এয়ার প্ল্যান্টের পরিচিতি

এয়ার প্ল্যান্টের পরিচিতি
এয়ার প্ল্যান্ট এমন এক ধরণের গাছ যেগুলোর জন্য কোন মাটির দরকার হয় না, এবং বাতাস থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করে থাকে। এদের শিকড় থাকে কিন্তু সেগুলো শুধু মাত্র গাছ বা পাথর এগুলোর সাথে আটকে থাকার কাজে লাগে। পানি বা পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করার কাজে লাগে না। গাছের পাতাতে অসংখ্য ছোট ছোট ছিদ্র থাকে যা দিয়ে তারা পানি ও পুষ্টি শোষণ করে নেয়।

এয়ার প্ল্যান্ট সাধারনত জলীয়বাষ্প পূর্ণ, স্যাঁতসেঁতে ট্রপিকাল ফরেস্টে হয়ে থাকে। যেখানে মোটামুটি প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়। সেই জন্য যেখানে অর্কিড ভাল হয় সেই সব জায়গাতে এয়ার প্ল্যান্ট ও ভাল হয়।এয়ার প্ল্যান্টের জন্য সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উপযোগী। এর বেশী তাপ হলে গাছ মরে যেতে পারে। এবং এমন জায়গাতে এগুলো রাখতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত আলো- বাতাস চলাচল রয়েছে। এছাড়া কিছু কিছু এয়ার প্ল্যান্ট আছে যেগুলো মরুভুমিতে হয়ে থাকে এবং সেগুলো অনেক বেশি রোদ, তাপ ও পানি সল্পতা সহ্য করতে পারে।

তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন এগুলো যেন সরাসরি সূর্যের আলোতে না আসে। সূর্যের আলো সরাসরি লাগলে গাছের সাইড দিয়ে পুড়ে যেতে পারে। এবং আপনার পছন্দের গাছ গুলো মারা যেতে পারে। অর্কিডের মতো উজ্জ্বল আলোকিত জায়গাতে এই গাছ গুলো রাখুন যেখানে বাতাস চলাচল খুব ভাল হয়।

বাসার জানালায়, বা ড্রইং রুমের এক কোনে এই গুলো ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। এয়ার প্ল্যান্ট আপনি চাইলে গ্লাস/ফুলদানি জাতীয় কিছুর উপরে রেখে দিতে পারেন, এমনকি আপনি চাইলে মরা গাছের গুড়ি বা ডালের উপরও এয়ার প্ল্যান্ট সাজাতে পারেন। তবে যেভাবেই রাখুন না কেন চেষ্টা করবেন এমন ভাবে রাখতে যেন চাইলেই গাছ গুলো সরানো যায়। না হলে পানি দিতে অনেক ধরণের সমস্যা হতে পারে।

এয়ার প্ল্যান্ট যেহেতু ময়েস্ট এলাকার গাছ তাই এর জন্য পানি একটি অপরিহার্য জিনিস। আবার আমাদের দেশে গরম কালটা এয়ার প্ল্যান্টের জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী গরম হওয়ায় কারনেও এর পানি প্রয়োজন বেশী হয়।

এয়ার প্ল্যান্টের জন্য প্রতিদিন এক বেলা পানি স্প্রে করা জরুরী। সকাল সকাল পানি স্প্রে করা ভাল। কখনই ভর দুপুরে পানি স্প্রে করবেন না। এতে গাছের ক্ষতি হয়। চাইলে রাতে করতে পারেন কিন্তু কখনই দুপুর বেলা না। এছাড়া প্রতি ১৫ দিন পর পর এক বার করে ২৫-৩০ মিনিটের জন্য একটা গামলা বা পাত্রে পানি নিয়ে তার মধ্যে গাছ গুলো ভিজিয়ে রাখতে হবে।

এখন গাছে পানি স্প্রে করুন অথবা ভিজিয়ে রাখুন আপনাকে অবশ্যই খেয়াল করতে হবে এর পর যেন গাছ গুলো নিচের দিকে উলটা করে ঝুলানো থাকে। না হলে পাতার ফাকে ফাকে পানি জমে থাকবে এবং গাছ একদিনের মধ্যে মরে যাবে। পানি ঝরে গেলে আগের মতো যেখানে রাখা ছিল সেখানে রেখে দিন।

আর একটি সাবধানতার বিষয় হোল বাল্ব ওআলা যেমন বাল্বুসা, কেপুত মেডুসা এই টাইপএর এয়ার প্ল্যান্ট কখনই পানি তে সম্পূর্ণ ভাবে ডোবাবেন না। এতে এগুলোর বাল্বে পানি ঢুকে গাছ মরে যাবে। আবার যখন কোন গাছে ফুল আসবে তখনো একে পানিতে ডোবাবেন না। এয়ার প্ল্যান্ট খুবই সংবেদনশীল একটা গাছ, তাই আমি সব সময় এয়ার প্লান্টে পানি দেওয়ার জন্য ফিল্টার পানি ব্যাবহার করি। এতে গাছ সুস্থ থাকে।

এছাড়া আমি বৃষ্টির পানিও ধরে রাখি এবং মাঝে মাঝে আধা ঘণ্টার জন্য বৃষ্টির মধ্যে ভিজতে দেই। এতে গাছে স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয় এবং স্বাস্থ্য ভাল থাকে। এয়ার প্লান্টে আলাদা করে সার দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে সার দিতে খুব ইচ্ছা করলে ১৯/১৯/১৯ এন।পি।কে সার ১ লিটার পানিতে গুলে স্প্রে করতে পারেন।

আর প্রথম যখন আমি কোন এয়ার প্ল্যান্ট বাসায় আনি তখন সেগুলোকে আমি আধা ঘণ্টা ইপ্সপম সল্ট গুলানো পানিতে ভিজিয়ে রাখি এর পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নেই। এর ফলে পরিবহনের জন্য এয়ার প্লান্টে যে নিস্তেজ ভাব আসে তা দূর হয়ে যায়। আমি সাধারনত ১ বালতি (১৮ লিটার) পানি তে আমি আধা চা-চামচ ইপসম সল্ট নিয়ে থাকি। ব্যাবহারের পর এই পানি ফেলে দিবেন না। এটা জবা গাছ সহ অন্যান্য ফুল গাছের জন্য খুব উপকারী।

যেখানে এয়ার প্ল্যান্ট রাখবেন তার নিচে বা খুব কাছাকাছি কোন জায়গাতে একটি পানি ভরতি মুখ খোলা পাত্র রাখতে পারলে খুব ভাল হয়। এতে গাছ গুলো একটা হিউমিড পরিবেশ পাবে, আর বৃদ্ধি ভাল হবে।আমি ভারতের বিভিন্ন জায়গাতে সিরামিকের বাটির ভেতর বড় বড় ভেজা ইটের টুকরা রেখে তার উপর এয়ার প্ল্যান্ট রাখতে দেখেছি।

আমার মনে হয় এটাও গাছ সুস্থ রাখার বেশ ভাল উপায় এবং এইভাবে রাখলে বেবি প্ল্যান্ট গুলো খুব সহজেই বড় হয়ে যায়। তো এয়ার প্ল্যান্টের যত্ন নিয়ে আজকে এই পর্যন্তই। আশা করছি এই ভিডিও তা আপনাদের কাজে লাগবে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ভরা মৌসুমে সবজির চড়া দাম
বগুড়ায় রেকর্ড পরিমাণ সরিষার চাষ
এবার রেকর্ড পরিমাণ ডিম ছেড়েছে মা ইলিশ
১০৫ কোটি টাকার খেজুর গুড় উৎপাদনের লক্ষ্য নাটোরে
বাসার ছাদে সবজি চাষের সহজ পদ্ধতি
প্রাণিসম্পদ খাতে বিনিয়োগের জন্য সরকারের নীতি অনেক সহায়ক
মুনাফা লোভীদের কারণে ইলিশের দাম বেশি
কৃষিকাজে সামাজিক মর্যাদা বেড়েছে
বাংলাদেশের মৎস্য খাতে বিনিয়োগ করতে চায় জাপান
এক কাতলা মাছের দাম ৩৮ হাজার টাকা