ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজের এমন মনোভাবের কথা জানান চমস্কি। সোমবার এটি প্রকাশিত হয়েছে।
খ্যাতনামা এ ভাষাতাত্ত্বিক বলেন, আগামী নির্বাচনে নিজের জয়ের সম্ভাবনা বাড়াতে এবং বড় ধরনের ব্যবসা ধরতে করোনা মহামারীকে ব্যবহার করেছেন ট্রাম্প। এ জন্য তিনি হাজার হাজার মার্কিনির মৃত্যুর জন্য দায়ী। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিকে কমপক্ষে গত এক শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ স্বাস্থ্যসংকট হিসেবে সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন চমস্কি। বলেন, এ সময়ে দেশের ত্রাণকর্তা হওয়ার ভান করে সাধারণ মার্কিনিদের পিঠে ছুরি মেরেছেন ট্রাম্প।
চলতি বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেবেন ট্রাম্প। নোয়াম চমস্কির অভিযোগ, সম্পদশালী কর্পোরেশনগুলোর সুবিধার জন্য সংক্রামক রোগের স্বাস্থ্যসেবা ও গবেষণার জন্য সরকারি অর্থ ব্যয় হ্রাস করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
‘ট্রাম্প তার মেয়াদের প্রত্যেক বছরই স্বাস্থ্যসেবার খাতের বাজেট আরও কমিয়েছেন। সুতরাং তার পরিকল্পনা হচ্ছে, এ খাতের তহবিল আরও কর্তনের মাধ্যমে জনগণকে যতটা সম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত করা। যেন এতে করে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাইমারি বা প্রাথমিক বাছাইয়ে সম্পদ ও কর্পোরেট শক্তির দিক থেকে নিজের সংগঠকদের আরও লাভবান করে তোলা যায়।’
মানবতার পক্ষের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত এ দার্শনিক বলেন, বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নরদের করোনা মোকাবেলার দায়িত্ব নিতে বাধ্য করে ট্রাম্প তার নিজের দায়িত্ব পরিত্যাগ করেছেন। এটি বিপুলসংখ্যক মানুষকে খুন করা এবং নিজের নির্বাচনী রাজনীতিতে সুবিধা পাওয়ার জন্য একটি দুর্দান্ত কৌশল।
করোনা হাজার হাজার আমেরিকানের মৃত্যুর জন্য ট্রাম্প দায়ী কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে চমস্কি বলেন, ‘হ্যাঁ! তবে বাস্তবতা এর চেয়েও খারাপ। কারণ এটি আন্তর্জাতিকভাবেও প্রযোজ্য। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের বিরুদ্ধে নিজের অপরাধ ঢাকতে তিনি বলির পাঁঠা খোঁজার চেষ্টা করছেন।
প্রসঙ্গত মহামারী করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যানে যুক্তরাষ্ট্রের আশপাশেও নেই কোনো দেশ। রোজ মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিচ্ছেন হাজারও মানুষ। আক্রান্ত হচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ।
করোনায় প্রাণহানি ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান রাখা আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারসের তথ্যানুযায়ী, সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ৮০ হাজার ৭৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ৬৩৮ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ১ হাজার ৮১৬ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩৩৬ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৩ লাখ ৩৭ হাজার ১২৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আর দুই লাখ ৫৬ হাজার ৩৩৬ জন চিকিৎসাধীন।