বাংলাদেশ বর্তমানে চীন ছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করছ । এ সুযোগ নিতে চায় জাপানও। দেশটি বাংলাদেশের কাছে উন্নতমানের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করতে চায়। ফলে ঢাকার সঙ্গে সামরিক খাতে সম্পর্ক বাড়াতে চায় টোকিও। নভেম্বরের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরে বিষয়টি আলোচনায় থাকবে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন জাপান সফর উপলক্ষে গত ২৮ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সফরের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়। আগামী ৩০ নভেম্বর তিন দিনের সফরে জাপান যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। দুই দেশের সম্পর্ক বাড়াতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তর সম্ভাব্য সুযোগগুলো খতিয়ে দেখছে। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফর উপলক্ষে সম্পর্ক বাড়ানোর ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ২৬ অক্টোবর ঢাকা আসছেন জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মহাপরিচালক। পর দিন দুই দেশের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের নিয়মিত বৈঠক ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) করতে চেয়েছিল ঢাকা। তবে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের সময় মেলাতে না পারায় বৈঠকটি করা হয়ে উঠছে না। এ কারণে অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো নিয়ে বৈঠক করতে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই মহাপরিচালক ঢাকা আসছেন।
সামরিক খাতে সম্পর্ক বাড়াতে টোকিওর আগ্রহের কথা জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, জাপান প্রযুক্তিগত সমরাস্ত্রের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে। তারা বাংলাদেশের কাছে এর আগে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির প্রস্তাবও দিয়েছে। তাদের সরঞ্জামগুলো মূলত নৌ ও বিমানবাহিনীর জন্য বেশি প্রযোজ্য। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন জাপান সফরে সমরাস্ত্র কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত না হলেও যৌথ বিবৃতিতে তার প্রতিফলন থাকবে। যেমন জাপানের মিতসুবিশি প্রতিষ্ঠান উন্নতমানের রাডার তৈরি করে। টোকিও তাদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিলে ঢাকা সে পণ্যগুলো বাকি দেশগুলোর সঙ্গে দাম ও মানের বিষয়টি তুলনা করে দেখবে। তারপর তা কেনার বিষয়টি আসবে।
কূটনীতিকরা বলেন, মিতসুবিশির বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে তাদের পণ্য মানের দিক থেকে সেরা এবং দামও বেশি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতিতে এত দাম দিয়ে পণ্য বাংলাদেশ কিনতে পারবে কিনা, সেটিও একটি বিবেচনার বিষয় রয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে আর্থিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সমরাস্ত্র সংগ্রহ করার থেকে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ বাংলাদেশের জন্য বেশি জরুরি। তবে জাপানের সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে শুধু সামরিক সরঞ্জাম কেনাবেচা নয়, সেসঙ্গে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে প্রশিক্ষণ বিনিময়, যুদ্ধজাহাজের বন্ধুত্বপূর্ণ সফর, প্রযুক্তি বিনিময়ের মতো বিষয়গুলোও রয়েছে।