ডলারের বিপরীতে টাকার দাম গতকাল আরও ৫০ পয়সা কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২ টাকা ৫০ পয়সা, আগে যা ছিল ৯২ টাকা। এই দরকে ‘আন্তব্যাংক দর’ বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তবে আন্তব্যাংকে এই দামে ডলার লেনদেন হচ্ছে না। কারণ, ব্যাংকগুলোতে রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ের মাধ্যমে যে ডলার আসছে, সেটা তারা কিনছে ৯৩-৯৪ টাকা দরে। আর আমদানিকারকদের কাছে বিক্রি করছে ৯৫ টাকার ওপরে। ফলে এক ব্যাংক আরেক ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি না করে ধার দিচ্ছে (সোয়াপ), এর বিপরীতে সুদ খাচ্ছে। এতে ডলারের আন্তব্যাংক বাজার নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে ডলারের দামের নিয়ন্ত্রক নয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক এখন ডলারের বড় বিক্রেতা, এ কারণে দাম নির্ধারণেও বড় ভূমিকা রাখছে তারা। ৯২ টাকা ৫০ পয়সা দরে গতকাল সোমবার ১০ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন এ দামে আমদানি বিল মেটাতে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করা হয়েছে। ফলে এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর। এই দরে সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ডলারের বিপরীতে টাকার হিসাব করে থাকে।
তবে ব্যাংকগুলো আমদানিকারকদের কাছ থেকে প্রতি ডলারের জন্য ৯৫ টাকার বেশি দাম নিচ্ছে। আর প্রবাসী আয় আনছে ৯৩ থেকে ৯৪ টাকা দরে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, ‘ডলারের দাম বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করছে না। ব্যাংকগুলো যে দামে লেনদেন করে, তার মধ্যে একটি দর বিবেচনায় নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সোমবার ৯২ টাকা ৫০ পয়সাকে বিবেচনায় নিয়েছে। এই দামেই ডলার বিক্রি করেছে।’
প্রবাসী আয় আনতে ডলারের দামের সীমা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়, বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যাংকগুলো নিজেরাই ডলারের দাম নির্ধারণ করতে পারবে। এরপর থেকে নিয়মিত বাড়ছে ডলারের দাম।
টাকার মান আরেক দফা অবমূল্যায়নের কারণে আমদানি ব্যয় আরও বাড়বে, আর লাভবান হবেন রপ্তানিকারকেরা। আমদানি পণ্যের দাম ও জাহাজভাড়া বেড়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যে আমদানি ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৪১ শতাংশ। আর রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩৪ শতাংশ। তবে প্রবাসী আয় কমেছে ১৬ শতাংশ। ফলে যে আয় হচ্ছে, তা দিয়ে চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। এতে তৈরি হয়েছে ডলার-সংকট। সংকট সামলাতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।