করোনায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পোল্ট্রি খামারীরা

করোনায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পোল্ট্রি খামারীরা
করোনাভাইরাসে সৃষ্ট স্থবির পরিস্থিতিতে মুরগি বিক্রি না হওয়ায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছে দেশের পোল্ট্রি খামারীরা। এই পরিস্থিতিতে মানুষ ঘর থেকে বের হতে না পারায় প্রাপ্ত বয়স হয়ে গেলেও মুরগি বিক্রি হচ্ছে না।

আবার কিছু পরিমান বিক্রি হলেও তার নায্য দাম পাচ্ছেন না। তাই কোনো মতে খরচ উঠানোর জন্য পানির দামে বিক্রি করছে এসব মুরগি। এতে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা।

লকডাউনের এক মাস পার হলেও পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা এখনও লোকসান দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা খামারে প্রতি কেজি মুরগি ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। খামারিরা জানিয়েছেন, এক কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১১০ টাকা। সেখানে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। তা-ও আবার অনুরোধ করে পাড়ার ছোট বাজারে দিয়ে আসতে হয়।

এবার করোনার কারণে পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা যে লোকসানে পড়েছেন, তা আর কোনোদিন পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন খামারিরা। অনেকে ছেড়ে দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন এ ব্যবসা।

পোল্ট্রি এবং ডেইরি শিল্পে আর যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সেজন্য সবরকম ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মতে, করোনা সংকটকালীন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। তাই প্রাণিজ পুষ্টির উৎস দুধ, ডিম, মাছ ও মাংসের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এ-সংক্রান্ত সংকট মোকাবিলায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে পোল্ট্রি, ডিম, একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চা, হাঁস, মুরগি ও গবাদিপশুর খাদ্য, দুগ্ধজাতপণ্য, অন্যান্য প্রাণী ও প্রাণিজাত পণ্য, মাছ, মাছের পোনা ও মৎস্য খাদ্য সরকার ঘোষিত ছুটিকালীন নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন, পরিবহন ও বিপণন সচল রাখতে সব জেলা প্রশাসক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেয়া হয়েছে।

তবে মন্ত্রীর এসব নির্দেশনার বিষয়ে অবগত নন কোনো পোল্ট্রি ফার্মের মালিক। তারা বলছেন, পরিবহন সমস্যার কারণে খামারে কোনো পাইকারি ব্যবসায়ীরা যান না। এ বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতাও পাওয়া যায় না। বরং মুরগির গাড়ি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পুলিশ নানা রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। পথে পথে বিভিন্ন বাধার কারণে চালকরাও গাড়ি চালাতে চান না। ফলে খামার থেকে পর্যাপ্ত মুরগি শহরের দিকে আসতে পারছে না। এ কারণে স্থানীয়ভাবে লোকসান দিয়ে মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে খামারিদের।

করোনার কারণে পোল্ট্রি ব্যবসায়ীদের অবস্থা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ও কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সাবেক সভাপতি ড. শামসুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, মুরগি, ডিম ও দুধ- এগুলো সীমিত আকারে হলেও চালাতে হবে। বাজারে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যতটা পারা যায় এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ নেয়া দরকার। কারণ এ সেক্টরটি ধ্বংস হলে আমাদের পুষ্টির অভাব দেখা দেবে। করোনা হয়েছে বলে সব কিছু বন্ধ করলে চলবে না।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ