শেয়ারবাজারে আস্থার সংকটে বিনিয়োগকারীরা

নগদ লভ্যাংশ বিতরণের নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ ব্যাংক তুলে নিলেও তার সুফল ব্যাংকের শেয়ার দামে পড়েনি। বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকটের কারণে আগের মতোই সোমবারও প্রায় সবকটি ব্যাংকের শেয়ার দাম ফ্লোর প্রাইসে (দাম কমার সর্বনিম্ন সীমা) আটকে রয়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সার্বিক শেয়ারবাজারে, পতন হয়েছে সূচকের।

মহামারি করোনার প্রেক্ষিতে গত মাসে ব্যাংকের লভ্যাংশের সীমা বেঁধে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই সঙ্গে সেপ্টেম্বরের আগে কোনো ব্যাংক নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করতে পারবে না বলে নির্দেশনা জারি করা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার ফলে ২০১৯ সালের সমাপ্ত বছরের জন্য কোনো ব্যাংকই ১৫ শতাংশের বেশি নগদ এবং নগদ ও বোনাস শেয়ার মিলিয়ে ৩০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে না।

এ পরিস্থিতিতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশের অংশ ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

এর প্রেক্ষিতে গতকাল ব্যাংকগুলোর নগদ লভ্যাংশ বিতরণের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে ২০১৯ সালের ঘোষিত লভ্যাংশ ৩০ সেপ্টেম্বরের আগে বিতরণের পথ খুলেছে। তবে এর ইতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারে পড়েনি।

সোমবার লেনদেনের শুরুতেই সূচকে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যায়। সেই সঙ্গে আগের মতোই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম অপরিবর্তিত থাকে। যা দিনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেয়া মাত্র ১২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪টির। আর ২৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে, তার থেকে বেশি প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ায় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ৩ হাজার ৯৫৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩২৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ ১ পয়েন্ট কমে ৯১৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সূচকের পতন হলেও ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেন। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১০৬ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৭০ কোটি ২ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৩৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে বাজারটিতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এক্সিম ব্যাংকের ৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৬ কোটি টাকার লেনদেনের মাধ্যমে এর পরের স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, রেকিট বেনকিজার, বেক্সিমকো এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস।

অপর (শেয়ারবাজার) বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১১ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ৯১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১০টির, কমেছে ১৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৫টির।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত