‘শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সচেষ্ট থাকবে বাংলাদেশ ব্যাংক’

‘শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সচেষ্ট থাকবে বাংলাদেশ ব্যাংক’
আর্থিক খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে শেয়ারবাজারের সার্বিক স্থিতিশীলতা এবং দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক অতীতের মত আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরেও সচেষ্ট থাকবে। আগামী অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে এ কথা বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন গভর্নর ফজলে কবির।

নতুন মাদ্রানীতিতে মুদ্রা সরবরাহের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ১ শতাংশ। যা সরকারের কাঙ্ক্ষিত মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির সিলিংয়ের সমষ্টির তুলনায় কিছুটা কম।

এসময় গভর্নর বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রক্ষেপিত ব্যাপক মুদ্রার (এম২) প্রবৃদ্ধি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রক্ষেপিত প্রবৃদ্ধির (১৫ দশমিক শূন্য শতাংশ) তুলনায় কম। তবে তা ২০২২ সালের জুনের প্রাক্কলিত ৯ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় বেশি।

তিনি আরও বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের ন্যায় ২০২২-২৩ অর্থবছরেও ব্যাংকিং খাতের নীট বৈদেশিক সম্পদের প্রবৃদ্ধি কিছুটা ঋণাত্মক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ১২ দশমিক ১ শতাংশ এম২ প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে সরকারি খাতে ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ (১ হাজার ৬৩ বিলিয়ন টাকা) এবং বেসরকারি খাতে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ ঋণ বৃদ্ধি করাসহ মোট অভ্যন্তরীণ ঋণ ১৮ দশমিক ২ শতাংশ বাড়বে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে।

এছাড়া বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ও আমদানি ব্যয় ২০২২-২৩ অর্থবছরে ঊর্ধ্বমুখী থাকার সম্ভাবনা থাকলেও উচ্চভিত্তির কারণে এগুলোর প্রবৃদ্ধি গত অর্থবছরের তুলনায় কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।

তিনি জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে জনশক্তি রপ্তানির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের অন্তঃপ্রবাহ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে তারল্য সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় আবর্তনশীল ভিত্তিতে পুনঃবিনিয়োগযোগ্য পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিলের আকার ১৫৩ কোটি টাকা বৃদ্ধি করে ১০০৯ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। এই তহবিল হতে ২৮০ কোটি টাকা ছাড় করার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে প্রতিটি ব্যাংকের বিনিয়োগের জন্য ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের সুবিধার আওতায় রেপোর মাধ্যমে ২১৮কোটি টাকা দেয়া হয়েছে যা পুঁজি বাজারের তারল্য বাড়াতে সাহায্য করেছে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।

আগামী (২০২২-২৩) অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতিকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে রাখার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি গিয়ে ঠেকেছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশে। যা গত ৮ বছরের মধ্যে রেকর্ড।

প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংক ঋণে জোর দেবে। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংক ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেবে বলে লক্ষ্য ঠিক করছে সরকার। এই অংক চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৯ হাজার ৮৮২ কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা আছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৪ জুন পর্যন্ত ব্যাংক থেকে সরকার নিট ৪১ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে। গত মে পর্যন্ত যা ছিল ৩২ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। এর মানে শেষ সময়ে এসে ঋণ দ্রুত হারে বাড়ছে।

চলতি জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। গত এপ্রিল পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সরকারি-বেসরকারি মিলে জুন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ১৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ, এপ্রিল পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ