এগ্রিবিজনেস
সারের কৃত্রিম সংকট রোধে ডিলারদের ৫৭ লাখ টাকা জরিমানা: কৃষিমন্ত্রী

সারের কৃত্রিম সংকট ও কারসাজি রোধে সারা দেশে আগস্ট মাসে ৩৮৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত ৩৮৩জন ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীকে ৫৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বিকালে সচিবালয়ে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত পাম ভিয়েট চিয়েনের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, শুধু জরিমানা নয়, সার কারসাজিতে জড়িত ডিলারদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। লাইসেন্স দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। সেজন্য, লাইসেন্স বাতিলের জন্য তাদের নাম শিল্প মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সারের মজুতে কোন সমস্যা নেই। গুদামে পর্যাপ্ত সার রয়েছে। একইসাথে, গত বছরের তুলনায় এ বছর বরাদ্দও বেশি দেয়া হয়েছে। তারপরও কোথাও কোথাও সারের সংকটের কথা শুনা যাচ্ছে। এটি হতে পারে না। ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি মাঠ প্রশাসন বা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কারো গাফিলতি পাওয়া গেলে-তাদেরকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এমওপি সার প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান,আগস্ট মাসে আজকে পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে আমদানিকৃত ১ লাখ ৮০ হাজার টন এমওপি সার দেশে পৌঁছেছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ১ লাখ ১৬ হাজার টন সার দেশে পৌঁছবে। অন্যদিকে, সেপ্টেম্বরে ৫১ হাজার টন ও অক্টোবরে ৭০ হাজার টন এমওপি সারের চাহিদা রয়েছে। ফলে চাহিদার চেয়ে মজুত অনেক বেশি থাকবে।

উল্লেখ্য, চাহিদার বিপরীতে দেশে সব রকমের সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। বর্তমানে (২৫ আগস্ট) ইউরিয়া সারের মজুত ৬ লাখ ৫৬ হাজার মেট্রিক টন, টিএসপি ৩ লাখ ৯৪ হাজার টন, ডিএপি ৮ লাখ ২৩ হাজার টন, এমওপি ২ লাখ ৭৩ হাজার টন। সারের বর্তমান মজুতের বিপরীতে আমন মৌসুমে (আগস্ট থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত) সারের চাহিদা হলো ইউরিয়া ৬ লাখ ১৯ হাজার টন, টিএসপি ১ লাখ ১৯ হাজার টন, ডিএপি ২ লাখ ২৫ হাজার টন, এমওপি ১ লাখ ৩৭ হাজার টন। বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায়ও সারের বর্তমান মজুত বেশি।
চালের দাম শিগগিরই কমবে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, ভিয়েতনাম থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল আনা হচ্ছে। জিটুজি ভিত্তিতে এ চাল আনা হচ্ছে। চাল আসতে ১৫-২০ দিন লাগতে পারে। এছাড়া, রাশিয়া থেকে ৩ লাখ টন গম আনা হচ্ছে। অন্যদিকে, দেশে প্রায় ১৮ লাখ টন খাদ্য মজুত আছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজিতে চাল দেয়া হবে। এছাড়া, টিসিবির মাধ্যমে ১ কোটি পরিবারকে ৩০ টাকা কেজিতে চাল বিতরণ করা হবে। ওএমএসেও চাল বিক্রি করা হবে। সব মিলিয়ে চালের দাম শিগগিরই কমবে।
এর আগে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূতের সাথে বৈঠকে দুদেশের কৃষি সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়। ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত পাম ভিয়েট চিয়েন বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে কৃষি সহযোগিতার জন্য ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করার প্রস্তাব প্রদান করেন। তিনি বলেন, ভিয়েতনাম ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে কৃষি সহযোগিতা রয়েছে। নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতার ফলে ভিয়েতনামের কৃষি উন্নত হয়েছে। যেহেতু তিনটি দেশই ডেল্টা, কাজেই তাদের পারস্পরিক সহযোগিতায় সবপক্ষই উপকৃত হবে।
ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত জানান, কাজুবাদাম রপ্তানিতে ভিয়েতনাম বর্তমানে প্রথম এবং কফি রপ্তানিতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। কাজুবাদাম-কফি রপ্তানির ৫০% সে দেশে উৎপাদিত হয়, বাকীটা ভারত ও আফ্রিকার দেশসমূহ থেকে এনে প্রক্রিয়াজাত করা হয়।
বাংলাদেশে কাজুবাদাম ও কফির চাষ সম্প্রসারণে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী এক্ষেত্রে ভিয়েতনামের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন,গত ২ বছরে আমরা ২০ লাখ কাজুবাদামের চারা কৃষকদেরকে দিয়েছি। ইতোমধ্যে এসব গাছে কাজুবাদামের ফলন শুরু হয়েছে। আশা করছি, কাজুবাদাম উৎপাদনে বাংলাদেশও ভাল করবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এগ্রিবিজনেস
আমনের উৎপাদন বাড়াতে ৩৩ কোটি টাকার প্রণোদনা

চলতি বছর আমনের আবাদ ও উৎপাদন বাড়াতে ৩৩ কোটি ২০ লাখ টাকার প্রণোদনা দেয়া হবে। সারা দেশের ৪ লাখ ৯০ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এ প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে বীজ ও সার পাবেন।
রবিবার (২৮ মে) কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রণোদনার আওতায় একজন কৃষক এক বিঘা জমিতে চাষের জন্য রোপা আমন ধানের উচ্চফলনশীল (উফশী) জাতের প্রয়োজনীয় ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে পাবেন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বাজেট কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা এবং বীজ ও চারা খাত থেকে এ প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত সরকারি আদেশ ইতোমধ্যে জারি হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে শীঘ্রই এসব প্রণোদনা বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দুই দেশ থেকে ৩৪৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার

৩৪৬ কোটি ৭১ লাখ ৯৩ হাজার ২০০ টাকা ব্যয়ে মরক্কো ও কানাডা থেকে ৮০ হাজার মেট্রিকটন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় এই সার কেনা হবে।
বুধবার (২৪ মে) অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এই সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহমুদ খান সাংবাদিকদের বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কোর ওসিপি, এস.এ থেকে তৃতীয় লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার ১২০ কোটি ৩ লাখ ৭৯ হাজার ২০০ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে পঞ্চম লটে ৫০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার ২২৬ কোটি ৬৮ লাখ ১৪ হাজার টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এগ্রিবিজনেস
রাজশাহীতে আমের কেজি দুই টাকা

দমকা হাওয়ায় ঝরে পড়া আম রাজশাহীতে দুই টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সোমবার (২২ মে) সকালে বাঘা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে দুই টাকা কেজি দরে আম কেনাবেচা হয়েছে। প্রতি মণ আম বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা।
এর আগে রোববার (২৩ মে) রাতে রাজশাহীতে বৃষ্টির সঙ্গে ঝড় হয়েছে। এতে অনেক আম পড়েছে। সকালে আমগুলো স্থানীয় হাট-বাজার থেকে ব্যবসায়ীরা আচারের জন্য কিনে নেন।
বাঘার আড়ানী স্টেশন, পৌরসভার গোচর, চকরাজাপুর, নূর নগর, ঝিনামোড়ে দুই টাকা কেজি দরে ঝরে পড়া আম কেনাবেচা হয়েছে। তবে গ্রামের মোড়গুলোর চেয়ে বানেশ্বর হাটে কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ঝরে পড়া আম।
আম ব্যবসায়ীরা জানান, বাঘায় প্রচুর আম উৎপাদন হয়ে থাকে। গতকাল রোববার রাতের ঝড়ে অনেক আম পড়ে গেছে। সেই আমগুলো বাগান মালিক ও স্থানীয়রা কুড়িয়ে বিক্রি করছেন। গ্রামের মোড়গুলোতে দুই টাকা কেজি দরে আম বিক্রি হচ্ছে। এখন থেকে ব্যবসায়ীরা আমগুলো কিনে ঢাকার বিভিন্ন কোম্পানিতে পাঠাচ্ছে।
অপরদিকে বানেশ্বর হাটে ভালো আমের সঙ্গে উঠেছে ঝরে পড়া আম। এই হাটে ঝরে পড়া আম বিক্রি হচ্ছে ৪ থেকে সাড়ে ৪ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ যে ব্যবসায়ীরা গ্রামের মোড়গুলো থেকে আম কিনেছেন তারাই মূলত বানেশ্বর হাটে বিক্রি করছেন। এছাড়া কিছু আম বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধি সরাসরি ট্রাকে ঢাকায় পাঠাচ্ছেন।

বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, বাঘায় ১৫ লাখের বেশি আম গাছ রয়েছে। সেখান থেকে দুটি করে আম পড়লেও ৩০ লাখ আম। গতকাল রাতে ঝড় হয়নি, তবে দমকা হাওয়া বইছে। এতে কিছু আম পড়েছে। কিছু দিন আগে প্রচণ্ড রোদ ও খরা গেছে। এতে করে আমের বোঁটা শুকিয়ে ছিল। ফলে বাতাসে কিছু আম ঝরে গেছে। তা খুব বেশি নয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এগ্রিবিজনেস
পদ্মার এক ইলিশের দাম ৯৮০০ টাকা

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় একটি ইলিশ ৯ হাজার ৮০৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গোয়ালন্দে পদ্মা নদী থেকে ধরা পড়া মাছটির ওজন হয়েছিল ২ কেজি ৫৮০ গ্রাম।
শনিবার সকালে দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় জেলের নৌকা থেকে ইলিশটি কেনেন ঘাটের ব্যবসায়ী সম্রাট শাহজাহান শেখ।
জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে পদ্মার রাজবাড়ী সীমান্তবর্তী এলাকা ফরিদপুরে দেবুপুর চরে জাহাঙ্গীর হালদারের জালে মাছটি ধরা পড়ে। ব্যবসায়ী সম্রাট শাহজাহান শেখ মাছটি ৩ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে ৯ হাজার ২৮৮ টাকায় কিনে নেন। এরপর ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে ৩ হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরে মোট ৯ হাজার ৮০৪ টাকায় মাছটি বিক্রি করেন।
সম্রাট শাহজাহান শেখ বলেন, ‘অনেকদিন পরে বড় এই ইলিশ মাছটি পেয়েছি। বড় এই মাছটি পেয়ে আমার আজ খুবই ভালো লাগছে। মাছটি বিক্রি করে আমার কিছু টাকা লাভও হয়েছে।’
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এগ্রিবিজনেস
লবণাক্ত জমিতে ধান উৎপাদনের রেকর্ড

উপকূলীয় জেলা বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের চরগাছিয়া গ্রামের একটি মাঠে ২০০ বিঘা জমি প্রথমবারের মতো বোরো চাষের আওতায় এসেছে। আগের বছরগুলোতে এই সময়ে পতিত থাকত। এ বছর মাঠজুড়ে চাষ করা হয়েছে ব্রি-৬৭, ৭৪, ৮৯, ৯২, ৯৯ ধান ও বঙ্গবন্ধু-১০০ ধান। নমুনা শস্য কর্তনে রেকর্ড ফলন পাওয়া গেছে। প্রতি বিঘাতে ব্রি ধান ৮৯ হয়েছে ৩৭ মণ, ব্রি-৬৭ হয়েছে ২৮ মণ, ব্রি-৭৪ পাওয়া গেছে ২৮ মণ, ব্রি-৯৯ হয়েছে ২৮ মণ ও ব্রি-৯২ হয়েছে ৩৩ মণ।
বুধবার (৩ মে) দুপুরে নমুনা শস্য কর্তনে এই রেকর্ড ফলন পাওয়া গেছে বলে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের উদ্যোগে এবং উপকূলীয় শস্য নিবিড়িকরণ কর্মসূচির আওতায় এই ২০০ বিঘা (২৭ হেক্টর) জমিতে ব্রি-৬৭, ব্রি-৭৪, ব্রি-৮৯, ব্রি-৯২, ব্রি-৯৭ ও ব্রি-৯৯ জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। ৩০০ জন কৃষককে বীজ, সেচ, সারসহ সকল উপকরণ বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। খাল থেকে পানি এনে সেচ সুবিধা দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় পরামর্শও দেয়া হয়েছে তাদের।
নমুনা কর্তন অনুষ্ঠানে ব্রি মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান মো: মনিরুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের বরিশালের অতিরিক্ত পরিচালক শওকত ওসমান, ব্রি বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের কাজী শিরিন আখতার জাহান, বরগুনার উপ-পরিচালক সৈয়দ জোবায়দুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর বলেন, ধানের অবিশ্বাস্য ফলন হয়েছে। দেশের আর কোথাও বিঘাতে ৩৬ মণ ফলন পাইনি। অথচ উপকূলীয় এলাকার এ রকম জমি পতিত থাকে, যা আমাদের জন্য বিরাট ক্ষতির।

তিনি বলেন, এ বছর সম্ভাবনাময় পাঁচ থেকে ছয়টি জাত চাষ করেছি। যেগুলোর ফলন তুলনামূলক বেশি পাওয়া যাবে, আগামী বছর সেটির চাষ করা হবে। এত ফলন পাওয়ায় কৃষকেরা খুবই খুশী। তারা জানান, সামনের দিনগুলোতে ধান চাষ চালু রাখবেন। পানির সমস্যার কথা তুলে তারা আরো জানান, পানি পেলে এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখবেন না।
উল্লেখ্য, দেশের প্রায় ২৫ শতাংশ এলাকা হচ্ছে উপকূলীয় এলাকা। বরিশাল অঞ্চলে বিশেষত বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী ও বরিশাল জেলায় শুকনো মওসুমে অনেক জমি পতিত থাকে। লবণাক্ততার কারণে বেশিরভাগ এলাকায় সারা বছরে একটি ফসল হয়। আমন ধান তোলার পর বছরের বাকি সময়টা মাঠের পর মাঠ জমি অলস পড়ে থাকে। এছাড়া লবণ পানির ভয়াবহতার কারণে প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে উপকূলীয় এলাকায় ৫ লাখ হেক্টরেরও বেশি জমি অনাবাদি থেকে যায়। এর একটি কারণ হচ্ছে সেচ সুবিধার অভাব। যদিও এই অঞ্চলে বড় বড় নদী যেমন তেতুলিয়া, বলেশ্বর, বিষখালী, পায়রা, কীর্তনখোলাসহ বিভিন্ন নদীতে মিষ্টি পানির অনেক প্রাপ্যতা রয়েছে। সেজন্য, সেচ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে ‘উপকূলীয় শস্য নিবিড়িকরণ’ নামে একটি কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বোরো ২০২২-২৩ মওসুমে বরিশাল অঞ্চলে প্রায় ৩৫০০ বিঘা (৪৭০ হেক্টর) জমিতে ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল যেমন ব্রি-৭৪, ব্রি-৮৯ ও ব্রি-৯২ এবং লবনসহনশীল জাত যেমন ব্রি-৬৭, ব্রি-৯৭ ও ব্রি-৯৯ জাতের ব্লক প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুসারে এই বছর বরগুনা সদর উপজেলায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে যা গত বছরের তুলনায় ৫০০ হেক্টর বেশি।
অর্থসংবাদ/এসএম