এগ্রিবিজনেস
এয়ার প্ল্যান্টের পরিচিতি

এয়ার প্ল্যান্ট এমন এক ধরণের গাছ যেগুলোর জন্য কোন মাটির দরকার হয় না, এবং বাতাস থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করে থাকে। এদের শিকড় থাকে কিন্তু সেগুলো শুধু মাত্র গাছ বা পাথর এগুলোর সাথে আটকে থাকার কাজে লাগে। পানি বা পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করার কাজে লাগে না। গাছের পাতাতে অসংখ্য ছোট ছোট ছিদ্র থাকে যা দিয়ে তারা পানি ও পুষ্টি শোষণ করে নেয়।
এয়ার প্ল্যান্ট সাধারনত জলীয়বাষ্প পূর্ণ, স্যাঁতসেঁতে ট্রপিকাল ফরেস্টে হয়ে থাকে। যেখানে মোটামুটি প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়। সেই জন্য যেখানে অর্কিড ভাল হয় সেই সব জায়গাতে এয়ার প্ল্যান্ট ও ভাল হয়।এয়ার প্ল্যান্টের জন্য সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উপযোগী। এর বেশী তাপ হলে গাছ মরে যেতে পারে। এবং এমন জায়গাতে এগুলো রাখতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত আলো- বাতাস চলাচল রয়েছে। এছাড়া কিছু কিছু এয়ার প্ল্যান্ট আছে যেগুলো মরুভুমিতে হয়ে থাকে এবং সেগুলো অনেক বেশি রোদ, তাপ ও পানি সল্পতা সহ্য করতে পারে।
তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন এগুলো যেন সরাসরি সূর্যের আলোতে না আসে। সূর্যের আলো সরাসরি লাগলে গাছের সাইড দিয়ে পুড়ে যেতে পারে। এবং আপনার পছন্দের গাছ গুলো মারা যেতে পারে। অর্কিডের মতো উজ্জ্বল আলোকিত জায়গাতে এই গাছ গুলো রাখুন যেখানে বাতাস চলাচল খুব ভাল হয়।
বাসার জানালায়, বা ড্রইং রুমের এক কোনে এই গুলো ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। এয়ার প্ল্যান্ট আপনি চাইলে গ্লাস/ফুলদানি জাতীয় কিছুর উপরে রেখে দিতে পারেন, এমনকি আপনি চাইলে মরা গাছের গুড়ি বা ডালের উপরও এয়ার প্ল্যান্ট সাজাতে পারেন। তবে যেভাবেই রাখুন না কেন চেষ্টা করবেন এমন ভাবে রাখতে যেন চাইলেই গাছ গুলো সরানো যায়। না হলে পানি দিতে অনেক ধরণের সমস্যা হতে পারে।
এয়ার প্ল্যান্ট যেহেতু ময়েস্ট এলাকার গাছ তাই এর জন্য পানি একটি অপরিহার্য জিনিস। আবার আমাদের দেশে গরম কালটা এয়ার প্ল্যান্টের জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী গরম হওয়ায় কারনেও এর পানি প্রয়োজন বেশী হয়।
এয়ার প্ল্যান্টের জন্য প্রতিদিন এক বেলা পানি স্প্রে করা জরুরী। সকাল সকাল পানি স্প্রে করা ভাল। কখনই ভর দুপুরে পানি স্প্রে করবেন না। এতে গাছের ক্ষতি হয়। চাইলে রাতে করতে পারেন কিন্তু কখনই দুপুর বেলা না। এছাড়া প্রতি ১৫ দিন পর পর এক বার করে ২৫-৩০ মিনিটের জন্য একটা গামলা বা পাত্রে পানি নিয়ে তার মধ্যে গাছ গুলো ভিজিয়ে রাখতে হবে।
এখন গাছে পানি স্প্রে করুন অথবা ভিজিয়ে রাখুন আপনাকে অবশ্যই খেয়াল করতে হবে এর পর যেন গাছ গুলো নিচের দিকে উলটা করে ঝুলানো থাকে। না হলে পাতার ফাকে ফাকে পানি জমে থাকবে এবং গাছ একদিনের মধ্যে মরে যাবে। পানি ঝরে গেলে আগের মতো যেখানে রাখা ছিল সেখানে রেখে দিন।
আর একটি সাবধানতার বিষয় হোল বাল্ব ওআলা যেমন বাল্বুসা, কেপুত মেডুসা এই টাইপএর এয়ার প্ল্যান্ট কখনই পানি তে সম্পূর্ণ ভাবে ডোবাবেন না। এতে এগুলোর বাল্বে পানি ঢুকে গাছ মরে যাবে। আবার যখন কোন গাছে ফুল আসবে তখনো একে পানিতে ডোবাবেন না। এয়ার প্ল্যান্ট খুবই সংবেদনশীল একটা গাছ, তাই আমি সব সময় এয়ার প্লান্টে পানি দেওয়ার জন্য ফিল্টার পানি ব্যাবহার করি। এতে গাছ সুস্থ থাকে।
এছাড়া আমি বৃষ্টির পানিও ধরে রাখি এবং মাঝে মাঝে আধা ঘণ্টার জন্য বৃষ্টির মধ্যে ভিজতে দেই। এতে গাছে স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয় এবং স্বাস্থ্য ভাল থাকে। এয়ার প্লান্টে আলাদা করে সার দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে সার দিতে খুব ইচ্ছা করলে ১৯/১৯/১৯ এন।পি।কে সার ১ লিটার পানিতে গুলে স্প্রে করতে পারেন।
আর প্রথম যখন আমি কোন এয়ার প্ল্যান্ট বাসায় আনি তখন সেগুলোকে আমি আধা ঘণ্টা ইপ্সপম সল্ট গুলানো পানিতে ভিজিয়ে রাখি এর পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নেই। এর ফলে পরিবহনের জন্য এয়ার প্লান্টে যে নিস্তেজ ভাব আসে তা দূর হয়ে যায়। আমি সাধারনত ১ বালতি (১৮ লিটার) পানি তে আমি আধা চা-চামচ ইপসম সল্ট নিয়ে থাকি। ব্যাবহারের পর এই পানি ফেলে দিবেন না। এটা জবা গাছ সহ অন্যান্য ফুল গাছের জন্য খুব উপকারী।
যেখানে এয়ার প্ল্যান্ট রাখবেন তার নিচে বা খুব কাছাকাছি কোন জায়গাতে একটি পানি ভরতি মুখ খোলা পাত্র রাখতে পারলে খুব ভাল হয়। এতে গাছ গুলো একটা হিউমিড পরিবেশ পাবে, আর বৃদ্ধি ভাল হবে।আমি ভারতের বিভিন্ন জায়গাতে সিরামিকের বাটির ভেতর বড় বড় ভেজা ইটের টুকরা রেখে তার উপর এয়ার প্ল্যান্ট রাখতে দেখেছি।
আমার মনে হয় এটাও গাছ সুস্থ রাখার বেশ ভাল উপায় এবং এইভাবে রাখলে বেবি প্ল্যান্ট গুলো খুব সহজেই বড় হয়ে যায়। তো এয়ার প্ল্যান্টের যত্ন নিয়ে আজকে এই পর্যন্তই। আশা করছি এই ভিডিও তা আপনাদের কাজে লাগবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এগ্রিবিজনেস
এক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মিলবে কৃষির ৪৫ সেবা

এখন থেকে কৃষি মন্ত্রণালয় ও অধীন ১৭টি দপ্তর ও সংস্থার ৪৫টি নাগরিক সেবা মিলবে একটি সমন্বিত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। বুধবার (১৫ মার্চ) সচিবালয়ে এ ডিজিটাল সার্ভিসের উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
এ প্ল্যাটফর্ম থেকে কৃষিকাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই কোটিরও বেশি জনগণ সরাসরি এসব সুবিধা ভোগ করবেন। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট moa.gov.bd থেকে ইন্টিগ্রেটেড ডিজিটাল সার্ভিস service.moa.gov.bd ট্যাবে ক্লিক করলেই এসব সেবা মিলবে।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, এ প্ল্যাটফর্ম চালুর ফলে কৃষি মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থা প্রদত্ত নাগরিক সেবাসমূহ এক জায়গায় খুব সহজেই পাওয়া যাবে, সেবা প্রাপ্তিতে সময় কম লাগবে ও যাতায়াত খরচ হ্রাস পাবে।
কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এ পোর্টালের মাধ্যমে বর্তমান নাগরিক সেবাগুলোকে (যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাবে) খাত, ধরন দপ্তর/অধিদপ্তর অনুসারে সন্নিবেশ করা হয়েছে। কৃষক, উৎপাদক, ব্যবসায়ী, আমদনিকারক ও রপ্তানিকারকদের জন্য কৃষি পরামর্শ, শস্য, লাইসেন্স ও নিবন্ধন, সার, অনুদান ও ভর্তুকি, সেচ এবং কীটনাশক বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও সব সংস্থা প্রদত্ত সেবা ডিজিটালি পাওয়া যাবে।
এখানে প্রতিটি সেবার বিপরীতে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সন্নিবেশ করা হয়েছে। কী প্রক্রিয়ায়, কত খরচে, কার মাধ্যমে, কত সময়ে এবং কী কী প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মাধ্যমে সেবা পাওয়া যাবে তা বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি সেবার সেবাপদ্ধতির ধাপগুলোও বর্ণনা করা হয়েছে।
পরে কৃষিমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন অগ্রগতি সভায় ফলমূল, শাকসবজি বা হর্টিকালচারে গবেষণা বাড়াতে বিজ্ঞানীদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, অর্থকরী ফলমূল, শাকসবজি বা হর্টিকালচার গবেষণায় দেশের বিজ্ঞানীরা এখনো পিছিয়ে আছে। এখাতে বিজ্ঞানীদের অবদান খুব দৃশ্যমান নয়।
বেসরকারি কৃষি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে হর্টিকালচার নিয়ে মতবিনিময় করার জন্যও বিজ্ঞানীদের নির্দেশনা দেন মন্ত্রী। এ সময় কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংস্থাপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এগ্রিবিজনেস
অর্ধশতাধিক দেশে মাছ রপ্তানি করে বাংলাদেশ

বিশ্বের ৫২টি দেশে বাংলাদেশ মাছ রপ্তানি করে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর মৎস্য ভবনে অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাবারের একটি বড় জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। আমিষের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। মৎস্য উৎপাদন, বিপণন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে এ খাতে সম্পৃক্তদের আয়ের উৎস তৈরি হচ্ছে। এ খাতের মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে, বেকারত্ব দূর হচ্ছে। এ খাত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখছে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি সচল করছে। ফলে দেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণই শুধু নয়, প্রায় ৫২টি দেশে আমাদের মাছ রপ্তানি হচ্ছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক প্রতিবেদন অনুযায়ী করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বে যে তিনটি দেশ মাছ উৎপাদনে ভালো করেছে তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। অপরদিকে মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। জেলে-মৎস্যজীবীসহ মৎস্য খাতে বিভিন্নভাবে সম্পৃক্তদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশের মৎস্য খাতে অভাবনীয় ও বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।
মৎস্য খাত শুধু মাছ আহরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ খাতের সঙ্গে দেশের উন্নয়ন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, খাবারের জোগান, বেকারত্ব দূর করা, উদ্যোক্তা তৈরি এসব বিষয় সম্পৃক্ত। তাই এ খাতকে কোনোভাবেই হেলায় দেখা যাবে না। জাটকা নিধন বন্ধে আমাদের কঠোর পদক্ষেপ রয়েছে। এর ব্যত্যয় যারাই করতে চাইবে কোন ছাড় দেওয়া যাবে না। যারা আইন লঙ্ঘন করতে চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাতীয় স্বার্থ রক্ষা অগ্রাধিকার দেয়া হবে। আমাদের লক্ষ্য মাছ রক্ষা করা।
মৎস্যজীবীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, মাছ বড় হলে মৎস্যজীবীরাই আহরণ করবেন। বড় মাছ বিক্রি করে বেশি অর্থ আয় করতে পারবেন। কাজেই তাদের স্বার্থেই আইন মানতে হবে। অসাধু কিছু ব্যবসায়ী নিষিদ্ধ সময়ে দরিদ্র জেলেদের মাছ আহরণে বাধ্য করে। কোন অসাধু ব্যক্তির পরামর্শ বা প্রলোভনে জাটকা আহরণে কোথাও যাওয়া যাবে না।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এগ্রিবিজনেস
দেশে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী ধানের জাত উদ্ভাবন

বাংলাদেশের ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট উচ্চ ফলনশীল দুটি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে যার মধ্যে একটি ধানের চাল বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী বলে দাবি করছে ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানী ও পুষ্টিবিদরা।
আর অন্য জাতটি দক্ষিণাঞ্চলসহ জোয়ার ভাটা অঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী হবে বলে জানিয়েছে ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট।
জাতীয় বীজ বোর্ডও এ দুটি ধানকে অনুমোদন দিয়েছে। ফলে এখন দুটি জাতই মাঠ পর্যায়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
নতুন ধানের বৈশিষ্ট্যের কথা জনিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক নতুন উদ্ভাবিত ব্রি ধান ১০৫ ‘ডায়াবেটিক চাল’ হিসেবে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে তারা আশা করছেন।
কর্মকর্তারা বলেছেন তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে এ দুটি জাতের চাষ ও ফলন পরীক্ষা করেছে ব্রি। শেষ পর্যন্ত ধারাবাহিক ফলন গ্রহণযোগ্য মনে করা হয় এবং দুটি জাতকেই অনুমোদন দিলো জাতীয় বীজ বোর্ড।
এই ধানকে ডায়াবেটিক চাল বলা হচ্ছে কেন
ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ খন্দকার মো: ইফতেখারুদ্দৌলা বলছেন এ ধানটি কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বা জিআইসম্পন্ন হওয়ার কারণেই এটিকে ‘ডায়াবেটিক চাল’ বলা হচ্ছে।
“অতিরিক্ত ছাটাইকৃত চাল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আবার আমাদের দেশে মাড় ফেলে ভাত খাওয়ার কারণে এমনি পুষ্টি কম পাওয়া যায়। এ অবস্থায় ব্রি ধান ১০৫ বেশ আগ্রহ তৈরি করেছে কারণ এটিতে পুষ্টিমান যেমন আছে তেমনি জিআই অনেক কম,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
সাধারণত খাদ্যে জিআই ৫৫ বা আর নিচে থাকলে এটি কম জিআই সম্পন্ন বলা হয়ে থাকে। ইন্সটিটিউটের গবেষণায় ব্রি ধান ১০৫-এ জিআই এই মাত্রার নিচে পাওয়া গেছে।
অবশ্য বাংলাদেশে লো জিআই-এর ধান উদ্ভাবন এবারই প্রথম নয়। এর আগেও লো জিআই সমৃদ্ধ তিনটি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন- এবারের ধানটি উচ্চ ফলনশীল জাতের এবং হেক্টরপ্রতি এর সম্ভাব্য উৎপাদন সাত টনের বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ব্রি বলেছে, বোরো মৌসুমে চাষের উপযোগী ব্রি ধান ১০৫ থেকে পাওয়া চালে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ তুলনামূলক কম এবং সে কারণেই একে ‘ডায়াবেটিক ধান’ বলা হচ্ছে।
ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের শস্যমান ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলছেন ভাতের চেয়ে ভালো খাবার হয় না আর সে কারণেই ভাতটাও যাতে ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা খেতে পারেন সে চেষ্টা সবসময়ই ছিলো।
“লো জিআই-সম্পন্ন ধানে গ্লুকোজের পরিমাণ কম থাকে। আমরা পরীক্ষা করে সবসময় এই ধানে জিআই ভ্যালু ৫৫ এর নিচে পেয়েছি,” বলছিলেন তিনি।
তিনি বলেন ধানটির গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৭ দশমিক ৬ টন হলেও উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে অনুকূল পরিবেশে সাড়ে আট টন পর্যন্ত ফলন বাড়তে পারে।
ইফতেখারুদ্দৌলা বলছেন, কিছুটা চিকন ও লম্বা জাতের এ ধানটি বীজ বপন থেকে ফসল তোলা পর্যন্ত ১৪৮ দিন সময় লাগতে পারে।
“যেখানেই বোরো মৌসুমের অনুকূল পরিবেশ পাওয়া যাবে সেখানেই এই ধানটি চাষ করা যাবে। আমরা ১০টির মতো জায়গায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। ফল ভালো আসাতেই বীজ বোর্ড অনুমোদন দিয়েছে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
ব্রি বলছে- এ ধানটির (ব্রি ধান ১০৫) শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য হলো এর পাতা সবুজ ও খাড়া ডিগ পাতা আর দানা মাঝারি লম্বা ও চিকন।
তবে এ ধানটি পেকে যাওয়ার পরেও এর গাছ সবুজ থাকে। ধানটিতে অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৭ শতাংশ এবং প্রোটিনের পরিমাণ ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
এ জাতের ধান থেকে পাওয়া চাল রান্না করা ভাত ঝরঝরে ও সুস্বাদু হয়।
জোয়ার ভাটা অঞ্চলের ধান
ব্রি উদ্ভাবিত আরেকটি ধান হলো ব্রি ধান ১০৬, যেটি জোয়ার ভাটা অঞ্চলের উপযোগী বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এটি বরিশাল, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের কিছু এলাকার জন্য খুব কাজে লাগবে বলে বলছেন সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা।
ড. খন্দকার মো: ইফতেখারুদ্দৌলা বলছেন এসব এলাকার জন্য আগেও একটি জাত ছিলো কিন্তু সেটি হেলে পড়তো।
“নতুন এ জাতটি হেলে পড়বে না এবং এর ফলনও বেশি হবে। হেক্টর প্রতি সাড়ে পাঁচ টনের মতো ধান পাওয়া যাবে এ জাত চাষ করা হলে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
তিনি বলছেন, নতুন এ জাতটির পাতা খাড়া, প্রশস্ত ও লম্বা। আর পাতার রং হবে গাঢ় সবুজ।
এছাড়া এ ধান গাছটির গোড়া ও ধানের দানার মাথায় বেগুনি রঙ থাকে এবং এর গড় জীবনকাল ১১৭দিন।
শতাধিক উচ্চ ফলনশীল জাত এসেছে ব্রি’র মাধ্যমে
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট বলছে, তাদের উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের সবচেয়ে বড় অর্জনই হচ্ছে প্রতিকূল ও অপ্রতিকূল পরিবেশ উপযোগী উচ্চ ফলনশীল আধুনিক ধানের জাত উদ্ভাবন।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা এ পর্যন্ত ১০২টি (৯৫ টি ইনব্রিড ও ৭টি হাইব্রিড) উচ্চ ফলনশীল আধুনিক ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে-
৪৩টি জাত বোরো মওসুমের জন্য (বোরো ও আউশ উভয় মওসুম উপযোগী)
২৫টি জাত বোনা এবং রোপা আউশ মওসুম উপযোগী
৪৫টি জাত রোপা আমন মওসুম উপযোগী
১২টি জাত বোরো ও আউশ – উভয় মওসুম উপযোগী
১টি জাত বোরো, আউশ এবং রোপা আমন মওসুম উপযোগী
এবং ১টি জাত বোনা আমন মওসুম উপযোগী।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এগ্রিবিজনেস
শিগগিরই জাপানে আম রপ্তানি শুরু হবে: কৃষিমন্ত্রী

শিগগিরই জাপানে আম রপ্তানি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরি সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের আম নিতে জাপানের আগ্রহ রয়েছে। রপ্তানির ক্ষেত্রে জাপানের পূর্বশর্ত পূরণে কাজ চলছে। দুইদেশ একসাথে কাজ করছে। শিগগিরই জাপানে আম রপ্তানি শুরু হবে। একইসঙ্গে অন্যান্য ফলমূল ও শাকসবজি রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে।’
তিনি জানান, জাপান কৃষিবিজ্ঞানীদের প্রশিক্ষণ, বাংলাদেশে কৃষিযন্ত্র তৈরির কারখানা স্থাপন ও কৃষিখাতে সহযোগিতা আরও বাড়াবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের সময় এসব বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হবে।
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরি বলেন, ‘কৃষিখাতে জাপান-বাংলাদেশের সহযোগিতা আরও বাড়াতে চাই। সেজন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে চাচ্ছি যাতে করে সহযোগিতার অগ্রাধিকার খাতগুলো চিহ্নিত করে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করা যায়।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে বাধা নেই। তিনি জেলে থেকেও দল পরিচালনা করতে পারবেন, বিভিন্ন নির্দেশনা দিতে পারবেন। তবে সাজাপ্রাপ্ত আসামী হিসাবে আইন অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে বর্তমান নির্বাচনী আইনে যা আছে, তাই মানতে হবে। এখানে সরকার বা নির্বাচন কমিশনসহ কারও কিছু করার নেই।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী দেশে নির্বাচন হবে; এর কোনো ব্যত্যয় হবে না। সংবিধানের বাইরে কারও কিছু করার নেই। নির্বাচন পর্যন্ত বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকবে, তারপর নির্বাচনে জনগণ ভোট না দিলে ক্ষমতা ছেড়ে চলে যাবে।’
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এগ্রিবিজনেস
ভোজ্যতেলে আমদানি নির্ভরতা কমাতে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি

ভোজ্যতেলে আমদানি নির্ভরতা কমাতে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার শিবপুরে উন্নত জাতের সরিষা ও ধান উৎপাদনকারী চাষীদের সাথে মতবিনিময় ও কৃষক সমাবেশে মন্ত্রী এ কথা বলেন। কৃষি মন্ত্রণালয় থেওেক পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকের উন্নয়নে বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি প্রদান এবং সময়োপযোগী কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এর ফলে দেশে আর কোনওদিন খাদ্য সংকট হবে না।
তিনি বলেন, দেশের কৃষি খাতের সাফল্য আজ বিশ্বস্বীকৃত। একসময় ৭ কোটি মানুষের এ দেশে খাদ্য সংকট দেখা দিতো, আজ ১৭ কোটি মানুষের কেউ না খেয়ে থাকে না। এখন খাদ্যের জন্য আমরা হাত পাতি না। দেশে মঙ্গা হয় না, দুর্ভিক্ষ হয় না। বিগত ১৪ বছরে কেউ না খেয়ে থাকেনি, একজনও না খেয়ে মারা যায়নি।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশে ৫০ ভাগ তেল উৎপাদনের মাধ্যমে আমদানি নির্ভরতা কমাতে তিন বছর মেয়াদি রোডম্যাপ আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। প্রথম বছরেই এবার সারা দেশে দ্বিগুণ পরিমাণ সরিষা চাষ হয়েছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে সরিষার আবাদ বৃদ্ধির সম্ভাবনার পুরোটা কাজে লাগাতে হবে। যাতে দুই বছর পরে ভোজ্যতেল আমদানি অর্ধেকে নামিয়ে আনা যায় ও আমদানিতে কমপক্ষে ১০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হয়।
বিএনপি, জামায়াত ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা নির্বাচনকে বানচাল করে অসাংবিধানিক পদ্ধতিতে ক্ষমতায় আসতে চায়। সেজন্যই তারা একেকদিন একেকটা আন্দোলনের আওয়াজ তুলে।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপির আন্দোলনের আওয়াজ দেশের জনগণের নিকট পৌঁছে না, জনগণ তাতে সাড়া দেয় না। কারণ, জনগণ আওয়ামী লীগের আমলে দেশের যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, তা দেখতে পায় ও উপলব্ধি করে।
অনুষ্ঠানে কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তারের সভাপতিত্বে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, জেলা প্রশাসক আব্দুল লতিফ, সিংগাইর উপজেলা চেয়ারম্যান বক্তব্য রাখেন।
পরে কৃষিমন্ত্রী মানিকগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সরিষা ও ধান আবাদের অগ্রগতি এবং আগামী বছরের কর্মপরিকল্পনা বিষয়ক আঞ্চলিক কর্মশালায় যোগ দেন।