দুগ্ধপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে ফন্টেরা

দুগ্ধপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে ফন্টেরা
নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর জের ধরে চলতি বছরের শুরুর দিক থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে দুগ্ধপণ্যের গড় দাম টানা কমতির দিকে ছিল। তবে মে মাসের শেষের দিকে এসে বাজার পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। বর্তমানে বাড়তির দিকে রয়েছে দুগ্ধপণ্যের দাম। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে চলতি ২০২০-২১ মৌসুমের বাকি সময়ে দুগ্ধপণ্যের দাম বর্তমানের তুলনায় আরো বাড়তে পারে। নিউজিল্যান্ডের দুগ্ধ খাতের বৃহত্তম কোম্পানি ফন্টেরা সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে এ পূর্বাভাস দিয়েছে। দুগ্ধপণ্যের সম্ভাব্য মূল্যবৃদ্ধির পেছনে চীনে চাহিদা আগের তুলনায় বেড়ে যাওয়া প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

ফন্টেরার সাম্প্রতিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি ২০২০-২১ মৌসুমের বাকি সময়ে খামার পর্যায়ে প্রতি কেজি তরল দুধের দাম সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৯০ থেকে সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ৯০ নিউজিল্যান্ড ডলারের মধ্যে অবস্থান করতে পারে। এর আগে আরেক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি চলতি মৌসুমের জন্য খামার পর্যায়ে তরল দুধের সম্ভাব্য দাম কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ৯০ নিউজিল্যান্ড ডলারের মধ্যে প্রাক্কলন করেছিল। সেই হিসাবে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে সম্ভাব্য এ দাম সর্বনিম্ন অবস্থান থেকে কেজিতে দশমিক ৫০ নিউজিল্যান্ড ডলার বাড়িয়েছে ফন্টেরা।

সম্ভাব্য এ মূল্যবৃদ্ধির পেছনে চীনের বাজারে দুগ্ধপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধিকে চিহ্নিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে ফন্টেরার চেয়ারম্যান জন মোনাঘান বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে উঠে চীনের বাজারে দুগ্ধপণ্যের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক বাজারে দুগ্ধপণ্যের মূল্য নির্ধারণে প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখবে। বিষয়টি মাথায় রেখেই আগামী দিনগুলোর জন্য খামার পর্যায়ে তরল দুধের দাম বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

জানুয়ারির শুরু থেকে করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধ শুরু করে চীন। লকডাউন ঘোষিত হয় চীনের বিভিন্ন শহরে। সাধারণ মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়ে। স্থবির হয়ে পড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রফতানি। ওই সময় থেকে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি চীনের বাজারে দুধ ও দুগ্ধপণ্যের চাহিদাও কমে আসে। শীর্ষ ভোক্তা দেশটির বাজারে চাহিদায় পতন ও সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে দুগ্ধপণ্যের দাম কমতে শুরু করে। মে মাসের দিকে চীনে লকডাউন উঠে যাওয়া দুধ ও দুদ্ধপণ্যের বাজার পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়ায়। ফলে ওই সময় থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দামও বাড়তে শুরু করে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

গ্লোবাল ডেইরি প্রাইস ইনডেক্স (জিডিটি) বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২১ জানুয়ারির আন্তর্জাতিক নিলামে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের নিলামের তুলনায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছিল। এর পর থেকে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক দাম টানা কমেছে। সর্বশেষ ৫ মে অনুষ্ঠিত জিডিটিতে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক সর্বশেষ কমতে দেখা যায়। ওই নিলামে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের নিলামের তুলনায় দশমিক ৮ শতাংশ কমে যায়।

পরবর্তী নিলামগুলোয় দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক ক্রমেই বাড়তে দেখা গেছে। এ ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ জিডিটিতে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের নিলামের তুলনায় ৮ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছিল। চলতি বছর এটাই দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচকে সর্বোচ্চ উত্থান। একই সঙ্গে টানা চার নিলাম ধরে বাড়তির দিকে রয়েছে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক। মূল্যবৃদ্ধির এ ধারাবাহিকতার মধ্যে ২১ জুলাই পরবর্তী জিডিটি অনুষ্ঠিত হবে।

ফন্টেরা বলছে, চীন ও ইউরোপের দেশগুলো করোনা মহামারীর প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছে। তবে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ঝুঁকি এখনো রয়ে গেছে। এটাই আগামী দিনগুলোয় দুগ্ধপণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেবে। করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ এসব দেশকে ভোগালে নতুন করে দুগ্ধপণ্যের দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে। না হলে আগামী দিনগুলোয় আন্তর্জাতিক বাজারে দুগ্ধপণ্যের দাম বাড়তির দিকে থাকবে।সুত্র: রয়টার্স ও নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পোশাকখাতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে, কমে গেছে চাহিদা
২০২৩ সালে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ
২০২৩ সালে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ১০ শতাংশ
ইভ্যালিতে বড় অফার আজ, ১০ টাকায় মিলবে পাঞ্জাবি
হিলিতে আদা-সবজিতে স্বস্তি, বাড়তি দামে রসুন
বাংলাদেশে বিনিয়োগের ঐক্যমতে শেষ হলো গ্লোবাল বিজনেস কনফারেন্স
১১ মাসে ৪৩ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি
২০২৪ সালে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর
আইসিএবির নতুন সভাপতি ফোরকান উদ্দীণ
বিসিক শিল্পনগরীতে এক হাজার ৯৮ প্লট খালি