ব্যাংক ঋণে গ্রামাঞ্চলের ক্ষুদ্রশিল্প অবহেলার শিকার

ব্যাংকের ঋণ প্রবাহ কমেছে গ্রামের অপ্রাতিষ্ঠানিক এসএমই খাতে। নতুন অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ৩৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকিং খাত। যা আগের তিন মাসের তুলনায় অনেক কম। ব্যাংকিং খাতের সার্বিক নেতিবাচক পরিস্থিতির কারণেই গ্রামাঞ্চলের ক্ষুদ্রঋণও অবহেলার শিকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের এপ্রিল-জুন সময়ের মধ্যে ৪৩ হাজার ১৫৫ কোটি টাকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণ বিতরণ করে ব্যাংক। কিন্তু এই প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) গ্রামাঞ্চলের অপ্রাতিষ্ঠানিক এই বিনেয়োগ কমে ৩৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সুতরাং তিন মাসের ব্যবধানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগ কমেছে ৩ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা। তবে গ্রামাঞ্চলের ক্ষুদ্র শিল্পে বেশি বেশি বিনিয়োগে জোর দিচ্ছে সরকার। কারণ এসব ঋণে খেলাপি পরিমাণ খুবই কম।

তথ্য মতে, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর (২০১৯) পর্যন্ত এসএমই ঋণ বিতরণের পরিমাণ ১ লাখ ১৯ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। কিন্তু আগের বছরের একই সময়ে এটা ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় এবছরের নয় মাসে ঋণ বিতরণ ৩ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

আলোচ্য সময়ে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ১৬ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন নতুন উদ্যোক্তারা। এক্ষেত্রে মোট উদ্যোক্তার সংখ্যা ছিল ৯৭ হাজার ২১৫ জন। তবে একই বছরের জুন পর্যন্ত নতুন উদ্দ্যোক্তাদের ঋণের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। সুতরারং তিন মাসে নতুন উদ্দোক্তাদের নেওয়া ঋণ মাত্র ৫ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। তবে আগের বছরের নয় মাসে নতুন উদ্যোক্তা লোন বিতরণ হয়েছিল ১৮ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে তুলনামূলকভাবে পুরো ব্যাংকিং খাতের ঋণ বিতরণ কমে এসেছে। এ কারণে এসএমই খাতেও কমেছে ঋণ বিতরণ। তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬৮৪ কোটি ডলার। কিন্তু জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে এই ঋণ বিতরণ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫ লাখ ২৩ হাজার ১৩৯ কোটি ডলারে। সুতরাং আগের প্রান্তিকের তুলনায় এবার ২৩ হাজার ৫৪৫ কোটি ডলার ঋণ বিতরণ কমেছে পুরো ব্যাংকিং খাতে।

গ্রামের অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত বলতে বুঝায় অতি ক্ষুদ্র ব্যবসা, যাদের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক অনুমোদন নেই, ক্ষুদ্র দোকানপাট, ছোট ছোট গ্রামীণ কুটিরশিল্পের উৎপাদন। এসব খাতে ব্যাংকগুলো বিশেষ ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির আওতায় ঋণ বিতরণ করে। এর মাধ্যমে গ্রামে টাকার প্রবাহ বাড়ানো হয়।

উল্লেখ, চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর এসএমই ঋণ বিতরণের মাস্টার সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সার্কুলারে বলা হয়, প্রতিবছরেই এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ ১ শতাংশ বাড়াতে হবে। এভাবে ২০২৪ সালের মধ্যে এ খাতে ঋণের পরিমাণ ২৫ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগ গত বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপনে ব্যাংকগুলোকে এ নির্দেশনা দিয়েছে। তারপরেও এখনও পর্যন্ত নির্ধারিত সীমানার বহু দূরে অবস্থান করছে অনেক ব্যাংক।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

বিদেশি ডেবিট কার্ডে অর্থ তোলা বন্ধ করল ইবিএল
এসবিএসি ব্যাংকের নতুন এএমডি নূরুল আজীম
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
বিকাশের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা মাহফুজ মারা গেছেন
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পর্ষদের ৩ কমিটি গঠন
ব্যাংকে চাকরির আবেদনের বয়সসীমা শিথিল
মাসিক সঞ্চয় হিসাব খোলা যাচ্ছে বিকাশ অ্যাপে
ফের এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন
অফিসার পদে ৭৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে সরকারি ৫ ব্যাংক
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পরিচালক হলেন যারা