বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আনতে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আনতে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: রাষ্ট্রদূত

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ব্যবসায়ী এই অঞ্চলে তাদের ব্যবসার সম্প্রসারণ করতে আগ্রহী। আমরা বাংলাদেশকে এমন একটি ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরিতে সাহায্য করতে চাই, যা বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হবে।


মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অফ বাংলাদেশের (আইবিএফবি) অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রদূত।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বৃদ্ধিতে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছি তার প্রমাণ হিসেবে বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ থেকে প্রথমবারের মতো একজন পূর্ণকালীন অ্যাটাশেকে অচিরেই স্বাগত জানাবে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি প্রত্যক্ষ যোগাযোগ গড়ে উঠবে। সত্যি বলতে যা আরেও আগেই হওয়া দরকার ছিল।

পিটার হাস বলেন, দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমানো, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও অর্থনৈতিক শাসনকে শক্তিশালী করার আইবিএফবির লক্ষ্যগুলোকে জোরালোভাবে সমর্থন করি। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপনের এ সময়ে আমরা দূতাবাসের পক্ষ থেকে পাঁচটি মূল উদ্দেশের প্রতি দৃষ্টিপাত করছি।

রাষ্ট্রদূত বলেন, এগুলোর মধ্যে প্রথমত একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ; দ্বিতীয়ত, এমন একটি বাংলাদেশ যা গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা, বহুত্ববাদ, সহনশীলতা, সুশাসন ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল; তৃতীয়ত, সামাজিক ও পরিবেশগতভাবে সহনশীল বাংলাদেশ; চতুর্থত, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা, যতক্ষণ পর্যন্ত মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন সম্ভব না হয়। প্রথম চারটি লক্ষ্যের প্রতিটি লক্ষ্য আমাদের পঞ্চম লক্ষ্যের ভিত্তি, টেকসই ও বিস্তৃত পরিসরে পারস্পরিক সমৃদ্ধি অর্জন, শ্রম মানের উন্নয়ন, অর্থনীতির সম্প্রসারণ ও বৈচিত্রময়করণের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সমর্থন করা এবং এটিকে বৃহত্তর আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বাণিজ্য ও সংযোগের জন্য উন্মুক্ত করা।

পিটার হাস বলেন, আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সকল ক্ষেত্রে আমি নিশ্চিত যে, আমরা অর্থনৈতিক বিষয়গুলোতে আরও দ্রুততার সাথে বহুদূর যেতে পারি। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকারী দেশ। আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য। ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল বাংলাদেশে ব্যবসার সুযোগগুলো খুঁজে দেখার জন্য গত মে মাসে ঢাকায় একটি উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধি দল নিয়ে এসেছিল।

তিনি বলেন, এছাড়াও আমরা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপদেষ্টা সালমান এফ. রহমানের নেতৃত্বে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলকে গত জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত উচ্চ-স্তরের অর্থনৈতিক ফোরামে স্বাগত জানিয়েছিলাম।

রাষ্ট্রদূত বলেন, চলতি বছরের শেষের দিকে একটি ইউএস বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরামের বৈঠকের অপেক্ষায় আছি। এক কথায় বলতে পারি, আমরা একত্রিতভাবে যে ভিত্তি গড়ে তুলেছি সেখানে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে।

পিটার হাস বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এ দেশের জিডিপি এমনকি করোনায় লকডাউনের সময়েও বেড়েছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের মতে অর্থনীতি আগামী বছর ৬.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, দেশের অর্থখাতের নেতারা ভালভাবে ঋণ ব্যবস্থাপনা করতে পারছেন। তারা ইউক্রেনে রাশিয়ার বিনা প্ররোচনায় আক্রমণের ফলে সৃষ্ট মুদ্রাস্ফীতির চাপ সামলানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছেন। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক যেমনটা উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আরও সংস্কারের দরকার রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
নির্বাচন ঘিরে সেন্টমার্টিনের পর্যটন বন্ধ ৩ দিন
মেট্রোরেলে মাছ-মাংস-সবজি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা
জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু