ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি নিয়ে যা বললেন ড. হাছান

ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি নিয়ে যা বললেন ড. হাছান


তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধে ড. ইউনূসের তৎপরতা অস্বীকার করে ইউনূস সেন্টার যে বিবৃতি দিয়েছে, তা ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার’ অপচেষ্টা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সামনে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ইউনূস সেন্টারের বিবৃতির বিষয় তুলে ধরে বলেন, আজকে পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ায় অনেক বিরোধিতাকারীর সুর পাল্টেছে। বিএনপিও কিছুটা সুর পাল্টানোর চেষ্টা করছে, যদিও মির্জা ফখরুল সাহেব এখনো কিছু বলেননি। আজকে দেখলাম, ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে। সেটির প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।

‘পদ্মা সেতুর বিরোধিতাকারী, বিশেষ করে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের কুশীলবদের অন্যতম প্রধান ব্যক্তি ড. মুহম্মদ ইউনূস সাহেবের প্রতি যথাযথ সম্মান-শ্রদ্ধা রেখেই এ ব্যাপারে কিছু বক্তব্য, কিছু তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরতে চাই’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘ড. ইউনূস সাহেব হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে বিশেষ সখ্য থাকার সুবাদে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের ক্ষেত্রে যে মূল কুশীলবের ভূমিকা পালন করেছিলেন, সেটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট, দেশ-বিদেশে সবাই সেটি জানে।’

মন্ত্রী জানান, ‘তখনকার বিশ্বব্যাংকের মিস্টার জেলিক বলেছিলেন, এটি বন্ধ করার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। কারণ প্রথমত বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের অন্যতম অংশীদার দেশ অর্থাৎ সেখানে আমাদের শেয়ার আছে। দ্বিতীয়ত বাংলাদেশ কখনো ঋণখেলাপি হয়নি। ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে খুবই ভালো। এভাবে কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ না থাকায় মিস্টার জেলিকের ওপর ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করা হলেও তিনি কিন্তু সেটি করেননি। তিনি যেদিন অবসরে যাচ্ছেন, তার শেষ কর্মদিবসের শেষ ঘণ্টায় তিনি অর্থায়ন বন্ধের সিদ্ধান্তে সই করতে বাধ্য হয়েছিলেন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এর কারণ ড. ইউনূস সাহেব বেআইনিভাবে ১০ বছর অতিরিক্ত সময় গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডি ছিলেন এবং আরও থাকতে চেয়েছিলেন। ব্যাংকের এমডিদের বয়সসীমা বাংলাদেশে ৬০ বছর। কোনো বেসরকারি ব্যাংকেও এ বয়সের পর আর এমডি থাকা যায় না। তার বয়স তখন ৭০ এর কোঠায় অর্থাৎ কমপক্ষে ১০ বছর অতিরিক্ত সময় ধরে তিনি এমডি ছিলেন। আর গ্রামীণ ব্যাংক হচ্ছে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক বা কর্মসংস্থান ব্যাংকের মতো সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, যেখানে সরকারের শেয়ার আছে। গ্রামীণ ব্যাংকে তখন সরকারের শেয়ার ছিল ৫১ শতাংশ ও অন্যদের ৪৯ শতাংশ।’

‘সংবিধিবদ্ধ অন্য ব্যাংকের জন্য যে আইন এখানেও সেই আইন। কিন্তু তিনি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এমডির দায়িত্বে ছিলেন। সরকার তাকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে সরে ব্যাংক ছেড়ে যেতে বলেনি, বরং উপদেষ্টা হতে বলেছিল। তখন তিনি সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করলেন। মামলায় তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পর্যন্ত গেছেন এবং হেরেছেন। অর্থাৎ তিনি যে বেআইনিভাবে এমডি পদে ছিলেন, সেটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় দিয়ে নিশ্চিত করেছে।’

সরকার সবসময় গ্রামীণ ব্যাংককে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিশেষ করে ১৯৯৮ সালের বন্যার পর যখন তাদের ঋণ গ্রহীতারা অর্থ ফেরত দিতে পারছিল না,  তখন শেখ হাসিনার সরকার বিভিন্ন সময়ে গ্রামীণ ব্যাংকে ৪শ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিল।

‘ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি সত্যের অপলাপ’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইউনূস সাহেব যে পদ্মা সেতু এবং এতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের বিরোধিতা করেছেন, সেটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট। তিনি আগে কখনো বলেননি যে তিনি এই অপচেষ্টা চালাননি। বরং যখন বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ হলো, তখন দম্ভ করে বিভিন্ন জায়গায় তিনি নানা কথা বলেছিলেন, যেগুলো এখনো বাতাসে ভেসে বেড়ায়। এভাবে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টায় কোনো লাভ নেই। যদি প্রয়োজন হয় আমরা আরও তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব।’

ড. ইউনূস পদ্মা সেতুর জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন- এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন সারা দেশ যখন উল্লাসিত, যারা পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছিল, তারা প্রচন্ড লজ্জিত। এটি তার লজ্জা ঢাকার অপচেষ্টার অভিনন্দন।’

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
নির্বাচন ঘিরে সেন্টমার্টিনের পর্যটন বন্ধ ৩ দিন
মেট্রোরেলে মাছ-মাংস-সবজি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা
জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু