দ্বৈতকর পরিহারের প্রস্তাব অ্যামটবের

দ্বৈতকর পরিহারের প্রস্তাব অ্যামটবের
আগামী বাজেটে সিম কর ও দ্বৈত কর পরিহার করাসহ ৫টি প্রস্তাব দিয়েছে মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব)।

সম্প্রতি অ্যামটব এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আগামী বাজেটে কী ধরনের কর সংস্কার এলে তা মোবাইল খাত ও এই সেবার জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে অ্যামটব এমন কিছু প্রস্তাব সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে উত্থাপন করেছে।

মোবাইল সেবাদাতাদের সংগঠন অ্যামটব মনে করে, যথাযথভাবে করনীতি সংস্কার করা হলে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) মোবাইল শিল্পের বর্তমান অবদান ৭ শতাংশ থেকে আগামীতে আরও বাড়ানো সম্ভব হবে।

সংগঠনের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে পুরো দেশ এক নজিরবিহীন সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে; মোবাইল শিল্প খাতও এর বাইরে নয়। এই পরিস্থিতিতে মোবাইল শিল্প সকল ধরনের যোগাযোগ, ব্যবসা, বিনোদন ইত্যাদির মেরুদন্ডে পরিণত হয়েছে। আমরা অন্যান্য সময়ের মতো এই কঠিন সময়েও যথাযথভাবে সেবা দান করে যাচ্ছি। তবে যেহেতু এই খাতটি ইতিমধ্যেই করসহ নানা ধরনের সমস্যায় ভূগছে, তাই এখনই সময় এসব দূর করে এই খাতকে উৎসাহিত করা যেন ভবিষ্যতে আমরা জাতিকে আরও বেশি সেবা দিতে পারি।

এনবিআরকে ৫টি বিষয় বিবেচনা করার অনুরোধ করেছে অ্যামটব। বিষয়গুলো হলো, বর্তমানে সিম প্রতি ২০০ টাকা হারে কর নির্মূল করা দরকার কারণ তা নিম্ন আয়ের মানুষদের এই সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা বলে মনে করা হয়। অপারেটররা এই অর্থ ভর্তুকি হিসেবে দেয়। মোবাইল শিল্পের জন্য বর্তমান কর্পোরেট কর ৪৫ শতাংশ, যা ভারতে ২২ শতাংশ, পাকিস্তান এবং নেপালে ৩০ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ২৮ শতাংশ, এবং আফগানিস্তানে ২০ শতাংশ।

অ্যামটব কর্পোরেট ট্যাক্সকে দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো যৌক্তিক হারে ৩০ শতাংশ করার অনুরোধ করেছে। ন্যূনতম টার্নওভার করের বিধান আয়করের নীতি বিরুদ্ধ। মোবাইল অপারেটরগুলি লোকসান করলে বা মুনাফা উপার্জনের ২ শতাংশ এর চেয়ে কম অর্জিত হলে ২ শতাংশ হারে এই কর দিতে হয়। শেয়ারহোল্ডারদের ইক্যুইটি থেকে তাদের এই কর প্রদান করতে হয়। এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে ন্যূনতম টার্নওভার কর অপসারণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়াও ২০১২ সালের নতুন ভ্যাট ও এসডি আইনে সরকারি ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলোর জন্য ভ্যাট ছাড় সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশিকা নেই; এই সংস্থাগুলো ভ্যাট নীতি অনুসরণ করছে না। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি তাদের নিবন্ধন ছাড়াই ভ্যাট দাবি বা সংগ্রহ করছে, আবার কোনো ভ্যাট চালান দিচ্ছে না। এটা ভ্যাট আইনের নীতিবিরুদ্ধ। অ্যামটব সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলেকে ভ্যাট ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছে যা এনবিআর এবং অপারেটর উভয় পক্ষের সম্ভাব্য বিরোধ ও জটিলতা নিরসন করবে।

দেশের মোবাইল সেবাদাতারা তাদের মোট আয়ের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রাজস্বের অংশ হিসাবে এবং ১ শতাংশ সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে (এসওএফ) বিটিআরসিকে দিয়ে থাকে। প্রাথমিক পর্যায়ে, রাজস্বের জন্য ভ্যাট প্রদান করা হয় যার অংশ বিটিআরসিকে দেওয়া হয়। বিটিআরসিকে দেওয়া একই রাজস্বের জন্য যখন আবার ভ্যাট প্রদান করা হয়, তখন তা দ্বৈত কর হয়ে যায়। এমটব রাজস্বের হার প্রদানের ক্ষেত্রে দ্বৈত কর পরিহারের প্রস্তাব করেছে।

অ্যামটব মহাসচিব এস এম ফরহাদ বলেন, করোনাভাইরাসের পরিণতি কী হবে তা এখনও অনুমান করা কঠিন, তবে রেগুলেটরি, কর এবং ভ্যাট সম্পর্কিত সমস্যাগুলো অবিলম্বে সমাধান করা না গেলে খুব শিগগিরই মোবাইল সেবা বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে অপারেটরদের রাজস্ব আয়ে ইতিমধ্যেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আমরা সরকারকে আমাদের প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করার জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি যেন এই শিল্প তার পূর্ণ সক্ষমতা দিয়ে দেশকে সহায়তা করতে পারে ও জিডিপিতে আরও বেশি অবদান রাখতে পারে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ