তামহাসহ তিন সিকিউরিটিজের গ্রাহকরা পেলেন প্রায় ৫ কোটি টাকা

তামহাসহ তিন সিকিউরিটিজের গ্রাহকরা পেলেন প্রায় ৫ কোটি টাকা
গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্রোকারেজ হাউজ ক্রেস্ট, বাংকো ও তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের মধ্যে টাকা প্রদান শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৪৩১ জন পাওনাদার ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ফেরত পেয়েছেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই শেষে অর্থ ফেরত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তাদেরকে এই টাকা ফেরত দেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, যে সব বিনিয়োগকারী গত ১৫ মে তারিখের মধ্যে ডিএসইতে অভিযোগ দাখিল করেছেন তাদের নিজ নিজ বিও হিসাবে উল্লেখিত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে আনুপাতিক হারে প্রাপ্য অর্থ (যাচাই বাছাই পূর্বক) প্রদানের কার্যক্রম শুরু হয়েছে৷ এরই অংশ হিসেবে গত ২৯ জুন ২০২২ তারিখ হতে BEFTN এর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৪৩১ বিনিয়োগকারীকে ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে৷ ডিএসই আশা করছে যথসম্বভ দ্রুতগতিতে BEFTN এর মাধ্যমে বাকী অর্থ নিষ্পত্তি করা হবে৷

ডিএসই আশা করছে পর্যায়ক্রমে সকল বিনিয়োগকারীদের পাওনা পরিশোধ করবে৷ ডিএসই সকল পাওনা পরিশোধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্রোকারদের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সকল ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে৷ আর এ ধরণের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে না ঘটে সে বিষয়েও সতর্ক রয়েছে৷

চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ওই তামহা সিকিউরিটিজের বিওধারী বিনিয়োগকারীরা এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তোলেন, অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে দুই শতাধিক বিনিয়োগকারীর ৬৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া এই সিকিউরিটিজের মালিক ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের সব শেয়ার বিক্রি করে দেয় বলে অভিযোগ করেন তারা। বিএসইসি ওই সিকিউরিটিজের শেয়ার লেনদেন স্থগিত করে দেয়ার পর সিডিবিএলে যোগাযোগ করে বিনিয়োগকারীরা জানতে পারেন তাদের হিসাবে কোনো শেয়ার নেই।

তামহা কর্তৃপক্ষ দুই শতাধিক বিনিয়োগকারীর মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের তথ্য বিনিয়োগকারীদের ফোনে এসএমএস ও মেইল পাঠাতো। এ কারণে তারা জালিয়াতি বুঝতে পারেনি। হাউজটি ১৩৯ কোটি টাকা ৭০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে বিএসইসির এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে ওঠে আসে। অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে গত ২৮ নভেম্বর ব্রোকারেজ হাউসটির শেয়ার কেনাবেচার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ডিএসই।

গত বছরের জুনে বাংকো সিকিউরিটিজের কার্যক্রমও বন্ধ করে দেয়া হয় অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে। বিএসইসির তদন্ত অনুযায়ী, এ ব্রোকারেজ হাউসের মালিকপক্ষ গ্রাহকদের ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।

এ ঘটনায় ডিএসই মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি বা জিডিও করে। পরে দুদক প্রতিষ্ঠানটির ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেছে। আসামিরা হলেন, বাংকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত এবং পরিচালক শফিউল আজম, ওয়ালিউল হাসান চৌধুরী, নুরুল ঈশান সাদাত, এ মুনিম চৌধুরী ও জামিল আহমেদ চৌধুরী।

২০২০ সালের জুনে ডিএসইর এক তদন্তে উঠে আসে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিকপক্ষ গ্রাহকের ৮০ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছে। ৫৭ পুরানা পল্টনে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধ। আর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির এমডি শহিদ উল্লাহ ও তাঁর স্ত্রী নিপা সুলতানাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২১ হাজার বিনিয়োগকারীর হিসাব ছিল এই হাউজে। আর গ্রাহকদের টাকা ছিল ১০০ কোটি। শেয়ার কেনাবেচার বাইরে বেআইনিভাবে লভ্যাংশের বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকাও নিতেন তাঁরা। মালিকপক্ষ ১৮ কোটি টাকা সরিয়ে নিয়েছিলেন নিজেদের ব্যাংক হিসাবে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত