ইন্টারভিউ
খেলাপীদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবি ব্যাংক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি এবি ব্যাংক লিমিটেড ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ায় ব্যাংকের আদায় বেড়েছে, যার ফলে প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণ কমেছে অনেক। আর্থিক সংকট কাটিয়ে ইতিমধ্যেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের বেসরকারি খাতের প্রথম প্রজন্মের এ ব্যাংকটি। পাশাপাশি বেড়েছে আমানত। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এ ব্যাংকটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য দুই বছর পর এবার লভ্যাংশও দিতে পেরেছে। ফলে দীর্ঘদিন ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা শেয়ারবাজারের এ প্রতিষ্ঠানটি এখন ‘বি’ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হচ্ছে।সম্প্রতি ব্যাংকটির উন্নয়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে অর্থসংবাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবি ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আফজাল।সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এস এম জাকির হোসাইন। ছবি: ফয়সাল ইব্রাহীম
এবি ব্যাংকের এমডি বলেন, গত দুই বছর যাবত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশিত বিভিন্ন সূচকে এবি ব্যাংক নিম্নমূখী ছিল, তাই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ইচ্ছা করলেও শেয়ারহোল্ডারদেরকে লভ্যাংশ দিতে পারেনি। বর্তমানে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইনের অনেক সূচকেই উন্নতি করেছি এবং সম্মানজনক পর্য়ায়ে নিয়ে আসতে পেরেছি ব্যাংকটিকে। অর্থাৎ ‘বি’ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হওয়ার জন্য যেসব সূচকে উন্নতি করা প্রয়োজন ছিল, সেসব সূচকে আমরা উন্নীত হয়েছি। যেমন তারল্য বেড়েছে, উপার্জন ক্ষমতা বেড়েছে, মন্দ ঋণ কমেছে, গ্রাহকের আস্থা বেড়েছে। ফলে এবছর শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ব্যাংকের পর্ষদ ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও এমডি তারিক আফজাল বলেন, দীর্ঘদিন লোকসানে থাকা একটি ব্যাংক একবছরের মধ্যে লাভজনক অবস্থায় নিয়ে আসতে পেরেছি, এটা নি:স্বন্দেহে অনেক বড় অর্জন। ব্যাংকটিকে মোটামোটি একটা সম্মাানজনক অবস্থায় নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংকটির হারানো ঐতিহ্য অনেকটাই ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। যেমন ২০১৮ সালের শেষে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৩৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। ২০১৯ সালের শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ২৮ শতাংশে। এক বছরে খেলাপি ঋণ কমেছে ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এ সময় ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৬৪৫ কোটি টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে ৩০৮ কোটি টাকা বেশি। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় শত ভাগেরও বেশি। আমরা খেলাপীদেও বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছি।ঋণখেলাপী কাউকেই ছাড় দেওয়া হবেনা। আমরা ব্যাংকের প্রতি আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। ফলে ২০১৯ সালের শেষে আমানতের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ২৭ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকায়। ২০১৮ সালে এর পরিমাণ ছিল ২৩ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা। একবছরেরও কম সময়ে আমানত বেড়েছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা।
সম্প্রতি এবি ব্যাংকের কর্মী ছাটাইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংকটির এমডি তারিক আফজাল বলেন, আসলে এই খবরটি সঠিক নয়, আমরা চলতি মাসে ১৬০ জনকে পদোন্নতি দিয়েছি। এছাড়াও প্রায় ২ হাজার জনকে ইনক্রিম্যান্ট দিয়েছি। গত একবছর চেষ্টা করেও যাদেরকে অগ্রগামী করতে পারিনি সেসব অদক্ষ জনবলকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র ব্যাংকের উন্নয়নের স্বার্থে। কারন যোগ্য ব্যবস্থাপনা এবং দক্ষ জনবল একটি প্রতিষ্ঠানের সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ন উপাদান। এটির অভাব থাকলে একটি প্রতিষ্ঠান তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারবেনা। যোগ্য ব্যবস্থাপনা এবং দক্ষ জনবলের অভাবেই ব্যাংকটি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছিল। বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারনে অনেকেরই চাকরি চলে গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে ব্যবস্থাপনায় এবং পরিচালনা পর্ষদে ব্যাপক রদবদল হয়েছে। অদক্ষ জনবলের কারনে গ্রাহক থেকে ব্যাংকের টাকা আদায় করতে পারেনি, ফলে ব্যাংকটি প্রান্তিক পর্যাযে চলে যাচ্ছিল। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে ২০১৯ সালের পুরো সময়টা অদক্ষ জনবলকে ট্রেনিং দেয়ার চেষ্টা করলাম। অনেককে উন্নয়নের দিকে নিয়ে আসছি, যাচাই করার চেষ্টা করেছি তারা কি যোগ্য পদে আছে কিনা? অনেকের পোর্টফলিও বদল করেছি। কোভিড১৯ এর ফলে লকডাউনের সময় ব্যাংকের ৭০ থেকে ৮০ টি শাখা বন্ধ ছিল। তখন তাদেরকে অনলাইনে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। যারা বিগত কয়েক বছর ধরে পারফর্মেন্স খারাপ করছিল তাদেরকে গত জানুয়ারী মাস থেকেই একাধিক পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। যারা প্রথমে পরীক্ষায় খারাপ করেছে তাদেরকে আবার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তারপরেও যারা উন্নতি করতে পারেনি আমরা তাদেরকে বলেছি ছেড়ে দিতে, অনেকেই নিজের ইচ্ছায় চলে গেছে।
তারিক আফজাল ব্যাংকের এমডি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কি কি অর্জন হয়েছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যাংকের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পেরেছি, যা অনেক বড় অর্জন। খেলাপী ঋণ কমিয়ে নিয়ে আসা, লোকসান থেকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করা। ব্যাংকের ঐতিহ্য এবং সুনাম ফিরিয়ে আনা উল্লেখযোগ্য অর্জন।
খেলাপী ঋণ আদয়ে তিনি এ পর্যন্ত কি কি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা খেলাপীদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপের মাধ্যমে গ্রেপ্তার অভিযান করেছি। অনেকেই ভয়ে এবং লজ্বায় ব্যাংকের টাকা দিয়েছে। গত দুই বছরে ১ হাজার ২৭৫ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ে ১১৪টি মামলা দায়ের করেছি। এসব মামলার বেশির ভাগই করা হয় চেক ডিজঅনার এবং অর্থঋণ আদালতে। অনেক বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে তোলার ব্যবস্থা করেছি।এবি ব্যাংকের খেলাপি প্রতিষ্ঠান প্যারাডাইজ কেবলস থেকে ব্যাংকের পাওনা প্রায় ৭৫ কোটি টাকা এবং প্যারাডাইজ স্পিনিং মিলস থেকে পাওনা প্রায় ১২৫ কোটি টাকা আদায়ে গত ২১ জুন উভয় প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরপর ২৫ জুন প্রতিষ্ঠান দুটির বন্ধকি সম্পত্তিও নিলামে তুলেছি।
তিনি বলেন, একই সঙ্গে মেজেসটিকা হোল্ডিংস লিমিটেড এবং ধলেশ্বারি লিমিটেডের কর্ণধার লতিফ সিদ্দিকীর পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে ২০১৯ সালের জুন এবং ২০২০ সালের জুনে মেজেসটিকা হোল্ডিংস লিমিটেড ও ধলেশ্বারি লিমিটেডের পরিচালকদের বিরুদ্ধে এনআই অ্যাক্টে-১৮৮১ আইনের ক্ষমতা বলে একাধিক ফৌজদারি মামলা দায়ের করে হয়। ২০১৯ সালের জুনের মামলার ওয়ারেন্ট বাস্তবায়ন হয় ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি। পুলিশের সহায়তায় তাদের বাসভবনে গ্রেফতার অভিযান চালানো হয। টাকা ফেরত না দেয়ায় ব্যাংক তাদের বন্ধকি সম্পত্তি নিলাম তোলার সব আইনি প্রক্রিয়া চালু রেখেছে। বর্তমানে তারা জামিনে থাকলেও ব্যাংকের পাওনা টাকা আদায়ে প্রয়োজনীয় আইনি সব প্রক্রিয়া চলমান। একইভাবে ২০১৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আমান ফিড লিমিটেডের পরিচালকদের বিরুদ্ধে ৫টি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয় এবং টাকা আদায়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে।
২০১৮ সালে এরশাদ ব্রাদার্স কর্পোরেশনের মালিক এরশাদ আলির বিরুদ্ধে ৪টি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। সে মোতাবেক ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই পুলিশের সহায়তায় তার বাসভবনে গ্রেফতার অভিযান চালানো হয় কিন্তু তিনি পালিয়ে যান। বর্তমানে জামিনে আছেন তিনি। এছাড়াও এবি ব্যাংক ঋণের টাকা উদ্ধারে আইনি প্রক্রিয়া চালু রয়েছে আশিয়ান এডুকেশন লিমিটেড ও আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধেও।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ইন্টারভিউ
বিনা জামানতে ৫০ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স

বিনা জামানতে নারী উদ্যোক্তাদের ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স। বিজয় প্যাকেজের আওতায় মাত্র চারদিনের মধ্যেই ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। অর্থসংবাদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. কায়সার হামিদ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, একজন নারী উদ্যোক্তার কি সমস্যা থাকতে পারে সেই বিষয়গুলো আমরা দেখেছি। জামানত দেওয়ার মত কোন সিকিউরিটি না থাকায় তারা ব্যাংক লোনকে ঝামেলা মনে করে। অনেক কাগজপত্র ও বেশি সময় এবং বিভিন্ন ধরনের ইস্যুকে তারা ঝামেলা মনে করেন। তাদের পরিবারেরও খেয়াল রাখতে হয়। তাই এসব বিষয়গুলোকে যদি একসঙ্গে একটি সমাধানের মধ্যে নিয়ে আসার জন্য আমরা চিন্তা করে বিজয় নামের একটি প্যাকেজ নিয়ে এসেছি।
প্যাকেজটির সুবিধার বিষয়ে তিনি বলেন, বিনা জামানতে চারদিনের মধ্যে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকি। এখানে এক পাতার একটি আবেদনপত্র। এছাড়া পুরো পরিবারের স্বাস্থ্যকে তারা যাতে এর সাথে যুক্ত করতে পারে সেই ব্যবস্থাও করে দিয়েছি। তাই যে কোন সময় ডাক্তারের কাছ থেকে ফোন করে পরামর্শ নেওয়ার সুযোগও রয়েছে। এখানে তারা টেলিমেডিসিন সেবা পাবে।
নারী উদ্যোক্তাদের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, এই ধরনের ব্যবসায়ীরা (নারী উদ্যোক্তা) যারা বড় হতে চায়, তাদের সন্তানদের শিক্ষিত করতে চায় এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তের দিকে ছুটে আসতে চায় তাদের ক্ষেত্রে খেলাপি হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে।
নারী উদ্যোক্তাদের মতো কৃষকদেরও সহজ শর্তে ঋণ দিচ্ছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেড। গ্রামীণ পর্যায়ের কৃষকদের ঋণের ব্যবস্থা কিভাবে করা হয় তা জানতে চাওয়া হয় কায়সার হামিদের কাছে। তিনি বলেন- কৃষিক্ষেত্রে গরু পালনের বিষয় দিয়ে আমরা শুরু করেছি। কৃষকরা মৌসুমের আগে গরু কিনে মোটাতাজাকরণ করে সেটাকে তারা বিক্রি করে। দুইভাবে আমরা এ সেবা দিচ্ছি। প্রথমটা হচ্ছে- প্রত্যেককে গরু কিনে দিচ্ছি, নগদ টাকা দিচ্ছি না। আর একটা হচ্ছে- প্রত্যেক গরুর ইন্স্যুরেন্স করেছি।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের লক্ষ্য সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির এমডি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি সেখানে পৌঁছাতে হলে গ্রামীণ অর্থনীতিকে পুঁজি করে এগিয়ে যেতে হবে। অর্থনীতির মূল শক্তি হচ্ছে এমএমই। জনসংখ্যার বড় একটা অংশ শহরের বাইরে। তাদের অর্থনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে না পারলে টেকসই উন্নয়ন হবে না। ঢাকা-চট্টগ্রামের বাহিরে থেকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে কোলাবরেশন মডেলের মাধ্যমে আমরা যাচ্ছি। এটার ফলাফল বছরের মধ্যে পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, জনগনের সাথে যোগাযোগ করতে কোলাবরেশন মডেল দরকার। কৃষকদের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রথমত সম্পর্ক থাকতে হবে। এটির সঙ্গে পেমেন্ট সিস্টেমের জন্য একটি ডিজিটাল ওয়ালেট যুক্ত করা দরকার। এছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দরকার। এই তিনটি বিষয়ের সমন্বয় ঘটানো গেলেই এসব প্রজেক্টে সফলতা পাওয়া সম্ভব। বাংলাদেশে কোলাবরেশন খুব কম হয়। যদি সত্যিকারের কোলাবরেশন করা সম্ভব তাহলে এই ধরণের ব্যবসা করা যাবে। আমরা সেই জায়গায় বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করেছি। আমাদের পার্টনার আকিজ, বাংলা ক্যাট, প্রাণিসেবা এবং বেশ কয়েকটি এনজিও। এছাড়াও আমাদের সাথে পার্টনার হিসেবে রয়েছে বড় কিছু কর্পোরেট হাউস। এছাড়া পেমেন্ট পার্টনারশিপে নগদ ও বিকাশ আমাদের সাথে রয়েছে।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিনি বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মূল কাজের জায়গা হচ্ছে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কারণ হচ্ছে- ঋণের সঠিক ব্যবহার হয় না। অনেক সময় এসএমই’র নামে লোন নিয়ে ঋণ গ্রহীতা জমি কেনেন। ঋণ নেয়ার কারণ এবং গ্রহীতার তথ্য নিশ্চিত করতে পারলে ঋণ খেলাপি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। দেশে বেশিরভাগ বড় ঋণ খেলাপি হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে কেওয়াইসি নিশ্চিত না হওয়া এবং গ্রহীতার সদিচ্ছা না থাকা, ব্যবসার নামে টাকা সরিয়ে ফেলা। এসব বিষয় নিশ্চিত করা গেলে খেলাপি ঋণ কমে যাবে।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সে বিদেশি বিনিয়োগ না থাকার কারণ জানতে চাইলে কায়সার হামিদ বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বৈদেশিক বিনিয়োগ আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স কাজ করছে। সম্প্রতি ৫০ মিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ আনার ব্যাপারে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। বিডা, বিএসইসি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আমরা সহযোগিতা পাচ্ছি। কিছু জটিলতা থাকলেও আমরা আশা করি সেগুলো দূর করা সম্ভব। শেয়ারবাজারে কোন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করবে কিনা সেটা বিদেশিরা কমপক্ষে এক বছর রিসার্চে রাখে। একটা সময় বিদেশি বিনিয়োগ আমাদের কোম্পানিতে আশা শুরু করবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ইন্টারভিউ
‘চ্যাম্পিয়ন হতে হলে আগে বিশ্বাস করতে হবে’

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ভারতবর্ষের এই মোটিভেশনাল স্পিকারের জন্ম কলকাতায়। ১৯৮৩ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক শেষ করে চাকরি জীবনে প্রবেশ করেন তিনি। দীর্ঘ ১৫ বছরের চাকরি জীবনের পর ৩৬ বছর বয়সে তিনটি সংস্থার পরিচালকের দায়িত্ব পান সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে তিনি ‘ধ্রুব সত্য’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। এই প্রতিষ্ঠানটি কর্মীদের পেশাদার হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে।
সম্প্রতি ভারতবর্ষের এই মোটিভেশনাল স্পিকার বা সেমিনার লিডার কথা বলেন অর্থ সংবাদের সঙ্গে। সেখানে উঠে আসে তার সেমিনার লিডার হয়ে ওঠার গল্প।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, তিনটি সংস্থার পরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে এক সেমিনারে একজন মেন্টরের সান্নিধ্য পাই, যিনি একজন বিখ্যাত সেমিনার লিডার। এর আগে সেমিনার নিয়ে আমার কোন ধারণা ছিল না যে- একটি সেমিনার বা ওয়ার্কশপ একজন মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে। ওই ব্যাক্তির সান্নিধ্যে আসার পর সিদ্ধান্ত নিই সেমিনার লিডার হবো। এই ভাবনা নিয়েই ‘ধ্রুব সত্য’ এর জন্ম হয়। এখন আমরা দেশ-বিদেশে ৬০০ সংগঠন এবং ৩০০ প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে কাজ করি। হাসপাতাল, কলেজ, মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ডাক্তারদের নিয়ে কাজ করি। জটিল রোগের প্রতিষেধকের সন্ধানে যেসব বিজ্ঞানী কাজ করছেন, তাদেরকে উদ্দীপ্ত করার জন্য কাজ করি। এছাড়াও তিন বছর বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সব ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের মোটিভেশনাল মেন্টর ছিলাম। বর্তমানে যারা ইন্ডিয়া টিমে খেলছেন যেমন- রিদ্ধিমান, মোহাম্মদ সামি, অভিমন্নু এমনকি সৌরভ গাঙ্গুলীও আমার স্টুডেন্ট।’
তিনি বলেন, ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের মেন্টর হিসেবে এক বছর থাকার সুযোগ হয়েছে। বেশ কিছু মানসিক সংশোধানাগার, যৌনকর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করেছি।
২০১৯ সালের শেষের দিকে চীনের উহানে মহামারি করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চীন থেকে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর আসতে থাকে। ২০২০ সালের শুরুতেই চীনের সীমানা অতিক্রম করে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে থাকে কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস)। সৌমিত্রও আক্রান্ত হন এই ভাইরাসে। সে সময় একাকী সময় কেটেছে তার। ওই ভয়াবহ পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করতে হয়, তিনি কিভাবে করেছেন তা নিয়ে লিখেছেন বই। ইংরেজি ভাষার ওই বইটির নাম ‘ফেইথ’ (FAITH)। শীঘ্রই বইটির বাংলা সংস্করণও পাওয়া যাবে।
নিজের লেখা বইটি নিয়েও কথা বলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আমি যখন কোভিড আক্রান্ত হই, তখন তেমন সমস্যা হইনি। তবে একা থাকাকালে আতঙ্কিত হই। কোভিডের যে আতঙ্ক সেখান থেকে কিভাবে প্র্যাকটিক্যালি বের হয়ে আসা যায় তা এ বইয়ে লেখা আছে।
বইটির গুরুত্ব সম্পর্কে সৌমিত্র বলেন, মানুষের ব্রেইন সার্ভাভাইলের জন্য তৈরী। যখন কোভিড বা এর মত মহামারি আসে তখন ব্রেইন সার্ভাভাইলি ধাক্কা খায়। তখন আমাদের স্ট্রেস হরমোনের নিঃস্বরণ বাড়তে শুরু করে। যার ফলে প্যানিক অ্যাটাক, আশাহত হওয়ার মত সমস্যা গ্রাস করে। বইটিতে বলতে চেয়েছি- মেন্টাল হেলথ্ ভালো থাকলে কোভিড বা কঠিন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ভালো কাজে দেয়। কোভিড আমাদের মেন্টাল হেলথকে ছারখার করে দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে আমার এ বইটির গুরুত্ব অপরিসীম। এর এক অংশে বলা হয়েছে- বাধা থাকা স্বত্ত্বেও হিরোরা কিভাবে লক্ষ্যে পৌঁছেছে। অপর অংশে বলা হয়েছে- এই হিরোরা নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে কি কি করেছেন, কি ধরণের ধ্যান করেছেন।
নিজের কাজ সম্পর্কে এই সেমিনার লিডার বলেন, কাজের মাধ্যমে মানুষকে শেখাই- ‘কিভাবে একজন মানুষ তার নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে, ইম্পসিবলকে কিভাবে পসিবল করতে পারে’।
ইন্স্যুরেন্স ও কর্পোরেট সেক্টর নিয়ে সৌমিত্র বলেন, যারা সেল করে, আমি কিভাবে ভালো সেলম্যান হতে পারি। কাস্টমারের অভিযোগ কিভাবে সমাধান করবো, এগুলো আমরা শেখাই। একজন ডাক্তার যেভাবে রোগীদের ট্রিটমেন্ট করে, সেভাবেই আমরা আমাদের ক্লায়েন্টদের শেখাই।
তিনি বলেন, অনেকেই অনেক কিছু সাফার করে, কিন্তু কাঙ্খিত রেজাল্ট পায় না। কারণ অনেকেই রেজাল্ট নিয়ে বলতে চায় না। তাদের দম নেই। কিন্তু আমরা দম নিয়ে বলি রেজাল্ট দিব। রেজাল্ট দিতে পারি কারণ প্রসেস তৈরী করতে পারি। এজন্য আমরা সবাইকে বলি প্রসেস তৈরী করুন।
বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের এক সময়ের এই মোটিভেটর কথা বলেন সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পারফরম্যান্স নিয়ে। বলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ অনেক ভালো করবে, এটা আমি ধরেই নিয়েছিলাম। তারা সম্প্রতি অনেকগুলো ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হতে হলে আগে বিশ্বাস করতে হবে। আর বিশ্বাস করতে হলে দ্বিধা-দ্বন্দ্বকে ঠাঁই দেয়া যাবে না। ক্রিকেটারদের কোয়ালিটি নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
টিমের পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস থাকলে, ওয়ান টিম-ওয়ান ড্রিম থাকলে জয় পাওয়া সম্ভব। কোচ এবং ম্যানেজমেন্টকে খেলোয়াড়দের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আর মনে রাখতে হবে আমরা পতাকার প্রতি দায়বদ্ধ। তাহলে ভালো করা সম্ভব।
ই-কমার্সে তারুণ্যের সাফল্য কিভাবে আসবে-এমন প্রশ্নের জবাবে সৌমিত্র বলেন, তরুণ-তরুণীদের নতুন আইডিয়া নিয়ে ভাবতে হবে, কাজ করতে হবে। গ্রাহকের প্রধান ৫/১০টি সমস্যা জানতে হবে। সেগুলো সমাধান করতে পারলে ভালো করতে পারবে। তরুণ উদ্যোক্তারাই কিন্তু আমাদের ভবিষ্যত।এদেরকে সঠিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ইন্টারভিউ
‘সিমেন্ট রপ্তানির জন্য দরকার পলিসি সাপোর্ট’

আমাদের দেশে সিমেন্ট চাহিদার তুলনায় বেশি উৎপাদন হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ থেকে সিমেন্ট রপ্তানি করা সম্ভব। আর এর জন্য সরকারের পলিসি সাপোর্ট থাকা দরকার বলে মনে করেন বেঙ্গল সিমেন্টের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) আসাদুল হক সুফিয়ানী। সম্প্রতি অর্থসংবাদকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি সিমেন্ট খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে সিমেন্ট খাতে সম্পৃক্ত রয়েছেন। অর্থসংবাদের পাঠকদের জন্য আলোচনার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।
অর্থসংবাদ: আপনার দৃষ্টিতে দেশের সিমেন্ট খাতের অবস্থা কি?
সুফিয়ানী: গত ১০ বছরে আমাদের দেশের সিমেন্ট শিল্প অনেক এগিয়েছে। বাংলাদেশের সিমেন্টের মান অনেক উন্নত হয়েছে।একই সঙ্গে আমাদের দেশে সিমেন্ট উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে এখন সিমেন্টের চাহিদার পরিমান ৩২ মিলিয়ন মেট্টিক টন, সেখানে উৎপাদন হচ্ছে ৫৭ মিলিয়ন মেট্টিক টন।ফলে এখন দেশের চাহিদা পূরন করে সিমেন্ট রপ্তানি করাও সম্ভব। তবে সেটার জন্য সরকারের পলিসি সাপোর্ট দরকার।
অর্থসংবাদ: রপ্তানির জন্য কি ধরনের পলিসি সাপোর্ট দরকার?
সুফিয়ানী: আমাদের দেশের সিমেন্ট শিল্পের কাঁচামাল সম্পূর্ন আমদানি নির্ভর। কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ছাড়সহ বিশেষ সুবিধা দেয়া হলে এই খাতের রপ্তানি সম্ভাবনা অনেক। এর ফলে সিমেন্ট শিল্পের বিকাশ হবে। এ শিল্প বড় হলে নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। তবে এর আগে আমাদের পলিসি মেকিং ডিপার্টমেন্ট থাকা দরকার। বিশেষ করে ইন্ডাষ্ট্রির জন্য এখন খুবই গুরুত্বপূর্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি। এ ডিপার্টমেন্ট থাকলে চাহিদার তুলনায় একই খাতের অতিরিক্ত কারখানা গড়ে উঠত না। তাহলে অসম প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হতো না। পলিসি মেকিং ডিপার্টমেন্ট থাকলে সব কিছুতেই সঠিক প্রয়োগ হবে। বিশেষ করে যে কোন খাতের জন্য সঠিক গবেষনার ভিত্তিতে তার জন্য সব রকমের সাপোর্ট এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা পাওয়া সহজ হবে।
অর্থসংবাদ: পোষাক শিল্পের মত সিমেন্ট খাতেও কি প্রণোদনা দরকার আছে বলে মনে করেন ?
সুফিয়ানী: এই খাতেও বিশেষ প্রণোদনা দরকার, বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার এসোসিয়েশন থেকে আমরা প্রণোদনার জন্য অনেকবার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু সিমেন্ট শিল্পের জন্য দেয়া হয়নি। আমি মনে করি আমরা অর্থনীতি সচল রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছি। তাই এ শিল্পকে সরকার গুরুত্ব দেয়া দরকার।
অর্থসংবাদ: লকডাউনের মধ্যে আপনারা কিভাবে ব্যবসা চালু রেখেছেন?
সুফিয়ানী: লকডাউনের মধ্যেও কিন্তু আমাদের ব্যবসা চালু ছিল, পন্য ডেলিভারি হয়েছে। তবে ঐ সময় ব্যবসা স্লো ডাউন ছিল। প্রায় ৩৫ শতাংশ ব্যবসা ডাউন ছিল কিন্তু, পরের মাসেই সেটা আবার অনেকটা ঠিক হয়ে গেছে। ইন্ডাস্ট্রিতে করোনা পরিস্থিতিতে অন্যরা কর্মী ছাটাই করলেও আমরা কোনা ছাটাই করিনি। আমরা মনে করি এমপ্লয়ীদের জন্য একটা দায়িত্ববোধ থাকে, এটা কারোই করা উচিত না। কয়েকটা মাসের সমস্যার জন্য তো আর যুগ যুগ ধরে চলা একটা কোম্পানি বন্ধ থাকতে পারে না। কোম্পানি বন্ধ ছিল তার জন্য বেতন কমে যাবে সেটা তো হতে পারে না। এই ক্ষেত্র আমরা চিন্তা করছি বিপদের সময় যখন কর্মীরা কাজ করছে, যারা ইন্ডাস্ট্রির জন্য কন্ট্রিবিউট করলো, তাদের এই দু:সময়ে বেতন কমিয়ে দেওয়া আমরা যুক্তি যুক্ত মনে করিনি। যেহেতু কোম্পানির জন্য তারা তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছে এবং কোম্পানিকে এগিয়ে নিয়েছে, সে কারণে আমরা তাদের বেতন বোনাস সবকিছুই ঠিক মতো দিয়েছি।
অর্থসংবাদ: বেঙ্গল সিমেন্টের বিশেষত্ব কি? বড় কোন প্রজেক্টে আপনাদের সিমেন্ট ব্যবহার হচ্ছে কি?
সুফিয়ানী: অবশ্যই আমরা ইউনিক, ৩৫টি সিমেন্ট কোম্পানির মধ্যে বেঙ্গল সিমেন্টের আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে।বেঙ্গল গ্রুপের যে কোনা প্রোডাক্টই নাম্বার ওয়ান, গুনে এবং মানে। যে কারনে ৩৫ টি কোম্পানির মধ্যে আমরা মাত্র এক বছরেই ৭ম অবস্থানে চলে এসেছি। মান নিয়ন্ত্রনে বিশ্বমানের কাঁচামাল ব্যবহার হয় বেঙ্গল সিমেন্টে। তাই সরকারি ও বেসরকারি অনেক বড় বড় প্রজেক্টে বেঙ্গল সিমেন্ট ব্যবহার হচ্ছে। যেমন মেট্টরেল প্রজেক্টে, এমইএস,এমআরটি, টাঙ্গাইল-রংপুর হাইওয়ে এবং বিএসএমএমইউ সহ রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে বেঙ্গল সিমেন্ট ব্যবহার হচ্ছে। বেঙ্গল সিমেন্ট এর দিনে ৪ হাজার মেট্টিক টন সিমেন্ট উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন ৮০ হাজার ব্যাগ সিমেন্ট উৎপাদন হচ্ছে।
এছাড়াও আমাদের বিপনন সিস্টেমেও কিছুটা ভিন্নতা আছে, যেহুতে আমরা লেট এন্ট্রি এবং সবচেয়ে নতুন সিমেন্ট কোম্পানি। সেহেতু আমরা বাংলাদেশে ১৪৭ জনকে নতুন এই প্রফেশনে নিয়োগ দিয়েছি। যারা একদমই ফ্রেস, পড়ালেখা শেষ করেছে মাত্র তাদেরকে আমরা সুযোগ দিয়েছি। কারণ নতুন ছেলেদেরকে আনার উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের মধ্যে একটা উদ্দীপনা থাকে, যেহেতু ইন্ডাস্ট্রিকে কিছু দিতে পারে। সেই সুযোগটা আমরা দিয়েছি এবং তাদেরকে দিয়ে আমরা মার্কেটটা শুরু করেছি। ফলে ৪.৫ শতাংশ আমাদের মার্কেট শেয়ার বর্তমানে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ইন্টারভিউ
পুঁজিবাজার স্বাভাবিক হলে ফ্লোর প্রাইজ উঠানো হবে

ফ্লোর প্রাইজ সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম অর্থসংবাদকে বলেন, এখন ফ্লোর প্রাইজ তুলে নিলে সাধারন বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাই মার্কেট যখন স্বাভাবিক হবে, সুস্থ হবে তখন ফ্লোর প্রাইজ তুলে নিব। মার্কেট যখন উঠতির দিকে থাকবে, ডিমান্ড সাইড শক্তিশালী হলে ফ্লোর প্রাইজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তখন। তবে ফ্লোর প্রাইজ সত্যিই মার্কেটকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে, মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে বাধা দেয়। কিন্তু তাই বলে তো মানুষের সঞ্চয়কে ক্ষতির মধ্যে ফেলতে পারিনা! অন্যের ক্ষুদ্র বিনিয়োগ নষ্ট করা উচিত নয়। সম্প্রতি অর্থসংবাদকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি পুঁজিবাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এস এম জাকির হোসাইন।
দেশের পুঁজিবাজারে কি ধরনের পরিবর্তন আনতে চান ? জানতে চাইলে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন,বাজারে নতুন নতুন প্রোডাক্ট নিয়ে আসবো। সম্পূর্ন প্ল্যাটফর্মকে আইটি বা তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক করতে চাই। ২৪ ঘন্টা মার্কেট চলবে ব্যাংকের মত। ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে মানুষ যেমন প্রয়োজন মত যখন খুশি টাকা তুলতে পারে, ঠিক শেয়ারবাজার থেকেও যেন মানুষ যখন খুশি লেনদেন করতে পারে। পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে থেকে আমাদের মার্কেটের ট্রেড করতে পারবে। আমরা পুরো বাজারকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসবো। যাতে এখানে কোন দূর্নীতি না হতে পারে সেজন্য সবকিছুতে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার মধ্যে নিয়ে আসতে চাই। আর এ জন্য আইটি বা প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব অনেক। বর্তমান উন্নত বিশ্ব প্রযুক্তি নির্ভর আর আইটি মানেই কিন্তু ট্রান্সপারেন্ট।
তিনি আরও বলেন, আমরা আরও কিছু পরিবর্তন নিযে আসবো, যেমন পুঁজিবাজারের উপর যেন মাস্টার্স করতে পারে সেজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অ্যাপিলিয়েশনে যাবো। তখন এই লোকগুলো যখন মার্কেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে তখন অনেক পরিবর্তন আসবে।
আমাদের দেশে মিউচুয়াল ফান্ডের অবস্থা ভালো না, তাহলে বন্ড মার্কেট শক্তিশালী করা কি সম্ভব? জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই সম্ভব। আমাকে একটা বছর সময় দেন, দেখবেন আমি কি করি। দেখেন মার্কেট ক্যাপ কোথায় যায়। আর মানুষকে বিনিয়োগ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলে তখন মানুষ বুঝবে যে কেন এবং কোন মিউচুয়ার ফান্ডে বিনিয়োগ করতে হবে। আর আমরাও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে শক্তভাবে দেখবো কোন কোন মিউচুয়ার ফান্ড ঠিকমত লভ্যাংশ দিচ্ছেনা। কর্পোরেট গর্ভনেন্সের মধ্যে নিয়ে আসবো তাদেরকে।
দেশের অর্থনীতির তুলনায় পুঁজিবাজারের আকার অনেক ছোট এবং এর অবদান অর্থনীতিতে খুবই কম। দেশের অর্থনীতিতে পুঁজিবাজার কিভাবে ভুমিকা রাখবে? এবিষয়ের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের অবদান বাড়াতে হলে এর আকার বড় করতে হবে বলেই বন্ড মার্কেটকে শক্তিশালী করতে হবে। আর সে জন্য ইতিমধ্যেই ৪ টি ব্যাংক কে পারপিচুয়াল বন্ডে ১৬ শত কোটি টাকা দিয়েছি। আমি যদি ৫০ টি ব্যাংক কে ৪০০ কোটি টাকা করে পারপিচুয়াল বন্ডে দিয়ে দেই, তাহলে এখানেই তো ২০ হাজার কোটি টাকা।বন্ড মার্কেট শক্তিশািলী হলে মানুষ ব্যাংকে টাকা না রেখে ব্যাংকের বন্ডে বিনিয়োগ করবে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, কোভিড-১৯ এর ফলে দেশের অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে, তার থেকে দেশের অর্থনীতি টার্ন অ্যারাউন্ড করা শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই আমাদের পুঁজিবাজারে লেনদেন এবং সূচক বাড়ছে। এটার ধারাবাহিকতা রক্ষা হলে অল্প সমেয়ের মধ্যেই আমাদের বাজার স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কাজ করতে গিয়ে কোন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, মার্কেটে নতুন প্রোডাক্ট নিয়ে আসা এবং ভিন্নতা ও নতুনত্ব আনা চ্যালেঞ্জ। নতুন মার্কেট তৈরী করা, ইক্যুইটি মার্কেটকে বন্ড এবং ডেরিভেটিভস এর দিকে নিয়ে যাওয়া। দেখুন গতানুগতিক ধারায় চলতে গেলে কোন চ্যালেঞ্জ নেই, ৯ টা থেকে ৫ টা অফিস করলে, ফাইলে সই করলাম , বাসায় চলে গেলাম। তাতে কোন চ্যালেঞ্জ নেই, কিন্তু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে গেলে জ্যালেঞ্জ আসবেই। মার্কেটের প্রয়োজনে কাজ করতে গেলে অনেক বাঁধা আসবেই।
তিনি আরও বলেন, মানুষকে ফাইন্যান্সিয়াল লিট্যারাসিতে শিক্ষিত করতে হবে। মানুষ এখনও এই বাজার ভালোভাবে চিনেন না, শেয়ার স্টক কি ? সেটা যদি মানুষকে না চিনাতে পারি, তাহলে মানুষ কিভাবে এখানে আসবে? সে তো ব্যাংক আর পোষ্ট অফিসেই যাবে। ঘরে ঘরে ফাইন্যান্সিয়াল লিটারিসি পৌছে দিতে হবে। তাহলে মানুষ বুঝবে কেন শেয়ারে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবে এবং কেন শেয়াবাজারে আসতে হবে। এজন্য আমরা দু’টো ইনষ্টিটিউটকে চ্যাঞ্জ করে ফেলছি, যারা সারাক্ষন বিও অ্যাকাউন্ড হোল্ডারদেরকে ট্রেনিং করাবে অনলাইনে এবং অফ লাইনে। বন্ড, ডেরিভেটিভস সহ নতুন প্রোডাক্ট সম্পর্কে মানুষকে ট্রেনিং দিবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ইন্টারভিউ
তরুণ প্রজন্ম কোন অংশেই পিছিয়ে নেই
আমাদের দেশের তরুনরা এখন কোন অংশেই পিছিয়ে নেই, অনেক সারা জাগানো সাফল্য রয়েছে আমাদের বর্তমান তরুন প্রজন্মের। আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গন, গবেষনা,ব্যসায়িক ও সামাজিক সমস্যা সমাধানে ইনোভেটিভ আইডিয়া তৈরী করে বিষ্ময়কর সাফল্য অর্জন করছে আমাদের তরুনরা। যা সত্যিই অবাক করার মত। বিগত সময়ের তুলনায় বর্তমান সময়ে তরুনরা অনেক এগিয়েছে। তরুনপ্রজন্মের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে সম্প্রতি অর্থসংবাদের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে এসব মন্তব্য করেন তরুণপ্রজন্মের প্রতিনিধি ও সমাজকর্মী এবং তরুন রাজনীতিবিদ শাফি মোদ্দাসের খান (জ্যোতি)। অধিকাংশ মানুষ তাকে জ্যোতি নামেই চিনেন। তিনি একই সঙ্গে একজন তরুন ব্যবসায়ীও। সাক্ষাতকারের চুম্বক অংশ অর্থসংবাদের পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো।
অর্থসংবাদ: বর্তমান তরুনপ্রজন্ম কোন দিকে যাচ্ছে, সম্ভাবনা কতটুকু?
জ্যোতি: আমাদের দেশের তরুনদের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই তরুণ। যার কারনে বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দেশ বাংলাদেশ। গত ৮ থেকে ৯ বছর সময়ে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে, ফলে দেশের তরুণরাও তাদের সৃজনশীল আইডিয়া বাস্তবায়ন করে সাফল্য পাচ্ছে। আমাদের দেশে তরুনরা প্রযুক্তি তথা আইটিতে এখন বেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এর জন্য আমাদের তরুনদের আইকন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের অনেক অবদান রয়েছে। যার কারনে গোটা দেশের তরুনরা তাকে মনে প্রানে ভালোবাসে।
অর্থসংবাদ: বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কোন প্রভাব তরুনপ্রজন্মের উপর পড়বে কি?
জ্যোতি: অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে উজ্জিবীত হয়ে দেশের তরুন প্রজন্ম আরো এগিয়ে যাবে। কারন তরুণপ্রজন্ম বঙ্গবন্ধুকে আদর্শ মনে করে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে সরকার ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাবের ফলে তরুণরা কর্মস্পৃহা পাবে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে দলীয় এবং ব্যাক্তিগতভাবে অনেকেই নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। আমি নিজেও “চিরঞ্জীব মুজিব” নামের টেক মুভিতে একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। এটা তরুনদের উজ্জীবিত করবে। এই মুভির স্ক্রীপ্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে দেখে পছন্দ করেছেন।
অর্থসংবাদ: ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে তরুণদের বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কি?
জ্যোতি:অন্যান্য সেক্টরের মত ব্যবসা-বানিজ্যেও বর্তমান তরুন প্রজন্ম অনেক ভালো করছে। ব্যবসা মানেই হচ্ছে সেবা দেয়া, আর সেক্ষেত্রে তরুনরা পণ্যের গুনগত মান বজায় রেখে ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী সেবায় নতুনত্ব নিয়ে আসছে। প্রগতিশীল চিন্তাভাবনায় তরুণরা এগিয়ে যাচ্ছে ব্যবসা বানিজ্যেও।
অর্থসংবাদ: সাম্প্রতিক সময়ে তরুনরা রাজনীতিতে খুবই আগ্রহী, এটাকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
জ্যোতি: বর্তমানে উচ্চশিক্ষিত অনেক তরুন রাজনীতিতে আসছে, যেটা খুবই ইতিবাচক দিক। কারন বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে সুস্থ্য পরিবেশ বিরাজ করছে। যার ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল রয়েছে। ইতিবাচক মনোভাব থাকলে দেশের রাজনীতিতে ভালো পরিবর্তন আসবে।বর্তমানে তরুণরা রাজনীতিতেও ভালো করছে। বিগত ১০ থেকে ১৫ বছর আগেও মানুষ রাজনীতিকে ভালোভাবে দেখতো না। ফলে তরুনদেরও এক্ষেত্রে আগ্রহ ছিল কম। কিন্তু বর্তমান সময়ে উচ্চ শিক্ষিত তরুনরা রাজনীতিতে আসছে এবং অত্যন্ত ভালো করছে। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীপরিষদেও বেশ কয়েকজন তরুন মন্ত্রী রয়েছেন। এছাড়াও ঢাকা সিটি নির্বাচনেও দেখা যাচ্ছে সবাই তরুন এবং শিক্ষিত। বর্তমান সরকার তরুনদের এগিয়ে নিতে যেভাবে কাজ করছে তার ধারাবাহিকতা থাকলে আমাদের দেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিনত হতে বেশি সময় লাগবে না। আর রাজনীতিকে হীনভাবে দেখার সুযোগ নেই, রাজনীতি একটি পবিত্র কাজ। কারন রাজনীতির মাধ্যমেই দেশে এবং দেশের সেবা করা যায়। তাই মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন এসেছে। নিজের স্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থকে বড় হিসেবে দেখতে হবে, আর এক্ষেত্রে তরুনরা তুলনামূলকভাবে এগিয়ে রয়েছে।
অর্থসংবাদ: বর্তমান তরুণপ্রজন্মের মধ্যে কি ধরনের সমস্যা রয়েছে বলে আপনি মনে করেন ?
জ্যেতি: দেশের তরুণদের সম্ভাবনার সঙ্গে সঙ্গে কিছু সমস্যাও রয়েছে। বিশেষ করে মাদক বর্তমান সময়ে একটা বড় সমস্যা। সঙ্গ দোষে তরুনদের একটা বড় অংশ মাদক সেবনের দিকে ঝুকে পড়েছে, তরুনদের মাঝে মাদক ঢুকে গেছে। অনেক সময় পরিবেশের কারনে, অথবা হতাশার কারনে তরুনরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমান সরকার মাদক রোধে খুব চমৎকারভাবে কাজ করছে। তবে দেশের তরুন প্রজন্মের সামনে মাদকের ক্ষতিকর দিক গুলো সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারলে এ সমস্যা থাকবে না। বিগত সময়ের তুলনায় বর্তমানে মাদক অনেকটা রোধ হয়েছে, প্রশাসন আরও কঠোর হলে মাদক রোধ হবেই। আমরা সাধারনত নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে যেভাবে প্রচার করি, সেভাবে কিন্তু ভালো কাজগুলোকে প্রচার করা হয় না। তাই তরুনদের ভালো কাজগুলোকে প্রচার করতে হবে। তরুনদের জন্য বর্তমান সরকার অনেক ভালো ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলো প্রচার করা উচিত।
অর্থসংবাদ: সফলতার জন্য তরুণদের জন্য আপনার পরামর্শ কি?
জ্যোতি: সফলতার জন্য প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে। আর এখন নেটওয়ার্কিং এবং সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। তাই ইনোভেটিভ আইডিয়া এবং ইচ্ছা থাকলে ফান্ড বা অর্থনৈতিক সমস্যা কোন বিষয়ই না। হতাশ হলে চলবে না, হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না, প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। হতাশা মানুষের জীবনে থাকবেই, একসময় আমারও ছিল। হতাশা কাটিয়ে উঠতে দৃঢ় মনোবল থাকতে হবে। ব্যার্থতার থেকেই সফলতার জন্ম, তাই সফলতার জন্য লেগে থাকতে হবে।
শাফি মোদ্দাসের খান (জ্যোতি)
ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সাভার রিফ্র্যেক্টরিজ লিমিটেড
কার্যনির্বাহী সদস্য, তেঁজগাও থানা আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর