মুশফিকের ব্যাট ভর করেই ফলোঅন এড়াবে বাংলাদেশ। এমনটাই আশা ছিলো বাংলাদেশের। কিন্তু অবিবেচকের মতো রিভার্স সুইপ খেলে সরাসরি বোল্ড হয়ে দিয়ে আসলেন নিজের উইকেট। ফলে এখন ফলোঅনে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে বাংলাদেশ দল।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২১০ রান। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৫৩ রানে অলআউট হয়েছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে এখনও ২৪৩ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ফলোঅন এড়াতেও করতে হবে আরও ৪৪ রান।
পোর্ট এলিজাবেথের সেইন্ট জর্জেস পার্কে আজকের দিনের খেলা শুরুর আগেই আকাশে মেঘের ঘনঘটা ছিল। অন্ধকারে ছেয়ে ছিল পুরো স্টেডিয়াম। তবু যতটুকু আলো ছিল তাতেই দিনের খেলা শুরু করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন দুই আম্পায়ার। মাঠেও নেমে গিয়েছিলেন দুই দলের ক্রিকেটাররা।
কিন্তু প্রথম বল করার আগেই নামলো বৃষ্টি। ফলে মাঠে গড়ালো না কোনো বল। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে দৌড়ে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশ দলের দুই ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলি রাব্বি। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডাররা ধীর পায়ে অনেকটা অনিচ্ছা নিয়েই মাঠের বাইরে যান।
বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটায় শুরুর কথা ছিল পোর্ট এলিজাবেথ (গেবেখা) টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা। কিন্তু বৃষ্টির কারণে যথাসময়ে শুরু হয়নি আজকের খেলা। বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা পেতে উইকেট ও এর আশপাশের জায়গা ঢেকে দেওয়া হয় কভার দিয়ে। পরে ২০ মিনিট দেরিতে শুরু হয় খেলা।
দিনের খেলা শুরুর পর লিজাড উইলিয়ামসের করা প্রথম ওভারের প্রথম তিন বলেই তিন বাউন্ডারি হাঁকান ইয়াসির রাব্বি। উইলিয়ামসের পরের ওভারের প্রথম বলেও হাঁকান বাউন্ডারি। আরেক পেসার ডোয়াইন অলিভারকেও অন ড্রাইভে চার মারেন তিনি।
সবমিলিয়ে দিনের প্রথম পাঁচ ওভারেই ২৭ রান তুলে নেয় বাংলাদেশ। যার মধ্যে ছয় চারের মারে ২৬ রান একাই করেন ইয়াসির। অন্য রান আসে লেগ বাই থেকে। আরেক অপরাজিত ব্যাটার মুশফিক প্রথম পাঁচ ওভারে ৫ বল খেলে কোনো রান নিতে পারেননি।
এমন উড়ন্ত শুরুর পর নিজেদের ব্যাটিংয়ে লাগাম টানেন মুশফিক-ইয়াসির। বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজকে আক্রমণে এনে রানরেটটাও কমিয়ে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। তবু সুযোগ পেলেই উইয়ান মাল্ডার কিংবা মহারাজকে বাউন্ডারি হাঁকাতে কার্পণ্য করেননি মুশফিক বা ইয়াসির।
কিন্তু একই ওভারের শেষ বলে অনসাইডে খেলতে গিয়ে লিডিং এজে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বসেন ইয়াসির। বলটি তালুবন্দী করেই উল্লাসে ফেটে পড়েন মহারাজ। আউট হওয়ার আগে ৭ চারের মারে ৮৭ বলে ৪৬ রান করেন ইয়াসির। তার বিদায়ে ভাঙে ৭২ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি।
ইয়াসির না পারলেও চলতি ইনিংসে বাংলাদেশের প্রথম হাফসেঞ্চুরিয়ান হওয়ার আশা বাঁচিয়ে রেখে খেলতে থাকেন মুশফিক। তাকে ভরসা দিয়ে দায়িত্বশীল ব্যাটিং শুরু করেন আট নম্বরে নামা মেহেদি হাসান মিরাজও। এর মধ্যে অলিভারের বাউন্সারে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নির্ভরতার বার্তাই দেন তিনি।
কিন্তু মুশফিক যে তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি। সাইমন হার্মারের করা ইনিংসের ৬৯তম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। এর এক বল পরেই রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ১৩৬ বলে ৮ চারের মারে ৫১ রান করা মুশফিক।
এরপর মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আর বিপদ ঘটেনি টাইগার শিবিরে। বিরতির আগ পর্যন্ত মিরাজ ২৩ বলে ৯ এবং তাইজুল ৩ বলে ০ রানে অপরাজিত রয়েছেন। এই সেশনের ২৯ ওভারে ৭১ রানে ২ স্বীকৃত ব্যাটারের উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।