন। ৬৩ বলে ৪ বাউন্ডারিতে কোহলির দায়িত্বশীল ইনিংসটি ছিল ৫৪ রানের।
রবীন্দ্র জাদেজা সুবিধা করতে পারেননি। ২২ বলে ৯ রান করে হ্যাজেলউডের বলে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন তিনি। ১৭৮ রানে ৫ উইকেট হারায় ভারত।
সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছেন লোকেশ রাহুল। বেশ ধীরগতিতে ব্যাটিং করেছেন তিনি। অবশেষে ধীরগতির রাহুলকে সাজঘরের পথ দেখান মিচেল স্টার্ক।
৬৬ রান করে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রাহুল। ১০৭ বলের ইনিংসে মাত্র একটি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। এরপর মোহাম্মদ শামিকেও (৬) সাজঘরে ফেরান স্টার্ক। ২১১ রানে ৭ উইকেট হারায় ভারত।
এরপর আর বেশিদূর এগোতে পারেনি ভারত। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার সূর্যকুমারের ওপর ভরসা ছিল। তিনিও ২৮ বলে ১৮ রান করে সাজঘরে ফিরে যান।
ইনিংসের শেষ বলে মোহাম্মদ সিরাজ দুই নিতে গেলে রানআউটের কবলে পড়েন কুলদ্বীপ যাদব। তাতেই ২৪০ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত।
অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক ৩টি, প্যাট কামিন্স আর জস হ্যাজেলউড নেন ২টি করে উইকেট।
অর্থসংবাদ/এসএম