বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব ঘাটতি ২ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা

বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব ঘাটতি ২ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরুতে রাজস্ব আহরণে পিছিয়ে ছিল বেনাপোল কাস্টমস। এরই মধ্যে এসেছে করোনাভাইরাসের ধাক্কা। এতে রাজস্ব আহরণ অর্ধেকে নেমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৫৮ কোটি টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ২ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা।

কম রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা। এ সময় আমদানি পণ্য এসেছে ১৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৮ টন। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি ছিল। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, সেখানে আদায় হয় ৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বৃহৎ এ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি করা হয়। সেই হিসাবেই বন্দরে পাঁচ হাজার কোটি টাকার অধিক রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা। অনিয়ম বন্ধ হলে রাজস্ব আয় বাড়বে। তবে বৈধভাবে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ এবং উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি কমে যাওয়া রাজস্ব ঘাটতির কারণ বলে মনে করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, দেশের ২৩টি স্থলবন্দরের মধ্যে চলমান ১৩ বন্দরের অন্যতম বেনাপোল স্থলবন্দর। প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পণ্য আমদানির জন্য দেশে যতগুলো বন্দর রয়েছে, তার মধ্যে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর হলো বেনাপোল। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা দেশের অন্য যেকোনো বন্দরের তুলনায় উন্নত। বেনাপোল থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার।

সে কারণে দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ পণ্য এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এ সুবিধা পেয়ে দেশের অধিকাংশ ব্যবসায়ী এ বন্দর দিয়ে মালামাল আমদানি করে থাকেন। যেদিন ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয় সেদিন থেকে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই আমদানি করা পণ্য বন্দরে প্রবেশ করে।

তবে পণ্য আমদানির বেলায় এ বন্দরে চলে নানা অনিয়ম। কখনো পণ্য আমদানিতে মিথ্যা ঘোষণা, আবার ঘোষণার অতিরিক্ত পণ্য এনে সরকারের শুল্ক ফাঁকি দেয়া হয়। আর এসব কাজে মোটা অংকের টাকা পেয়ে সহযোগিতা করেন কাস্টমসের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা। এতে শুল্ক আয় কমে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কাস্টমস সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৫৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা, সেখানে আদায় হয়েছে ২৫৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আগস্টে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা, আদায় হয়েছে ২০২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০৫ কোটি ১০ লাখ টাকা, আদায় হয়েছে ২৯৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। অক্টোবরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা, সেখানে আদায় করা হয় ২৪৫ কোটি ৫ লাখ টাকা। নভেম্বরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫৩৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা, সেখানে আহরণ করা হয়েছে ২৫৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

ডিসেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯১২ কোটি ৫১ লাখ টাকা, আদায় হয় ১ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা। জানুয়ারিতে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮০ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ২৯৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা। ফেব্রুয়ারিতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭৬ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ৩৩১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। মার্চে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩৮ কোটি টাকা, সেখানে আদায় হয়েছে ৩১০ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এবং সর্বশেষ এপ্রিলে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮৫ কোটি টাকা, সেখানে আদায় হয়েছে মাত্র ২১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ