রাজশাহী নগরী করোনামুক্ত থাকার রহস্য !

রাজশাহী নগরী করোনামুক্ত থাকার রহস্য !
রাজশাহীতে ১২ এপ্রিল প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর রাজশাহী বিভাগের অন্য জেলাগুলোতেও করোনা শনাক্ত হয়। ১০ মে পর্যন্ত রাজশাহীতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ জন। তবে রাজশাহী নগরীসহ চারঘাট ও গোদাগাড়ী উপজেলা এখন রয়েছে করোনামুক্ত।

প্রায় ৮ লাখ মানুষ বসবাস করা এই নগরী এখনও করোনামুক্ত থাকার পেছনে শহরের পরিচ্ছন্নতা রক্ষা আর জনসচেতনতাই প্রধান কারণ। এজন্য শুরু থেকেই রয়েছে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নিরলস প্রচেষ্টা। আর এর নেপথ্যের প্রধান কারিগর রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। মেয়রের নিজেরও দাবি, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় রাজশাহী শহর এখনও করোনামুক্ত রয়েছে।

রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের দাবি, করোনা মোকাবিলায় শুরু থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। করোনা মোকাবিলায় ও মহানগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরগণসহ, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তিনি বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে ঝুঁকিপূর্ণকাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের উৎসাহ বৃদ্ধিতে প্রত্যেককে এককালীন এক হাজার টাকা প্রণোদনা দেওয়া হবে। যারা ভালো কাজ করছেন, যথাসময়ে তাদের মূল্যায়ন করা হবে।

রাসিক সূত্র জানিয়েছে, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে মার্চের প্রথম থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত নিরলসভাবে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। নিজে মাঠে থেকে মানুষের বাড়ি বাড়ি খাদ্য পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশনের সার্বিক কার্যক্রম সরাসরি তদারকি করছেন। মেয়রের উদ্যোগে ১৯ মার্চ রাজশাহী থেকে সারাদেশের বাস চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়। এছাড়া মার্চের প্রথম থেকেই করোনায় জনসচেতনতা সৃষ্টিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সচেতনতা সৃষ্টিতে দেড় লাখ লিফলেট বিতরণ, মাইকিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার, ডিস লাইন ও ডিজিটাল ডিসপ্লেবোর্ডে তথ্যচিত্র ও বক্তব্য প্রচার করা হয়।

এছাড়া রাসিকের স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এবং সকল মসজিদে ইমামদের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়। করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ও ৩০টি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করে করণীয় নির্ধারণ, বিদেশ ফেরত ও দেশের ঝুঁকিপূর্ণ জেলা থেকে আগত ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নিয়মিত চলছে তদারকি। ২০ হাজার মাস্ক ও এক হাজার লিটার স্যানিটাইজার বিতরণ, নগরীর ২৭টি পয়েন্টে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৩০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ৫টি ওয়াটার ট্যাংকার দিয়ে মহানগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ও হাট বাজারে এবং ৩০টি ওয়ার্ডের সর্বত্র হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে জীবাণুনাশক ছিটানো কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম জোরদারের পাশপাশি স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নকর্মীদের জন্য নিরাপদ পোশাক মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও স্যানিটাইজার প্রদান করা হয়।

করোনা রোগীর চিকিৎসা সেবায়ও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) ও হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটকে শুধুমাত্র করোনা রোগী চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়াও করোনা রোগী শনাক্তে স্থাপন করা হয়েছে ল্যাব। সিটি হাসপাতালকে করোনা কর্নার হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। চিকিৎসকদের সুরক্ষায় পিপিই বিতরণ করা হয়েছে। করোনো ভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে বহনে প্রস্তুত রয়েছে আলাদা অ্যাম্বুলেন্স। করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিকে দাফনে কবরস্থান নির্ধারণ ও সহায়ক টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেঁয়াজের দামে শঙ্কায় কৃষক, ক্ষুব্ধ ক্রেতা
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরি বন্ধ
তিনদিন সেন্টমার্টিনের হোটেল-মোটেল বন্ধ
চিটাগাং সিনিয়রস ক্লাবের নতুন প্রেসিডেন্ট বাবলু
স্থলবন্দর এলাকায় মর্টারশেল, ধ্বংস করলো সেনাবাহিনী
রংপুরের তারাগঞ্জ সভাস্থলে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ফেরি চলাচল শুরু
ময়মনসিংহে মালবাহী ট্রাকে ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ৪
এক জালে ১৫৯ পোপা মাছ, দাম হাঁকছেন ২ কোটি
রেললাইনের ক্লিপ খুলে নিলো দুর্বৃত্তরা, অল্পের জন্য রক্ষা