পুঁজিবাজার
ফ্লোর প্রাইস নিয়ে ফের আলোচনার ঝড়

টানা দরপতন ঠেকাতে চলতি বছরের জুলাই মাসে শেয়ারবাজারে পুনরায় ফ্লোর প্রাইস চালু করে বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের পর বাজারে স্বস্তি ফিরলেও এখন বেশিরভাগ শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত থাকছে। বাজার বিশ্লেষকরা ফ্লোর প্রাইসের সমালোচনা করলেও বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ এতে স্বস্তি পাচ্ছেন। আর যারা শেয়ার নিয়ে ফ্লোরে আটকে আছেন তারা করছেন সমালোচনা।
ডিএসই’র তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ফ্লোর প্রাইস চালুর পরে শেয়ারবাজারে এক সপ্তাহ স্বস্তি থাকে। চালুর পর প্রথম দিনই দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়। সেদিন ডিএসই’র প্রধান সূচক ‘ডিএসই এক্স’ ১৫৩ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছিল। ওই কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজারের অপর দুই সূচকও বেড়েছিল। একই সঙ্গে সেদিন লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৮২ কোম্পানির মধ্যে ৩৬২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদরই বৃদ্ধি পেয়েছিল।
এছাড়াও ফ্লোর প্রাইস কার্যকর হওয়ার পর প্রথম সপ্তাহে শেয়ারবাজারে বাজার মূলধন বৃদ্ধি পেয়েছিল ২১ হাজার কোটি টাকা। সূচকের উল্লম্ফন ও বাজার মূলধন বৃদ্ধির কারণে ফ্লোর প্রাইসকে শুরুতে মনে করা হয়েছিল শেয়ারবাজারের জন্য আর্শীবাদ। তবে দিন যতই যাচ্ছে, ততই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা বাড়ছে। অনেকেই বলছেন ফ্লোর প্রাইসের কারণে জোর করে শেয়ারের দরপতন ঠেকানো হচ্ছে। ফলে ফ্লোর প্রাইসের বিরোধিতাও করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
>>আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে পতন ঠেকাতে আবারও ফ্লোর প্রাইস চালু
ফ্লোর প্রাইসের কারণে এখন বিনিয়োগকারীদের হাতে থাকা বেশিরভাগ শেয়ারের দর অপরিবর্তিত থাকছে। আজ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নিয়েছে মোট ৩৭৩টি কোম্পানি। এর মধ্যে ১৭৭টি কোম্পানির শেয়ারদরই আজ অপরিবর্তিত ছিল। দর কমেছে ৮১টি কোম্পানির। বিপরীতে ১১৫টি শেয়ারের দর বেড়েছে।
গত সপ্তাহেও বাজারের চিত্র একই ছিল। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে মোট ১৬০টি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। পরের দিন (২৬ সেপ্টেম্বর) অপরিবর্তিত ছিল ১৭৩ কোম্পানির শেয়ারদর। ২৭ সেপ্টেম্বরও ১৭৪টি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পায়নি, কিংবা কমেওনি। এর পরের দুই কার্যদিবসে ১৮৬টি করে কোম্পানির শেয়ারদর ছিল অপরিবর্তিত। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত থাকার মূল কারণ ফ্লোর প্রাইস।

বাজারের এমন আচরণকে অনেকেই অস্বাভাবিক মনে করছেন। আজ যেসব কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল, তাঁর বেশিরভাগই ফ্লোর প্রাইসের কারণে কমতে পারেনি। সাধারণ আগে অপরিবর্তিত শেয়ারের সংখ্যা থাকতো একশোর নিচে। তবে ফ্লোর প্রাইসের কারণে সম্প্রতি বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর অপরিবর্তিত থাকছে।
>>আরও পড়ুন: ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নিলো বিএসইসি
শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবু আহমেদ মনে করেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ারবাজারের ক্ষতি হচ্ছে। তিনি বলেন, কোন বিনিয়োগকারীর টাকার জরুরি দরকার হলেও সে ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ার বিক্রি করতে পারছে না। আবার কেউ হয়তো নিজের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে অন্য কোন শেয়ার কিনতে চাচ্ছে। কিন্তু তার শেয়ার ফ্লোর প্রাইসের কারণে সে বিক্রি করতে পারছে না। তবে আমাদের বিনিয়োগকারীদের একটা অংশ ফ্লোর প্রাইস রাখার পক্ষে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান ফ্লোর প্রাইস নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি মনে করেন ফ্লোর প্রাইস শেয়ারবাজারের জন্য ভালো কোন সমাধান নয়।
বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান-উর-রশিদ চৌধুরীর মতে, প্রধান সূচক (ডিএসই এক্স’) ১০ হাজার পয়েন্ট না হওয়া পর্যন্ত বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস তুলবে না। তিনি অর্থসংবাদকে বলেন, ফ্লোর প্রাইস দেওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীদের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। বাজার এখন স্থিতিশীল আছে। এখন যদি ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হয় তবে বিনিয়োগকারীরা আবারও লোকসানে পড়বেন।
মিজান-উর-রশিদ চৌধুরী বলেন, ফ্লোর প্রাইসের কোন নেগেটিভ দিক আমরা দেখছি না। কারণ আমি শেয়ার কিনে অন্তত স্বস্তিতে থাকতে পারি যে, আমার শেয়ারটার দাম না বাড়লেও অন্তত স্থিতিশীল থাকবে। ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে মার্কেট এক সপ্তাহের মধ্যে ধূলিস্মাৎ হয়ে যাবে বলেও মনে করেন বিনিয়োগকারী পরিষদের এই প্রতিনিধি।
ফ্লোর প্রাইসের ইতিবাচক কিছু দিক লক্ষ্য করছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম। তিনি অর্থসংবাদকে বলেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা পোক্ত করতেই ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়েছে। ফ্লোর প্রাইস জারি করার পর বাজারে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। আগে যেখানে গড় লেনদেন হাজার কোটি টাকার নিচে ছিল, সেটি এখন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
আগেরবার ফ্লোর প্রাইস চালুর পর কিছু কোম্পানির ফ্লোর তুলে দেওয়া হয়েছিল, এবার বিএসইসি এ ধরণের কিছু ভাবছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনের এই কর্মকর্তা বলেন, আগে যখন ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়েছে তখন অনেক কোম্পানির শেয়ার বিক্রি হচ্ছিল না। কিন্তু এবার দর অপরিবর্তিত থাকলেও শেয়ার বিক্রি হচ্ছে। তাই মার্কেটে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। প্রতিদিন লেনদেন হাজার কোটি টাকার বেশি হচ্ছে।
প্রথমবার যখন শেয়ারবাজারে ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয় তখনও বেশিরভাগ কোম্পানির দর অপরিবর্তিত থাকতো। ফলে ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেয় বিএসইসি। এর দুই মাস পর ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা আরও ৩০ কোম্পানির ফ্লোর প্রত্যাহার করা হয়। সর্বশেষ গত বছরের ২০ থেকে সব কোম্পানির শেয়ারের ওপর থেকে ফ্লোর প্রত্যাহার করে নেয় কমিশন। টানা দরপতনের মুখে চলতি বছরের ৩০ জুন আবারও শেয়ারবাজারে ফ্লোর প্রাইস চালু করে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
শেয়ারবাজারসহ অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে অর্থসংবাদের ফেসবুক ও ইউটিউবেও যুক্ত থাকুন
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পুঁজিবাজার
ডিএসই’র বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা

বিদায়ী সপ্তাহে (২৮ মে-০১ জুন) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব মূল্য সূচকের উত্থানে লেনদেন হয়েছে । একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন বেড়েছে এক হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৪ হাজার ২৮১ কোটি ২৬ লাখ ৪৪ হাজার ৪৮০ টাকায়। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৭২ হাজার ৫৫৯ কোটি ৯৬ লাখ ১ হাজার ৬৪৭ টাকায়। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৭২১ কোটি ৩০ লাখ ৪২ হাজার ৮৩৩ টাকা।
গেল সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ‘ডিএসই এক্স’ ২৯ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৬ হাজার ৩৫৫ পয়েন্টে।
প্রধান সূচকের সঙ্গে ডিএসইর অপর দুই সূচক ও বেড়েছে। গেল সপ্তাহে ‘ডিএস ৩০’ সূচকে ২ দশমিক ৮২ পয়েন্ট এবং ‘ডিএসই এস’ সূচকে ৮ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট যোগ হয়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজারে লেনদেন ২০ দশমিক ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাঁচ কার্যদিবসে এক্সচেঞ্জটিতে ৫ হাজার ৫২১ কোটি ৬৪ লাখ ১০ হাজার ৫৮০ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪ হাজার ৫৮৫ কোটি ৮৬ লাখ ৬১ হাজার ৮৪৮ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২০৩টির শেয়ারদরই ছিল অপরিবর্তিত। দর কমেছে ৮১টির। বিপরীতে ১০৮ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড। পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির ১৯৪ কোটি ৬৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৫৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে সর্বোচ্চ দরপতন হওয়া জুট স্পিনার্স লিমিটেডের শেয়ারদর কমেছে ১৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
তামহা সিকিউরিটিজের এমডিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

শেয়ার বাজারের ব্রোকার হাউজ তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সফটওয়্যারের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মিথ্যা ও ভুয়া বিবরণী ও পোর্টফোলিও স্টেটমেন্ট প্রদান করে ১৩৯ কোটি ৬৯ লাখ ৯১ হাজার ৯৬২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকালে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- ব্রোকার হাউজ তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মো. হারুনুর রশীদ, পরিচালক জাহানারা পারভীন, ড. শাহনাজ বেগম, অ্যাকাউন্টস্ এক্সিকিউটিভ ও অথোরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ আব্দুর রহমান তালাল, সাঈদ চৌধুরী, মো. দেলোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান, মো. গোলাম রসুল, শেরাটন শাখার ইনচার্জ ও অথোরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ এ এম আলমগীর কবীর, শেরাটন শাখার ম্যানেজার ও অথোরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ মো. ওয়ারিছ উদ্দিন, অথোরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ মো. ফায়েজুর রহমান, সেটেলমেন্ট অফিসার ও অথোরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ মো. শাহরিয়ার কবীর, অ্যাকাউন্টস্ এক্সিকিউটিভ ও অথোরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ জি. এম. আজাদ হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশীদের গাড়িচালক মো. মামুন হোসেন ও অফিস সহকারী মো. হাসান।
মামলার এজাহারে বলা হয়, তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেড ২০০৫ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে নিবন্ধিত হয়। শেয়ারবাজারের ব্রোকার হাউজ তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেড দুটি ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করে। এরমধ্যে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মিথ্যা ও ভুয়া বিবরণী ও পোর্টফলিও স্টেটমেন্ট প্রদান করে।
এতে আরও বলা হয়, দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায় বিও হিসাবধারীরা যাতে শেয়ার লেনদেনের প্রকৃত তথ্য জানতে না পারে সেজন্য তাদের অজান্তে তাদের বিও হিসাবে প্রদত্ত ফোন নম্বর বা মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে তামহা সিকিউরিটিজের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মোবাইল নম্বর সংশ্লিষ্ট বিও হিসাবের বিপরীতে ইনপুট দেওয়া হয়েছে। এর মূলহোতা তামহা সিকিউরিটিজের সেটেলমেন্ট অফিসার (সিডিবিএল অফিসার) ও অথোরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ মো. শাহরিয়ার কবীর, যিনি নিখুঁতভাবে এ অন্যায় কাজটি করেছেন।

তাছাড়া বিনিয়োগকারীদের বিনা অনুমতিতে তাদের শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে শেয়ার ক্রয় করা হয়েছে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
ইসলাম অক্সিজেনের আইপিও আবেদন বাতিল, নেপথ্যে বিতর্কিত সাইফুর

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চেয়েছিল ইসলাম অক্সিজেন লিমিটেড। তবে প্রতিষ্ঠানটির আবেদন বাতিল করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিটিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করতে নেপথ্যে ছিলেন বিতর্কিত কাজী সাইফুর। বিভিন্ন অপরাধের দায়ে এই সাইফুরকে ২০১৪ সালে একাধিকবার জরিমানা করেছিল বিএসইসি। একইসঙ্গে দীর্ঘ সময়ের জন্য শেয়ারবাজারে নিষিদ্ধও করা হয়েছিল বিতর্কিত এই ব্যক্তিকে।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম অর্থসংবাদকে ইসলাম অক্সিজেনের আইপিও আবেদন বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অনেকদিন ধরে ইসলাম অক্সিজেনের আইপিও আবেদন পেন্ডিং ছিল। তবে প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক হিসাবে অতিমূল্যায়িত করে সম্পদ দেখিয়েছে। বিক্রির বিপরীতে প্রমাণাদিও দেখাতে পারেনি কোম্পানিটি। এছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট ফাঁকি নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট চলমান রয়েছে। এসব বিবেচনায় কোম্পানিটির আইপিও আবেদন বাতিল করা হয়েছে।
ইসলাম অক্সিজেনকে শেয়ারবাজারে আনতে নেপথ্যে কাজ করা কাজী সাইফুর এর আগের বেশকিছু দুর্বল কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করতে নেপথ্যে থেকে কাজ করেছেন। বিশেষ করে তালিকাভুক্ত করতে কোম্পানিগুলোর ভুয়া আর্থিক প্রতিবেদন তৈরীতে সহযোগিতা করতেন বিতর্কিত এই ব্যক্তি।
উল্লেখ্য, ইসলাম অক্সিজেন কর্তৃপক্ষ শেয়ারবাজার থেকে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৯৩ কোটি টাকা উত্তোলন করতে চেয়েছিল। ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর রোড শোও করেছিল কোম্পানিটি। প্রতিষ্ঠানটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এবং রেজিষ্ট্রার টু দ্যা ইস্যুয়ারের দায়িত্বে ছিল সোনালী ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। তবে পরোক্ষভাবে মূলত ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছে বিতর্কিত শাহজালাল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট। যে প্রতিষ্ঠানটি এরইমধ্যে কয়েকটি কোম্পানিকে ভূয়া আর্থিক হিসাব দিয়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করেছে। আর শাহজালাল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টের মালিকানায়ও রয়েছেন শেয়ারবাজারের বিতর্কিত ব্যক্তি কাজী সাইফুর রহমান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
নগদ লভ্যাংশ দেবে এমারেল্ড অয়েল

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এমারেল্ড অয়েল লিমিটেড সমাপ্ত হিসাববছরের (৩০ জুন, ২০২২) বিনিয়োগকারীদের জন্য ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তবে এই লভ্যাংশ শুধুমাত্র সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির কর পরবর্তীতে আয় হয়েছে ১ কোটি ২১ লাখ ১৫ হাজার ৮৪৬ টাকা। গত বছর একই সময়ে লোকসান ছিলো ৩ কোটি ৬২ লাখ ৩১ হাজার টাকা। এ হিসেবে সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৭ পয়সা। গত বছর একই সময়ে লোকসান ছিলো ৫৮ পয়সা।
এদিকে. ৩০ জুন ২০২২ শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৩৬ পয়সা।
ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য আগামী ১২ জুলাই বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করবে কোম্পানিটি। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১২ জুন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
মূলধন বাড়াবে ব্র্যাক ব্যাংক

শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড তাদের অনুমোদিত মূলধন ৩ হাজার কোটি টাকা বাড়াবে। এর ফলে ব্যাংকটির অনুমোদিত পুঁজি গিয়ে দাড়াবে ৫ হাজার কোটি টাকায়।
ব্যাংকটির সর্বশেষ বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের সর্বসম্মতিক্রমে (০১) জুলাই বৃহস্পতিবার এই প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য গেছে।
ডিএসইর তথ্য মতে, ২০০৭ সালে তালিকাভুক্ত ব্যাংকটির পূর্ব ঘোষিত এজিএমে ২০২২ সালের জন্য পর্ষদ ঘোষিত ১৫ শতাংশ (৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ ও ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ বোনাস শেয়ার) ও অনুমোদিত মূলধন অনুমোদন করা হয়।
এর আগের পরিচালনা পর্ষদ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ সমাপ্ত বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসেবে ১১২ কোটি ২৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৯৬ টাকা দেবে। পাশাপাশি ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ করে বোনাস শেয়ারও দেওয়া হবে।

তার আগের বছরে ব্যাংকটির শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ (সাড়ে ৭ শতাংশ নগদ আর সাড়ে ৭ শতাংশ বোনাস শেয়ার) লভ্যাংশ দিয়েছিল। গত ২০২০ সালেও শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ, আর ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছিল।
জানা গেছে, ২০২২ সালে সামষ্টিকভাবে ব্র্যাক ব্যাংকের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে ৬১২ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা ২০২১ সালে ছিল ৪৬৫ কোটি টাকা। ব্র্যাক ব্যাংক এককভাবে ২০২২ সালে ৫৭৬ কোটি টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা অর্জন করেছে, যা ২০২১ সালের ৫৫৫ কোটি টাকার তুলনায় ৩.৯০ শতাংশ বেশি।