অন্যান্য
একজন সফল মানব স্যার ফজলে হাসান আবেদ

১৯৩৬ সালের ২৭শে এপ্রিল সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমার বানিয়াচংয়ে জন্মগ্রহণ করেন বিশ্বের সর্ববৃহৎ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘ব্র্যাক’-এর প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ ‘নাইট’ উপাধি পাওয়া দেশের এই কৃতি সন্তান। সৈয়দা সুফিয়া খাতুন এবং সিদ্দিক হাসানের দ্বিতীয় সন্তান আবেদ ১৯৫২ সালে পাবনা জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৪ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যায় সম্মান বর্ষে ভর্তি হওয়ার পর ইংল্যান্ডে চলে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য। তার ছোট চাচা সায়ীদুল হাসান ছিলেন লন্ডনে পাকিস্তান দূতাবাসের বাণিজ্যসচিব। চাচার কথায় ১৯৫৪ সালে আবেদ ভর্তি হন স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে নেভাল আর্কিটেকচার বিভাগে। দুবছর বাদে সেখান থেকে লন্ডনে গিয়ে ভর্তি হন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিংয়ে। ১৯৬২ সালে ‘কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিং’-এর ওপর তিনি প্রফেশনাল কোর্স সম্পন্ন করেন। লন্ডনে থাকা অবস্থায় ১৯৫৮ সালে তার মা সৈয়দা সুফিয়া খাতুন মারা যান।
স্যার ফজলে হাসান আবেদের কর্মজীবনের শুরু:
১৯৬২ সাল থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত লন্ডন, কানাডা ও আমেরিকায় বিভিন্ন চাকরি করেন ফজলে হাসান আবেদ। দেশে ফেরেন ১৯৬৮ সালে। ১৯৭০ সালে যোগ দেন শেল অয়েল কোম্পানির চট্টগ্রাম কার্যালয়ে। পদোন্নতি লাভ করে ফাইন্যান্স বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান।
শেল কোম্পানিতে চাকরিরত অবস্থায় ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীর উপকূলীয় দ্বীপাঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। সন্দ্বীপ, হাতিয়া, মনপুরা এই তিনটি দ্বীপের লাখ লাখ মানুষ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ হারান। এ অবস্থায় স্যার আবেদ তার বন্ধু ব্যারিস্টার ভিকারুল ইসলাম চৌধুরী, সহকর্মী কায়সার জামান, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আকবর কবীর এবং নটরডেম কলেজের শিক্ষক ফাদার টিম মিলে সিদ্ধান্ত নেন ত্রাণ বিতরণের। ‘হেলপ’ নামের একটি সংগঠন গড়ে তুলে মনপুরা দ্বীপের বিপন্ন ও বিধ্বস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান তিনি। ত্রাণসামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি বিধ্বস্ত ঘরবাড়িও তৈরি করে দিয়েছিলেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধে অবদান:
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্যার ফজলে হাসান আবেদ শেল অয়েল কোম্পানির উচ্চপদের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ইসলামাবাদ ও কাবুল হয়ে লন্ডনে চলে যান। ১৯৭১ সালের মে মাসে লন্ডনে গিয়ে সমমনা বন্ধুদের সঙ্গে মিলে সম্পৃক্ত হন স্বাধীনতা সংগ্রামের লড়াইয়ে। মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য গড়ে তোলেন ‘অ্যাকশন বাংলাদেশ’ ও ‘হেলপ বাংলাদেশ’ নামের দুটি সংগঠন।
অ্যাকশন বাংলাদেশের কাজ ছিল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক সমর্থন আদায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সপক্ষে জনমত তৈরি এবং পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরোচিত কার্যকলাপ বন্ধে ইউরোপীয় দেশসমূহের সরকারকে সক্রিয় করে তোলা।
হেলপ বাংলাদেশের কাজ ছিল অর্থ সংগ্রহ করে মুক্তিবাহিনীকে সহযোগিতা করা। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরি, প্রচারপত্র বিলি, টাইমস অব লন্ডনে লেখা ও বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা, রেডিও-টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেওয়া, ইউরোপীয় দেশসমূহের পার্লামেন্ট সদস্যদের আলোচনার মাধ্যমে স্বদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিবিধ কর্মতৎপরতা পরিচালনা করা। পথনাটক, তহবিল সংগ্রহসহ নানা ধরনের কাজেও তিনি ও তার বন্ধুরা সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়েছিলেন।
ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা:
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে ফজলে হাসান আবেদ সদ্যস্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে ফিরে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের পর ভারতে আশ্রয় নেওয়া ১ কোটি শরণার্থী দেশে ফিরে আসতে শুরু করে। আবেদ ভারত প্রত্যাগত শরণার্থীদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনকল্পে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। মুক্তিযুদ্ধকালে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া সিলেটের সুনামগঞ্জের শাল্লা ও দিরাই অঞ্চলকে তিনি তার কর্ম এলাকা হিসেবে বেছে নেন। ১৯৭২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন অ্যাসিসটেন্স কমিটি (ব্র্যাক) শাল্লা প্রকল্পের প্রথম পর্বের সূচনা হয়।
ব্রাক থেকে অবসর গ্রহণ:
স্যার ফজলে হাসান আবেদ ১৯৭২ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি ব্র্যাকের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিষ্ঠা করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্র্যাক ব্যাংক।
২০০১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০১ থেকে ২০০৮ এবং ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্যার ফজলে আবেদ ২০১৯ সালের ১ আগস্ট ব্র্যাকের চেয়ারপারসন পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং চেয়ার এমেরিটাস হিসেবে দায়িত্ব নেন। এর আগে ২৪ জুলাই তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ২৬ আগষ্ট ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
যেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন:
১৯৮১ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির হার্ভার্ড ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের ভিজিটিং স্কলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন স্যার আবেদ। পরে ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশের (এডাব) চেয়ারপারসন হিসেবে নেন। একই সময়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ফেলো হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, জেনেভার এনজিও কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সাউথ এশিয়া পার্টনারশিপের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন হেলথ রিসার্চ ফর ডেভেলপমেন্টের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন স্যার আবেদ
১৯৯০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত গণস্বাক্ষরতা অভিযানের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একই সময়ে এনজিও ফোরাম ফর ড্রিংকিং ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশনের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্যার ফজলে হাসান আবেদ ১৯৯২ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ইন্ডিপেনডেন্ট সাউথ এশিয়ান কমিশন অন পোভার্টি এলিভিয়েশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একই সময়ে সার্কের সাউথ এশিয়ান কমিশন অন পোভার্টি এলিভিয়েশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৪ এবং ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল মেয়াদে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেনে তিনি।
১৯৯৪ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সদস্য, ১৯৯৮ ২০০৪ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সাসেক্স ইউনিভার্সিটির পরিচালনা বোর্ডের সদস্য এবং ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (আইডিএস) সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৯ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি), ফিলিপাইনের বোর্ড অব গভর্নরস, ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত অডিট কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন স্যার আবেদ।
২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক অব অলটারনেটিভ ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনের (ইনাফি) গ্লোবাল চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশের এই কৃতি সন্তান। এ ছাড়া ২০০৫ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ইউএন কমিশন অন লিগ্যাল এমপাওয়ারমেন্ট অব দি পুওর’র (সিএলইপি) কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা এই বীর বাঙালিকে ২০১০ সালে জাতিসংঘের তদানীন্তন মহাসচিব বান কি মুন বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশসমূহের ‘স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গে’র একজন হিসেবে নিযুক্তি প্রদান করেন। তাকে ‘গ্লোবাল গ্রেট’ স্বীকৃতিতে ভূষিত করে অশোকা। এই প্রতিষ্ঠানের ‘গ্লোবাল অ্যাকাডেমি ফর সোশ্যাল আন্ট্রপ্রেনিওরশিপ’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্যও ছিলেন আবেদ।
২০১০ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ইউএন সেক্রেটারি জেনারেলস গ্রুপ অব এমিনেন্ট পারসনস ফর লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রিজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন দেশের সেরা এই সন্তান। ২০১২ সাল থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ইউএন সেক্রেটারি জেনারেলস লিড গ্রুপ অব দি স্কেলিং এবং অশোকা গ্লোবাল অ্যাকাডেমি ফর সোশ্যাল আন্ট্রোপ্রেনিওরশিপের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
স্যার ফজলে হাসান আবেদের পুরস্কার অর্জন:
১. ২০১৯ সালে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নে কয়েক দশকব্যাপী অনবদ্য ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ নেদারল্যান্ডসের নাইটহুড ‘অফিসার ইন দ্য অর্ডার অব অরেঞ্জ-নাসাউ’ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। ২০১৯ সালে শিক্ষা উন্নয়ন বিষয়ে অত্যন্ত মর্যাদাসূচক এবং অর্থমূল্যের দিক থেকে সবচেয়ে বড় পুরস্কার ইদান প্রাইজ লাভ করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। হংকংভিত্তিক ইদান প্রাইজ ফাউন্ডেশন এই পুরস্কার ঘোষণা করে। ২০১৮ সালে প্রাক-শৈশব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অসাধারণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ লেগো ফাউন্ডেশন, ডেনমার্ক প্রদত্ত লেগো পুরস্কার, ২০১৭ সালে দারিদ্র্যপীড়িত লক্ষ-কোটি মানুষের সম্ভাবনা বিকাশে সুযোগ সৃষ্টির জন্য লুডাটো সি অ্যাওয়ার্ড, ২০১৬ সালে গ্লোবাল লিডারশিপ ফোরাম অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ, ওয়াশিংটন ডিসি প্রদত্ত হোসে এডগারডো ক্যাম্পোস কোলাবোরেটিভ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড, একই বছর জনস্বাস্থ্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত টমাস ফ্রান্সিস জুনিয়র মেডেল অব গ্লোবাল পাবলিক হেলথ পুরস্কার লাভ করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ।
খাদ্য ও কৃষিক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৫ সালে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ পান তিনি। ২০১৪ সালে রাশিয়ান চিলড্রেন ফান্ড কর্তৃক ‘লেভ তলস্তয়’ স্বর্ণপদক এবং স্পেনের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘অর্ডার অব সিভিল মেরিট’ (অর্ডেন ডেল মেরিটো সিভিল) লাভ করেন
২০১৪ সালে নারীর অধিকার রক্ষা ও সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘ট্রাস্ট উইমেন হিরো অ্যাওয়ার্ড’, ২০১৩ সালে ওপেন সোসাইটি প্রাইজ, ২০১১ সালে কাতার ফাউন্ডেশন প্রবর্তিত শিক্ষাক্ষেত্রে বিশ্বের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘ওয়াইজ প্রাইজ’, ২০১০ সালে দারিদ্র্য বিমোচনে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যুক্তরাজ্যের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মানজনক ‘নাইটহুড’ উপাধিতে ভূষিত হন।
২০০৯ সালে দ্য ওয়ার্ল্ড আন্ট্রপ্রেনিওরশিপ ফোরামের পক্ষ থেকে আন্ট্রপ্রেনিওর ফর দ্য ওয়ার্ল্ড লাভ করেন ফজলে হাসান আবেদ। এ ছাড়া ২০০৮ সালে ডেভিড রকফেলার ব্রিজিং লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড এবং ফেলোশিপ অব এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ, ২০০৭ সালে হেনরি আর. ক্রাভিস প্রাইজ ইন লিডারশিপ এবং ক্লিনটন গ্লোবাল সিটিজেনশিপ অ্যাওয়ার্ড, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সামাজিক উন্নয়নে অবদানের জন্য পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) কর্তৃক আজীবন সম্মাননা লাভ করেন।
২০০৪ সালে গেটস অ্যাওয়ার্ড ফর গ্লোবাল হেলথ ও ইউএনডিপির মানবউন্নয়ন বিষয়ক পুরস্কার মাহবুবুল হক অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন এই নাইট। এ ছাড়া ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের সেন্টার ফর পাবলিক লিডারশিপ প্রদত্ত গ্লেইটসম্যান ফাউন্ডেশন পুরস্কার, ২০০২ সালে দ্য শোয়াব ফাউন্ডেশন সোশ্যাল আন্ট্রপ্রেনিওরশিপ প্রতিষ্ঠান থেকে ‘আউটস্ট্যান্ডিং সোশ্যাল আন্ট্রপ্রেনিওর’ স্বীকৃতি, ২০০১ সালে সুইডেন থেকে ওলফ পামে অ্যাওয়ার্ড, ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো নোমা পুরস্কার এবং ১৯৮০ সালে র্যামেন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন।
ব্র্যাক প্রতিষ্ঠার পর আবেদের অর্জন:
২০০৮ সালে মানবিক ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য কনরাড এন হিলটন হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাওয়ার্ড, ২০০৭ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার, ১৯৯২ সালে ইউনিসেফ মরিস পেট অ্যাওয়ার্ড, ১৯৯০ সালে অ্যালানশন ফেইনস্টেইন ওয়ার্ল্ড হাঙ্গার পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো নোমা পুরস্কার অর্জন করেন তিনি।
স্যার ফজলে হাসান আবেদের অর্জিত সম্মানসূচক ডিগ্রিসমূহ:
২০১৬ যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ব্র্যাডফোর্ড থেকে ডক্টর অব এডুকেশন, ২০১৪ যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব দি সাউথ থেকে ডক্টর অব সিভিল লজ এবং প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব লজ ডিগ্রি, ২০১২ যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রি, ২০১০ যুক্তরাজ্যের বাথ ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব লজ ডিগ্রি, ২০০৯ জাপানের রিক্কিও ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট অব হিউমেন লেটার্স এবং ২০০৯ যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব লেটার্স ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
ফজলে হাসান আবেদ প্রতিষ্ঠিত ব্র্যাক দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এশিয়া ও আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে কাজ করছে। বিশ্বের অন্যতম বড় এনজিও হিসেবে এটি স্বীকৃত।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অন্যান্য
হুয়াওয়ে ক্লাউড এসএপি সামিট অনুষ্ঠিত

গতকাল হুয়াওয়ে বাংলাদেশ একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয় হুয়াওয়ে ক্লাউড এসএপি ২০২৩ সামিট। ফিউশন ইনফোটেকের সাথে যৌথভাবে এই সামিটের আয়োজন করে হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়া। ক্লাউড প্রযুক্তির সক্ষমতা এবং এর সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করতে এই সামিটের আয়োজন করা হয়।
এই খাতের প্রায় ১০০ জন ব্যবসায়ী, বিশেষজ্ঞ, ক্লাউড প্রফেশনাল এবং গ্রাহক প্রতিনিধি এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীরা ক্লাউড প্রযুক্তির শক্তি এবং এ সংক্রান্ত উদ্ভাবন প্রত্যক্ষভাবে দেখার সুযোগ পান। এছাড়া, অংশগ্রহণকারীরা সহযোগীদের (পার্টনার) নিয়ে তৈরি করা ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করতে এবং তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে হুয়াওয়ের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন দেখেন। ইভেন্টে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের মধ্যে মতবিনিময় এবং স্থানীয় প্রেক্ষাপটে ক্লাউড প্রযুক্তির সীমাহীন সম্ভাবনা সম্পর্কে জানার সুযোগ পান। হুয়াওয়ে ক্লাউড কীভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মদক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করবে এবং নিজ-নিজ খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সহায়ক হবে সে ব্যাপারে আলোকপাত করা হয়।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়ার ক্লাউড ডিপার্টমেন্টের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার মো. শাজাহান আহমেদ। এই সম্মেলনে তিনটি অংশ (প্লেনারি সেশন, ক্লাউড সেশন এবং রিওয়ার্ড এন্ড রিকগনিশন) ছিল। মূল অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়ার ক্লাউড ডিপার্টমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যালেক্স লি এবং ফিউশন ইনফোটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিশান আহমেদ মূল বক্তব্য প্রদান করেন। তারা প্রযুক্তিগত রূপান্তর, বর্তমান পরিস্থিতি এবং ক্লাউড ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবসা সম্প্রসারণে করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করেন। ফিউশন ইনফোটেকের এসএপি ডেলিভারি প্রধান রাজীব ইমরান হুয়াওয়ে ক্লাউড এসএপি’র ব্যবহারিক দিক বর্ণনা করেন এবং কীভাবে এসএপি ব্যবহারকারী গ্রাহকরা এই ক্লাউড পরিষেবার মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে এবং সর্বোচ্চ অপ্টিমাইজেশন নিশ্চিত
করতে পারবে তা ব্যাখ্যা করেন।
হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়ার ভিপি অ্যালেক্স লি বলেন, ‘হুয়াওয়ে ক্লাউড প্রযুক্তির সম্ভাবনা উন্মোচনে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্লাউডের মাধ্যমে ক্ষমতায়নে কাজ করে যাচ্ছে। ক্লাউড ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ করার ধরনে আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্লাউড সুবিধা প্রদান করার মধ্য দিয়ে আরও শক্তিশালী ডেটা সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং বিনিয়োগের উপর রিটার্ন (আরওআই) বৃদ্ধি করতে সাহায্য করা আমরা আমাদের দায়িত্ব মনে করি।’
ফিউশন ইনফোটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিসান আহমেদ তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশে ডিজিটাল রূপান্তরের প্রবণতার ওপর গুরুত্বারোপ করে এ খাতকে আরও গতিশীল করে তুলতে যথাযথ নীতিমালা তৈরির ক্ষেত্রে খাতসংশ্লিষ্ট সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ও ফিউশন ইনফোটেক এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং আমাদের সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে। নিঃসন্দেহে, ক্লাউডই ভবিষ্যৎ এবং সৌভাগ্যক্রমে হুয়াওয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা উন্মোচন করা সম্ভব।’

এসএপি ডেলিভারি প্রধান, ফিউশন ইনফোটেকের রাজীব ইমরান বলেন, ‘এসএপি ও হুয়াওয়ের মধ্যে শক্তিশালী সহযোগিতা রয়েছে এবং এ সহযোগিতার পরিসর আরও বাড়ছে। দু’টি প্রতিষ্ঠানই হাই-পারফরমেন্স ও ফলাফল- ভিত্তিক সমাধানের উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করছে, যা শিল্প খাতজুড়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য অভুতপূর্ব প্রবৃদ্ধি বয়ে নিয়ে আসবে। এসএপি ও হুয়াওয়ে- উভয় প্রতিষ্ঠানই উদ্ভাবন ও নির্দিষ্ট খাতের প্রয়োজন অনুযায়ী এন্ড-টু-এন্ড সল্যুশন-ভিত্তিক মডেল তৈরির লক্ষ্য কাজ করছে। আমি আজ এখানে উপস্থিত থেকে গ্রাহকদের কার্যক্রমগত সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ক্লাউড সেবায় হুয়াওয়ে যে উদ্ভাবন নিয়ে আসছে, সেটার বিভিন্ন দিক সবার তুলে ধরতে পেরে আনন্দিত।’
অনুষ্ঠান চলাকালে, ইফাদ ও ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং (এইচডব্লিউসি এসএপি গ্রাহক) প্রতিনিধিগণ হুয়াওয়ের ক্লাউড সেবা ব্যবহার নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। পাশাপাশি সকলের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব রাখা হয়। যার ফলে সকলেই ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পর্কিত ব্যবহারিক কাজের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের জটিল সমস্যার সমাধান পান। সেশনের পরে, একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়, যেখানে অ্যালেক্স লি হুয়াওয়ে ক্লাউড বাংলাদেশের সহযোগীদের স্বীকৃতিস্বরূপ ক্রেষ্ট প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের একটি এসএপি। এসএপি বিভিন্ন কার্যকরী ডেটা প্রসেসিং ইনফরমেশন ফ্লো ব্যবস্থাপনায় কাজ করে। অন্যদিকে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ক্লাউড খাতে হুয়াওয়ে ক্লাউড অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে এবং ক্লাউড সংশ্লিষ্ট উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিতে বিশ্বব্যাপী ইতিবাচক অগ্রগতি অর্জন করেছে। এক্ষেত্রে, হুয়াওয়ের সহযোগীদের সংখ্যাও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্পূর্ণভাবে কানেক্টেড ও ইন্টেলিজেন্ট বিশ্বের জন্য ক্লাউডের ভিত্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে হুয়াওয়ে ক্লাউড।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
ইউরো: আরও অনেক দেশের ভবিষ্যত মুদ্রা

মানবজাতির ইতিহাসে এমন পরীক্ষা কখনো হয়নি৷ ইউরোপের একাধিক দেশ স্বেচ্ছায় নিজস্ব মুদ্রা ত্যাগ করে একক মুদ্রা গ্রহণ করে অভূতপূর্ব পদক্ষেপ নিয়েছে৷ ২৫ বছর আগে ইউরোপীয় অভিন্ন মুদ্রা হিসেবে ইউরো চালু করার লক্ষ্যে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠন করা হয়৷ এরপর ১৯৯৯ সালের ১লা জানুয়ারি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১১টি সদস্য দেশে ‘অদৃশ্য’ মুদ্রা হিসেবে সমান্তরালভাবে ইউরো চালু হয়৷ ২০০২ সালের ১লা জানুয়ারি প্রথম ইউরো ব্যাংক নোট ও পয়সা হিসেবে সেন্ট সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয়৷ সেইসঙ্গে সদস্য দেশগুলির জাতীয় মুদ্রা লোপ পায়৷ বর্তমানে ইইউ-র ২০টি দেশে এই মুদ্রা চালু আছে৷ ৩৪ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ এই মুদ্রা ব্যবহার করছেন৷
বুধবার সন্ধ্যায় জার্মানির ফ্রাংকফুর্ট শহরে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক – ইসিবি-র রজত জয়ন্তী উৎসব পালিত হয়৷ ব্যাংকের বর্তমান প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দ এ দিন ২০টি সদস্য দেশের সংবাদপত্রে ব্যাংকের সাফল্য তুলে ধরেন৷ ইউরো এলাকায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ইসিবি-র ভূমিকার উপর জোর দেন তিনি৷ অনেক বছর ধরে সেই মাত্রা কম থাকার পর বর্তমানে মূল্যস্ফীতির উচ্চ হারে রাশ টানতে ইসিবি উদ্যোগ নিলেও অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতি বদলানোর কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না তিনি৷ তবে সেই মাত্রা দুই শতাংশে ফিরিয়ে আনতে সূদের হার বাড়ানোসহ সব রকম পদক্ষেপ নেবার অঙ্গীকার করেন লাগার্দ৷
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রোব্যার্তা মেৎসোলা এবং ইইউ সরকার পরিষদের প্রেসিডেন্ট শার্ল মিশেল ইসিবি-র জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷ শলৎস ইউরোপীয় অভিন্ন মুদ্রাকে ইউরোপীয় সমন্বয়ের সবচেয়ে সফল প্রকল্পগুলির অন্যতম হিসেবে বর্ণনা করেন৷ তার মতে, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘স্থিতিশীলতার নোঙর’ হিসেবে কাজ করছে৷ ভবিষ্যতে আরও দেশ অভিন্ন মুদ্রা হিসেবে ইউরো গ্রহণ করবে বলে শলৎস আশা প্রকাশ করেন৷
ইউরোপীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে ইউরো মুদ্রা ও ইসিবি-র ভূমিকার প্রশংসা সত্ত্বেও এই প্রকল্পের কাঠামোগত দুর্বলতা নিয়ে বিতর্ক কম নেই৷ কারণ ২০টি দেশে অভিন্ন মূদ্রা চালু হলেও সে সব দেশের আর্থিক ও অর্থনৈতিক নীতির মধ্যে কোনো সমন্বয়ের বাধ্যবাধকতা এখনো নেই৷ ফলে প্রায়ই স্বার্থের সংঘাত দেখা যায়৷ বিশেষ করে ইউরোপের উত্তর ও দক্ষিণের দেশগুলির মধ্যে মৌলিক নীতি নিয়ে মতবিরোধ বার বার সমস্যা সৃষ্টি করে৷
ইউরো মুদ্রার এমন অন্তর্নীহিত দুর্বলতা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে ইসিবি-র ভূমিকা বার বার প্রশংসা কুড়িয়েছে৷ বিশেষ করে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে ইউরো-র স্বার্থ রক্ষায় পরিস্থিতি সামল দিতে ইসিবি যেভাবে জোরালো উদ্যোগ নিয়েছে, তা আর্থিক বাজার স্থিতিশীল করতেও সাহায্য করেছে৷ বিশেষ করে ২০১২ সালে ইউরো এলাকায় সংকটের সময়ে ইসিবি-র তৎকালীন প্রধান মারিও দ্রাগি ‘ওয়াটএভার ইট টেকস্’ শীর্ষক ভাষণে যে কোনো মূল্যে ইউরো বাঁচানোর অঙ্গীকার করে গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছিলেন৷ তবে অসময়ে সুদের হার বাড়ানো বা কমানোর ক্ষেত্রে ইসিবি-র কিছু ভুলত্রুটি নিয়ে সমালোচনা হয়েছে৷

অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
জবিতে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলে এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে তিন ঘন্টা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনায় তিন সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রোববার (২১মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলামকে আহবায়ক করে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক নূরে আলম আব্দুল্লাহ ও সহকারী প্রক্টর শাহনাজ পারভীন।
কমিটির আহবায়ক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, কমিটি গঠনের বিষয়ে আজ আমি চিঠি পেয়েছি। আগামীকাল থেকে এ নিয়ে কাজ শুরু করব। যত দ্রুত সম্ভব আমরা তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করব।
গত মঙ্গলবার (১৬ মে) রাতে হলের ১২ তলায় ১২০৩ নং রুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের হাফসা বিনতে নূরের উপর নির্যাতন করে একই হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত এসব শিক্ষার্থীরা হলেন- তন্বী, ইশিতা, ফাল্গুনী আক্তার, নিনজা শিকদার, ইরা ও নাজমুন নাহার স্বর্ণা। জানা যায় অভিযুক্ত এসব শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।

এ ঘটনার পরদিন (১৭ মে) হল প্রভোস্টের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র দেয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিজেদের রুমের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাফসা বিনতে নূরের সাথে জুনিয়র রুমমেট রেবেকা খাতুনের সাথে কথার কাটাকাটি হয়। এ পর্যায়ে রেবেকা খাতুন হলের অন্য রুমের মেয়েদের নিয়ে এসে রুম আটকে হাফসাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন ও হেনস্তা করে। প্রায় তিন ঘন্টা যাবৎ নির্যাতনের পর হাফসা বিনতে নূর অজ্ঞান হয়ে যায়।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
বেপজায় ৬০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করবে চীনা কোম্পানি

চীনা কোম্পানি জিবিন টেকনোলজি (বিডি) কোম্পানি লিমিটেড ৬০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি স্যু এক্সেসরিজ কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
সোমবার (১৫ মে) ঢাকাস্থ বেপজা কমপ্লেক্সে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) আলী রেজা মজিদ এবং জিবিন টেকনোলজি (বিডি) কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উ সুয়েলি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
এসময় বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান, এনডিসি, পিএসসিসহ বেপজার সদস্য (প্রকৌশল) মোহাম্মদ ফারুক আলম, সদস্য (অর্থ) নাফিসা বানু, নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর, বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক মো. এনামুল হক, অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. ফজলুল হক মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
জিবিন টেকনোলজি (বিডি) বার্ষিক ৬০ লাখ পিস স্যু এক্সেসরিজ যেমন, আউটসোল, মিডসোল, ইনজেকশন পার্টস, ব্যাকস্টে, হিপ ক্লিপ, টো ক্যাপ, স্পোর্টস স্পাইক, ইভিএ, পিইউ ফোম, পিইউ কম্পোনেন্ট প্রভৃতি উৎপাদন করবে। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রাথমিক পর্যায়ে ১৯৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে অবস্থিত বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল বেপজার সর্ববৃহৎ উদ্যোগ। ১১৩৮.৫৫ একর জমির ওপর স্থাপিত এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটিকে একটি কর্মচঞ্চল শিল্প এলাকায় পরিণত করতে জিবিন টেকনোলজি (বিডি)-সহ মোট ১৮টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করল বেপজা। এই প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রচলিত তৈরি পোশাকসহ বৈচিত্র্যময় নানা পণ্য উৎপাদন করতে মোট ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের পর্ষদ সভা স্থগিত

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পর্ষদ সভা স্থগিত করা হয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আজ (রবিবার) বিকাল ৩টায় ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে অনিবার্য কারণবশত পর্ষদ সভা স্থগিত করেছে কোম্পানিটি। পরবর্তী পর্ষদ সভার তারিখ পরবর্তীতে জানাবে ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স।